সিলেটে একটি মামলার শুনানির জের ধরে আদালত চত্বরেই সংঘাতে জড়িয়েছেন বাদী ও বিবাদীপক্ষের দুই আইনজীবী।
বৃহস্পতিবার (২৭ জুলাই) দুপুরে সিলেটের অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বাইরে এই ঘটনা ঘটে।
দুপুরে মামলার শুনানি শেষে দুই আইনজীবীর মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। তবে বাদী পক্ষের অভিযোগ, মামলার আসামিপক্ষের আইনজীবী বাদি পক্ষের আইনজীবীর উপর হামলা চালিয়েছেন।
এতে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী শামসুজ্জামান জামান ও তাজ উদ্দিন আহত হয়েছেন। নাকে গুরুতর আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে তাজউদ্দিন আহমদকে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বিকেলে তার নাকে অস্ত্রোপচার করা হয়। অপরদিকে শামসুজ্জামান জামানও হাতে আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
জানা যায়, সাংবাদিক মিঠু দাশ জয়ের দায়ের করা একটি মামলার শুনানি ছিল বৃহস্পতিবার। মামলায় বাদী পক্ষের আইজীবী ছিলেন তাজউদ্দিন আহমদ ও দেবব্রত চৌধুরী লিটন। অপরদিকে আসামিপক্ষে ছিলেন শামসুজ্জামান জামান।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলার শুনানি চলাকালে শামসুজ্জামান ও তাজউদ্দিন বাদানুবাদে জড়ান। এজলাসের ভেতরেই তাদের মধ্যে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয়। শুনানি শেষ হওয়ার পর আদালতের বাইরে এসে আবারও তর্কে জড়ান শামসুজ্জামান ও তাজউদ্দিন। তর্কের জেরে তারা হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক আইনজীবী বলেন, এজলাসে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ের জেরে আদালতের বারান্দায়ও কথাকাটাকাটিতে জড়ান দুই আইনজীবী। একপর্যায়ে তাজউদ্দিনের তাকে ঘুষি মারেন জামান।
আইনজীবী মইনুল হক বুলবুল বলেন, মামলার শুনানি চলাকালে এজলাসের ভেতরে দুই আইজীবীর মধ্যে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয়। এর জের ধরে এজলাস থেকে বেরিয়ে হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন তারা। এরপর অন্য আইনজীবীরা গিয়ে আহত অবস্থায় তাজউদ্দিন ও শামসুজ্জামানকে হাসপাতালে পাঠান।
তিনি বলেন, শুনানি চলাকালে তাজউদ্দিনের কথাবার্তা ও এজলাস থেকে বেরিয়ে শামসুজ্জামানের আচরণ আইনজীবীসুলভ ছিলো না। তাদের উভয়েরই নিজেকে সংযত করা উচিত ছিলে।
এ ব্যাপারে তাজ উদ্দিন ও শামসুজ্জামান জামানের সাথে মোবাইল ফোনে কথা বলার চেষ্টা করেও তাদের পাওয়া যায়নি।
এ ব্যাপারে সিলেট জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অশোক পুরকায়স্থ বলেন, দু’জন আইনজীবী তাজ উদ্দিন ও শামসুজ্জামানের মধ্যে একটি ঘটনা ঘটেছে। বিষয়টি নিয়ে বারের সাবেক ও বর্তমান নেতৃবৃন্দ বসেছিলাম। কেউ এ ব্যাপারে অভিযোগ না দিলেও আমরা স্বপ্রণোদিত হয়ে দুই আইনজীবীকেই কারণ দর্শানো নোটিস দিয়েছি। তাদেরকে ৪ দিনের মধ্যে এ ঘটনায় লিখিতভাবে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে।
এদিকে, ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, তাজউদ্দিনের নাকের হাড় ভেঙে গেছে। বিকেলে তার নাকে অস্ত্রোপচার হয়েছে। তিন সপ্তাহ পর নাকের প্রকৃত অবস্থা বুঝা যাবে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
শেয়ার করুন