প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠকে সমঝোতা না হওয়ায় ধর্মঘট চালিয়ে যাচ্ছেন সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসকরা। বুধবার (৩ আগস্ট) দুপুর ১টা পর্যন্ত এ প্রতিবেদন লিখা পর্যন্ত কলেজ ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করছিলেন ওসমানী মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা।
সরেজমিনে দেখা যায়, দাবি আদায়ে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে দুপুর পর্যন্ত কলেজ ক্যাম্পাসে অবস্থান নিয়েছে মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা। এছাড়া কর্মবিরতি পালন ও কলেজের প্রশাসনিক ভবনে তালা ঝুলছিল দুপুর পর্যন্ত। তবে ইন্টার্নরা ধর্মঘট ডাকলেও সেবা কার্যক্রম অব্যাহত আছে বলে জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার মাহবুবুর রহমান ভূঁইয়া জানান, সার্বিক চিকিৎসা সেবা স্বাভাবিক রয়েছে। হাসপাতাল ও মেডিকেল কলেজের নিরাপত্তা জোরদার করতে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
সোমবার এক নারী ইন্টার্ন চিকিৎসককে লাঞ্ছিত ও মেডিকেল কলেজের দুই শিক্ষার্থীকে মারধরের ঘটনায় হাসপাতাল ও কলেজ কর্তৃপক্ষ বাদি হয়ে মঙ্গলবার সিলেট কোতোয়ালি থানায় দুটি মামলা দায়ের করেছেন। সোমবার রাতে আটক দুজনকে মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষের দায়েরকৃত মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
দুই শিক্ষার্থীর ওপর হামলার প্রতিবাদে সোমবার রাত থেকে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন ওসমানী মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা। রাতেই কর্মবিরতির ডাক দিয়ে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে যোগ দেন এই হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসকরা।
তবে প্রশাসনের আশ্বাসের প্রেক্ষিতে সোমবার ভোর রাত ৩টায় পরদিন দুপুর ২টা পর্যন্ত আন্দোলন স্থগিতের ঘোষণা দেন তারা। নির্ধারিত সময়সীমা শেষে মঙ্গলবার বেলা আড়াইটায় কলেজের মিলনায়তনে কলেজ ও হাসপাতাল প্রশাসন, পুলিশ ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের সঙ্গে বৈঠকে বসেন শিক্ষার্থীরা।
বৈঠকে প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় ইতোমধ্যে দুজনকে আটক করা হয়েছে। বাকিদের আটকের চেষ্টা চলছে। কলেজ ও হাসপাতাল প্রশাসনের পক্ষ থেকে দুটি মামলা করা হয়েছে। এ ছাড়া শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তায় বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়ার কথা জানিয়ে প্রশাসনের কর্তারা আন্দোলন থেকে সরে আসার আহ্বান জানান।
তবে ইন্টার্ন চিকিৎসক ও শিক্ষার্থীরা হামলাকারী সকলকে গ্রেপ্তারের পূর্ব পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার কথা জানিয়ে বৈঠক থেকে চলে আসেন।
গত রোববার রোগীর স্বজনদের সাথে ইন্টার্ন চিকিৎসকের ঝগড়ার জের ধরে সোমবার রাতে মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীদের ওপর অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায় বহিরাগতরা। সেদিন, রাতেই কর্মবিরতিতে যান ইন্টার্ন চিকিৎসকরা। ওই রাতেই দু’জনকে আটক করে পুলিশ। পরে মঙ্গলবার দুপুরে প্রশাসন ও কলেজ কর্তৃপক্ষের সাথে বৈঠক হলেও দাবি আদায় হয়নি বলে অভিযোগ আন্দোলনকারীদের। হামলা ও নারী ইন্টার্ন চিকিৎসককে শ্লীলতাহানির হামলার ঘটনায় কোতোয়ালি থানায় দুটি মামলা দায়ের করে পুলিশ।
শেয়ার করুন