কোটা : মেডিক্যালে ৪১ পেয়েই চান্স, ৭০ পেয়েও কাঁদছেন অনেকেই

জাতীয়

দেশের সরকারি-বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজের ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হয়েছে। এবার পাসের হার ৪৫.৬২ শতাংশ। অংশগ্রহণকারী এক লাখ ৩১ হাজার ৭২৯ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে মোট ৬০ হাজার ৯৫ জন ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন।

প্রকাশিত ফলাফল বিশ্লেষণে দেখা যায়, ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষায় ভর্তি পরীক্ষায় ১০০ নম্বরের মধ্যে ৭০ নম্বর পেয়েও সরকারি মেডিক্যাল কলেজে ভর্তির সুযোগ পাবেন না হাজারো শিক্ষার্থী।
অন্যদিকে ভর্তি পরীক্ষায় মাত্র ৪১ থেকে ৪৬ নম্বর পেয়েও আড়াই শতাধিক শিক্ষার্থী বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজে ভর্তির সুযোগ পাবেন।

মূলত মুক্তিযোদ্ধা কোটাসহ বিভিন্ন কোটা সংরক্ষণের কারণে অনেক বেশি নম্বর পেয়েও বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থী সরকারি মেডিক্যাল কলেজে ভর্তির সুযোগ পাবেন না।

স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, দেশের ৫৭টি সরকারি মেডিক্যাল কলেজে মোট ৫ হাজার ৩৮০টি আসনের মধ্যে মুক্তিযোদ্ধার পুত্র-কন্যা ও নাতি-নাতনিদের জন্য ২৬৯টি এবং পশ্চাৎপদ জনগোষ্ঠীর জন্য ৩৯টি আসন সংরক্ষিত। সাধারণ আসনের মধ্যে বিভিন্ন বিভাগের জন্য নির্দিষ্টসংখ্যক কোটা সংরক্ষিত রয়েছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের দায়িত্বশীল একজন কর্মকর্তা জানান, মেডিক্যাল ভর্তি পরীক্ষায় পাস নম্বর ৪০। পাস নম্বর পেয়েই মুক্তিযোদ্ধা এবং পশ্চাৎপদ জনগোষ্ঠীর উপজাতি শিক্ষার্থীরা সরকারি মেডিক্যালে ভর্তির জন্য নির্বাচিত হয়েছেন।

তিনি জানান, মুক্তিযোদ্ধা কোটায় সব মিলিয়ে আসন রয়েছে ২৬৯টি। তবে এর মধ্যে পাস করেছেন ১৯৩ জন।

পাসকৃতদের তথ্য যাচাই করা হবে। এরপর ভর্তির জন্য চূড়ান্তভাবে মনোনীত করা হবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব ডা. মো. সারোয়ার বারী সাংবাদিকদের বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধা কোটায় কতজন ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন, তাদের প্রাপ্ত নম্বর কত—সেগুলো খোঁজ নিতে হবে। এরপর বিষয়টি নিয়ে কথা বলা যাবে।’

এদিকে মেডিক্যাল ভর্তি পরীক্ষায় মুক্তিযোদ্ধা কোটায় ৪১ নম্বর পেয়ে ভর্তির সুযোগ পাওয়ার বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ জানিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা।

তারা বলছেন, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পরও কোটা বহাল রাখার সিদ্ধান্ত ভালো হয়নি। 

বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছেন জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম। তিনি বলেছেন, ‘ভর্তি পরীক্ষায় এখনো কীসের কোটা? আজ থেকেই এই শোষণের শেষ হতে হবে। ফুলস্টপ।’

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক মাহিন সরকার লিখেছেন, ‘৪১ পেয়ে নাকি মেডিক্যালে চান্স পেয়েছে কোটার জোরে, অথচ ৭৩ পেয়েও চান্স পায়নি! ছোটরা দাঁড়িয়ে যাও, পাশে থাকব ইনশাআল্লাহ। গণ-অভ্যুত্থানের সূচনা তো কোটা থেকেই।’

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *