ছাত্রত্ব শেষ হতেই হল ছাড়লেন ঢাবি শিবির সেক্রেটারি, ভাঙলেন সিট দখলের পুরনো রীতি

জাতীয়

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি মহিউদ্দিন খান এক নতুন নজির স্থাপন করেছেন। স্নাতকোত্তর শেষ হওয়ার তিন দিন পরই তিনি হল ছেড়ে দিয়ে এক ধরনের সুস্থ ছাত্ররাজনীতির সংস্কৃতির প্রবর্তন করেছেন। ছাত্রত্ব শেষ হওয়ার পরেও বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে থাকার পুরানো সংস্কৃতিকে তিনি চ্যালেঞ্জ করেছেন এবং বর্তমান ছাত্রদের জন্য একটি ভালো দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। তার এই সিদ্ধান্তে শিক্ষার্থীরা প্রশংসা ও ইতিবাচক মনোভাব প্রকাশ করছেন, যা আসন্ন ছাত্ররাজনীতির জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হতে পারে।

মহিউদ্দিন খান ২২ এপ্রিল তার স্নাতকোত্তরের ফলাফলে ব্যাচে প্রথম স্থান অধিকার করেন, ৩.৯৭ সিজিপিএ নিয়ে। ২০১৮-১৯ সেশনের লোকপ্রশাসন বিভাগের এই শিক্ষার্থী বিজয় একাত্তর হলের আবাসিক শিক্ষার্থী ছিলেন। তবে ছাত্রলীগের শীর্ষ নেতাদের অপপ্রচার ও তোপের কারণে তিনি দীর্ঘদিন হলে থাকতে পারেননি। ২৫ এপ্রিল, শুক্রবার রাতে নিজের আসবাবপত্র নিয়ে হল ছেড়ে যাওয়ার বিষয়টি মহিউদ্দিন খান নিজেই তার ফেসবুক পোস্টে জানান। তার এই পদক্ষেপকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এবং অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

মহিউদ্দিন খান বলেন, “হলে থাকার পরিবেশ যদি ভালো না থাকে, তাহলে শিক্ষার্থীদের অধিকার নিতে নিয়ম মেনে হল ছাড়াটা জরুরি। আমার পদক্ষেপটি সামান্য হলেও, ছাত্ররাজনীতিতে এই ধরনের সুস্থ সংস্কৃতির প্রবর্তন একটি বড় পরিবর্তন আনবে।” তিনি আরও বলেন, “২০১৯ সালে প্রথম বর্ষে হলে ওঠার পর থেকেই গেস্টরুমের আতঙ্ক ছিল। ছাত্রলীগের গণরুম-গেস্টরুম চর্চা সহ্য করতে হয়তো অনেকের পক্ষে কঠিন হত, কিন্তু আমি চেষ্টা করেছি এমন পরিবেশ না তৈরির।”

ফেসবুকে পোস্টে তিনি আরও জানান, “যতদিন পর্যন্ত নিয়ম মেনে হল ছেড়ে না দেওয়া হবে, ততদিন পর্যন্ত আমরা অতীতের মত দখলদারি, ভয়াবহতা বা শোষণ দেখব না। আমি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ছাত্রত্ব শেষ করার পর হলে থাকার কোনো মানে খুঁজে পাইনি, এবং এতে নতুন শিক্ষার্থীদের অধিকার লঙ্ঘিত হতে পারে।” তার এই পদক্ষেপটি ইতিবাচক দৃষ্টিতে দেখা হচ্ছে, এবং তা ছাত্ররাজনীতিতে সুস্থ সংস্কৃতি ও নীতির প্রবর্তন হিসেবে দেখা হচ্ছে।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *