সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে গুজব ছড়িয়ে জমি দখলের অভিযোগ উঠেছে বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীতে কর্মরত মুক্তিযোদ্ধার ছেলে শাহাজাদা রুবেল (২৯) এর বিরুদ্ধে।
ক্রয়সূত্রে পাওনা জমির যথাযোগ্য অংশ তাকে হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানা গেছে। ঘটনাটি নেত্রকোনার বারহাট্টা উপজেলার রায়পুর গ্রামের।
জানা যায়, বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আব্দুল কুদ্দুসকে (৭০) একই গ্রামের মো. মাসুদ মিয়া (২৫) নামের এক যুবক মারধর করে উল্লেখ করে তার ছেলে শাহজাদা রুবেল ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেয়। ওই স্ট্যাটাসে সে মাসুদ মিয়াকে ‘উগ্রপন্থী সন্ত্রাস মাস্তান’ বলেও উল্লেখ করে। সে অভিযোগ করে, পুকুরে মাছ ধরতে নিষেধ করায় তার বাবার ওপর মাসুদ হামলা করে, এতে তিনি আহত হলে নেত্রকোনা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
গত ১০ আগস্ট উপজেলা নিবাহী কর্মকর্তার কক্ষে গণশুনানির সিদ্ধান্ত মোতাবেক জমির (বসতভিটা) মালিক মৃত প্রদীপ দত্ত মজুমদারের স্ত্রী মনিকা দত্ত মজুমদার সাড়ে ১১ শতাংশ জমি মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল কুদ্দুসের কাছে হস্তান্তর করেন। বিক্রয়কৃত সাড়ে ১১ শতাংশ জমি দলিলের বাইরে অন্য কোন জায়গা দাবি করবেন না এই মর্মে অঙ্গীকারও করেন তিনি।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বারহাট্টা থানার মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার, বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজ বিশ্বাস, সাবেক মেম্বার কিতাব আলী, পঙ্কজ মজুমদার, সিদ্দিক তালুকদার, শহর আলী, আবুল হাসেম, সুমন দত্ত মজুমদার, হাফেজ মিলন তালুকদার, দীপায়ন দত্ত মজুমদার, সাইদুর রহমান, রতন তালুকদার, নূরনবী, অর্ণব দত্ত মজুমদার প্রমুখ।
মৃত প্রদীপ মজুমদারের স্ত্রী মনিকা দত্ত মজুমদার বলেন, ইউএনও এবং গ্রামের গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতিতে সাড়ে ১১ শতাংশ বসতভিটা বুঝিয়ে দিয়েছি। সে সময় তিনি সবার সামনে বলেন যে অন্য কোন জমির দাবি করবে না। কিন্তু দুঃখের বিষয় তিনি এখন পুকুরটিও দাবি করছেন। পুকুরটি যে আমাদের সে বিষয়ে যথেষ্ট প্রমাণ রয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজ বিশ্বাস বলেন, শাহজাদা রুবেলের বাবা অনেকদিন ধরেই অসুস্থ। মারধরের কোন ঘটনা ঘটেনি। কয়েকজন ভূমিখেকোর মদদে অন্যায়ভাবে পুকুর দখল করতে আসার সময় উত্তেজিত হয়ে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। মাসুদের বাবা হাসেম মিয়ার অনুরোধে তার (রুবেল) বাবাকে দুই বছর আগে গ্রামের কয়েকজনকে নিয়ে সাড়ে ১১ শতাংশ বসতভিটা মৃত প্রদীপ মজুমদারের কাছ থেকে ক্রয় করে দেন।
রায়পুর গ্রামের বাসিন্দা মিঠু শীল বলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধার ছেলে বিষয়টিকে ইচ্ছাকৃতভাবে ভিন্নভাবে প্রভাবিত করার চেষ্টা করছে। বিষয়টি সুষ্ঠু তদন্ত করার জন্য প্রশাসনের জোর দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
পাশের গ্রামের বাসিন্দা মোতালিব বলেন, যে পুকুরটির কথা উল্লেখ করা হয়েছে তা আমরা মৃত প্রদীপ মজুমদারের বলেই জানি, তারা দীর্ঘদিন ধরে নেত্রকোনার উকিলপাড়ায় বসবাস করছেন। এই পুকুরটি গ্রামের সকলেই মাছ ধরতে যায়।
রায়পুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের সাথে ফোনে যোগাযোগ করতে চেষ্টা করা হলে তার মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়।
শেয়ার করুন