এক সময় আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতে দাপুটে অবস্থান ছিল সিলেটের নেতাদের। সিলেটের কৃতী সন্তান আবদুস সামাদ আজাদ, সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত, দেওয়ান ফরিদ গাজী ও হুমায়ূন রশিদ চৌধুরীর মতো প্রভাবশালী নেতারা নেতৃত্ব দিয়েছেন কেন্দ্রে। ধীরে ধীরে সেই অবস্থান দুর্বল হয়ে পড়েছে। পূরণ হয়নি প্রয়াত নেতাদের শূন্যতা।
গত শনিবার ঘোষিত কেন্দ্রীয় কমিটিতে সিলেট বিভাগের মাত্র দুই নেতার স্থান হয়েছে। পুনরায় সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব পেয়েছেন শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল। আর আগের কমিটির প্রেসিডিয়াম সদস্য নুরুল ইসলাম নাহিদের ঠাঁই হয়েছে এবার উপদেষ্টা পরিষদে। তবে শেষ পর্যন্ত বিভাগের আরও কয়েকজন নেতা স্থান পেতে পারেন কেন্দ্রীয় কমিটিতে- এমনটাই মনে করছেন নেতা-কর্মীরা।
সদ্য বিদায়ী কমিটিতে সিলেট বিভাগ থেকে স্থান পেয়েছিলেন আটজন। এর মধ্যে প্রেসিডিয়াম সদস্য ছিলেন নুরুল ইসলাম নাহিদ ও সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল।
কেন্দ্রীয় সদস্য ছিলেন- বদরউদ্দিন আহমদ কামরান, ডা. মুশফিক হোসেন চৌধুরী ও আজিজুস সামাদ ডন। উপদেষ্টা পরিষদে ছিলেন- আবুল মাল আবদুল মুহিত, সৈয়দ আবু নসর ও ইনাম আহমেদ চৌধুরী। এর মধ্যে দায়িত্বরত অবস্থায় মারা যান বদরউদ্দিন আহমদ কামরান, আবুল মাল আবদুল মুহিত ও সৈয়দ আবু নসর। শনিবার ঘোষিত কমিটিতে স্বপদে বহাল থেকেছেন নাদেল। আর প্রেসিডিয়াম থেকে বাদ পড়ে উপদেষ্টা হিসেবে ঠাঁই হয়েছে নাহিদের। এখন পর্যন্ত কমিটিতে এ দুই নেতাই প্রতিনিধিত্ব করছেন সিলেট বিভাগের।
সূত্র জানিয়েছে, আগের কমিটিগুলোতে প্রেসিডিয়াম সদস্য হিসেবে সিলেট বিভাগ থেকে একজন নেতার প্রতিনিধিত্ব থাকত। এবার নুরুল ইসলাম নাহিদ বাদ পড়ায় তার স্থলাভিষিক্ত অন্য কারও হওয়ার সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ। এ ছাড়া কেন্দ্রীয় কমিটিতে সব সময় সিলেট বিভাগের চার জেলা থেকে চারজন নেতাকে অন্তর্ভুক্ত করা হতো। কিন্তু শনিবারের ঘোষিত কমিটিতে সিলেট থেকে নুরুল ইসলাম নাহিদ ও মৌলভীবাজার থেকে শফিউল আলম চৌধুরী নাদেলের স্থান হয়েছে। উপদেষ্টা পরিষদে গেলবার স্থান পাওয়া তিন সদস্যের মধ্যে মারা গেছেন দুজন। জীবিত থাকা একমাত্র সদস্য ইনাম আহমেদ চৌধুরীরও এখনো জায়গা হয়নি স্বপদে।
তবে দলীয় সূত্র জানিয়েছে, এখনো হাতে থাকা ৩৩ শূন্য পদের মধ্যে সিলেট বিভাগের আরও এক-দুজনের স্থান পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এই শূন্য পদেই ঝুলে আছে ইনাম আহমদ চৌধুরী, ডা. মুশফিক হোসেন চৌধুরী ও আজিজুস সামাদ ডনের ভাগ্য। দলীয় সূত্র জানায়, এবার সিলেট বিভাগ থেকে উপদেষ্টা পরিষদে আরও একাধিক নেতা স্থান পেতে পারেন। কেন্দ্রীয় সদস্য পদেও পুরনোদের স্থান পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
দ্বিতীয়বার কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক হওয়া শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে গিয়ে বলেন, ‘জাতির পিতার কন্যা, আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা আমাকে যে দায়িত্ব দিয়েছিলেন সততার সঙ্গে সেটা পালনের চেষ্টা করেছি। দ্বিতীয়বার আমার ওপর আস্থা রাখায় দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। আমি মনে করি এখন থেকে আমার দায়িত্ব ও কাজের পরিধি বেড়ে গেছে। নিজের সামর্থ্যরে সর্বোচ্চ দিয়ে আমার ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালনের চেষ্টা করব।’ কমিটিতে সিলেট বিভাগের আরও কয়েকজন নেতা অন্তর্ভুক্ত হতে পারেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
শেয়ার করুন