ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যে সিলেট নগরের ধোপাদিঘির পাড় এলাকার সবজি বিক্রেতা গোবিন্দ দাসকে (৩৫) হত্যা করা হয় বলে জানিয়েছে পুলিশ।
এ খুনের ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ৩ ছিনতাইকারীকে গ্রেপ্তার করেছেও সিলেট মহানগর পুলিশ (এসএমপি)। তাদের কাছ থেকে খুনের ঘটনায় ব্যবহৃত ১টি চাকু ও ছিনতাইকৃত ৭ হাজার টাকার মধ্যে ৪ হাজার ৩০০ টাকা জব্দ করা হয়।
বৃহস্পতিবার (১ জুন) সন্ধ্যায় নগরীর টিলাগড় এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানিয়েছে পুলিশ।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- নগরীর শিবগঞ্জ সাদিপুর গ্রামের সেলিম মিয়ার ছেলে রাহাত রাব্বি (২০), একই এলাকার রিন্টু দাসের ছেলে সৌরভ দাস (১৯) এবং টিলাগড় ১ নম্বর সড়কের ভাটাটিকর এলাকার আলমাছ মিয়ার ছেলে আতিকুর রহমান শুভ (১৯)।
এবিষয়ে বৃহস্পতিবার রাতে নগরীর মীরের ময়দানস্থ পুলিশ লাইনস হল রুমে প্রেস ব্রিফিং করেন এসএমপি কমিশনার মো.ইলিয়াস শরীফ।
প্রেস ব্রিফিংয়ে বলা হয়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় নিজেদের জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। তাদের হেফাজত থেকে খুনের ঘটনায় ব্যবহৃত ১টি চাকু ও ছিনতাইকৃত ৭ হাজার টাকার মধ্যে ৪ হাজার ৩০০ টাকা জব্দ করা হয়। ঘটনায় জড়িত পলাতক অপর আসামিদের গ্রেপ্তার ও অবশিষ্ট ছিনতাইকৃত টাকা উদ্ধার অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
এর আগে বৃহস্পতিবার ভোর সাড়ে ৫টার দিকে নগরের ধোপাদিঘীর পূর্বপাড় এলাকার সড়কে ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে মারা যান সবজি বিক্রেতা গোবিন্দ দাস।
গোবিন্দ দাস সুনামগঞ্জ জেলার শাল্লা উপজেলার বড়গাঁও এলাকার গৌরাঙ্গ দাসের ছেলে। বর্তমানে নগরীর আখালিয়া নতুন বাজার রাংকু দাসের বাসায় স্ত্রী-সন্তান নিয়ে ভাড়া বাসায় থেকে দীর্ঘদিন ধরে ভ্যানে করে সবজি বিক্রি করে দিনাতিপাত করতেন।
প্রতিদিনের ন্যায় বৃহস্পতিবারও গোবিন্দ দাস ভোর সোয়া ৫টার দিকে ভ্যান নিয়ে নগরের সোবহানীঘাট কাঁচা বাজার পাইকারি আড়তে যাওয়ার পথে ছিনতাইকারীদের কবলে পড়েন। ধোপাদিঘীর পূর্ব পাড়স্থ সৈয়দ চান্দ আহমদ চিশতিয়া মাজারের সামনে পাকা রাস্তার উপর পৌঁছালে অজ্ঞাত ছিনতাইকারীরা গোবিন্দ দাসের পথরোধ করে। ছিনতাইয়ে বাধা দিলে ধারালো চাকু দিয়ে তার ডান বগলের নিচে পাজরে আঘাত করে সঙ্গে থাকা নগদ ৭ হাজার টাকা নিয়ে পালিয়ে যায়।
পরবর্তীতে পথচারীরা গোবিন্দ দাসকে রক্তাক্ত অবস্থায় সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সকাল সাড়ে ৮টায় তাকে মৃত ঘোষণা করেন কর্তব্যরত চিকিৎসক।
খবর পেয়ে উপ-পুলিশ কমিশনার (উত্তর) মো. আজবাহার আলী শেখ, অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (অপরাধ-উত্তর) সাদেক কাউসার দস্তগীর, সহকারী পুলিশ কমিশনার সামছুদ্দিন ছালেহ আহমেদ চৌধুরী, কোতোয়ালী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি)মোহাম্মদ আলী মাহমুদ, ঘটনাস্থলে পরিদর্শন করেন। পরবর্তীতে এসএমপির একটি দল তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় এবং বিভিন্ন তথ্য উপাত্তের ভিত্তিতে বিভিন্নস্থানে অভিযান চালিয়ে রাহাত রাব্বি, সৌরভ দাস ও আতিকুর রহমান শুভকে আলামতসহ গ্রেপ্তার করে।
ইতোমধ্যে ভিকটিমের বড় ভাই জনারধন সরকার বাদী হয়ে অজ্ঞাত আসামি করে মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় আসামিদের গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
শেয়ার করুন