তানজিল হোসেন, গোয়াইনঘাট (সিলেট):
সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার জাফলংয়ের প্রতিবেশ সংকটাপন্ন এলাকা (ইসিএ) থেকে অবৈধভাবে বালু ও পাথর উত্তোলন বন্ধে টাস্কফোর্সের অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। ইসিএভুক্ত এলাকা থেকে অবৈধভাবে বালু ও পাথর উত্তোলনের খবর পেয়ে সোমবার (১৪ অক্টোবর) ভোর থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. তৌহিদুল ইসলামের নেতৃত্বে উপজেলা প্রশাসন, পরিবেশ অধিদপ্তর, বিজিবি ও থানা পুলিশের যৌথভাবে অভিযান চালানো হয়। এতে অবৈধভাবে পাথর উত্তোলনকারী ৭’শ টি নৌকা, ৯ লক্ষ ৬৬ হাজার ঘনফুট বালু, ১০ হাজার ঘনফুট পাথর ও ২টি পাথর ভাঙার মেশিনসহ পাথর পরিবহনের কাজে ব্যবহৃত কয়েকটি গাড়ি জব্দ করা হয়।
অভিযানে গোয়াইনঘাটের সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. সাইদুল ইসলাম, পরিবেশ অধিদপ্তর সিলেটের সহকারী পরিচালক মো. বদরুল হুদা, সিলেট ব্যাটালিয়ন (৪৮ বিজিবি) এর ভারপ্রাপ্ত কোয়ার্টার মাস্টার সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ ফারুক হোসেন, পিবিজিএম, গোয়াইনঘাট থানার এসআই ফখরুল ইসলামসহ বিজিবি ও পুলিশ সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
অভিযান শেষে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. তৌহিদুল ইসলাম জানান, বাংলাদেশ পরিবেশ আইনজীবী সমিতি (বেলা) এর দায়েরকৃত রীটের প্রেক্ষিতে মহামান্য সুপ্রীম কোর্টের আদেশ প্রতিপালনের অংশ হিসেবে উপজেলা প্রশাসন, বিজিবি ও পুলিশ এবং আইন রক্ষার্থে সমন্বয় করে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়। অভিযানে প্রাপ্ত তথ্য-উপাত্ত এবং আলামতের ভিত্তিতে পরিবেশ অধিদপ্তর ইসিএভুক্ত এলাকায় ইসিএ বিধিমালা অনুযায়ী মামলা রুজু করবেন।
পরিবেশ রক্ষায় নিয়মিত এমন অভিযান অব্যাহত থাকবে জানিয়ে ইউএনও বলেন, সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার জাফলং দেশের প্রধান পর্যটন কেন্দ্রগুলোর একটি। এখানে অনিয়ন্ত্রিত ভাবে বালু-পাথর উত্তোলনের ফলে পর্যটনকেন্দ্রটির সৌন্দর্য নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি পরিবেশও হুমকির মুখে। এরই প্রেক্ষিতে ২০১৫ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি জাফলংকে প্রতিবেশ সংকটাপন্ন এলাকা (ইসিএ) হিসেবে ঘোষণা করে পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়। এর আগে পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) করা এক রিটের প্রেক্ষিতে জাফলংকে ইসিএ ঘোষণার নির্দেশনা দেন আদালত। ইসিএ ঘোষণার পর জাফলং থেকে সব ধরণের বালু ও পাথর উত্তোলন নিষিদ্ধ করে প্রশাসন। তবে নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও একটি গুষ্টি বালু, পাথর উত্তোলনের মাধ্যমে জাফলংয়ে পরিবেশ বিধ্বংসী কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।