হবিগঞ্জের বাহুবল উপজেলার কামারগাঁও গ্রামে জোড়া খুনের ঘটনাকে কেন্দ্র করে স্থানীয়দের মাঝে উৎকণ্ঠা দেখা দিয়েছে। এ দিকে হত্যাকাণ্ডের চারদিন পেরিয়ে গেলেও কোনো মামলা হয়নি। তবে গ্রেপ্তার আতঙ্কে পুরুষশূন্য হয়ে পড়েছে গোটা কামারগাঁও।
এ দিকে উভয় পক্ষ পরস্পরের বাড়িঘরে হামলা ও ভাঙচুর চালাচ্ছে বলে জানা গেছে। যে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে এলাকায় মোতায়েন রয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ।
জানা যায়, বাহুবল উপজেলার মিরপুর ইউনিয়নের কামারগাঁওয়ের ফারুক মিয়া ও সাবেক উপজেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ইউসুফ মিয়ার মধ্যে পানি নিষ্কাশনের ড্রেন নিয়ে বিরোধ চলছিল। এ নিয়ে মাসখানেক আগে উভয় পক্ষের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটে। কয়েক দফা বৈঠকেও চলমান দ্বন্দ্ব নিষ্পত্তি করা যায়নি। এরই ধারাবাহিকতায় ৩০ সেপ্টেম্বর দু’পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়লে আহত অবস্থায় হবিগঞ্জ জেলা সদর আধুনিক হাসপাতালে মারা যায় ইউসুফ মিয়া ও উস্তার মিয়া নামে দুই ব্যক্তি।
এদিকে, নিহতের সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে ফের দেখা দেয় উত্তেজনা। রাতেই দু’পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষের পর থেকে গ্রামের বাসিন্দারা আতঙ্কে বসতভিটা ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। সেই সঙ্গে ছড়িয়ে পড়েছে গ্রেপ্তার আতঙ্ক।
স্থানীয়রা জানান, দিনে দু’চারজন বাইরে বের হলেও সন্ধ্যার পর থেকে জনশূন্য থাকে গোটা গ্রামের পথঘাট। ঘটনার পর থেকে বাড়িঘর ছেড়ে আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন এই গ্রামের বাসিন্দারা।
কামারগাঁও গ্রামের নিহত ইউসুফ মিয়ার স্ত্রী নাসরিন আক্তার বলেন, ‘আমার সব শেষ হয়ে গেছে। প্রতিপক্ষের লোকজন আমার স্বামীকে অন্যায়ভাবে হত্যা করেছে। আমি এখন চার সন্তান নিয়ে অসহায় হয়ে পড়েছি। আমি আমার স্বামী হত্যার বিচার চাই।’
হেনা বেগম নামে এক নারী জানান, বাড়িঘরে এখন কোনো পুরুষ নেই। এই সুযোগে প্রতিপক্ষরা তাদের বাড়িঘর জ্বালিয়ে দিয়েছে। তফুরা বেগম জানান, বাড়িঘরে পুরুষ না থাকায় তারা আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। সাদিকা জান্নাত জানান, হত্যাকাণ্ডের পর থেকেই পুরো গ্রামে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
এ ব্যাপারে বাহুবল মডেল থানার ওসি মশিউর রহমান জানান, জোড়া খুনের ঘটনায় এখনও ওই গ্রামে উত্তেজনা বিরাজ করছে। পরিস্থিতি শান্ত রাখতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। ঘটনার পর ৬ জনকে আটক করা হয়েছে। বাকিদের আটকের চেষ্টা চলছে।
শেয়ার করুন