বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে চলমান সম্পর্ক এগিয়ে নিতে ঢাকা সফরে এসেছে উচ্চ পর্যায়ের এক মার্কিন প্রতিনিধি দল। তাদেরকে স্বাগত জানিয়েছে ঢাকার যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস। শনিবার এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এই তথ্য জানা গেছে।
জানা গেছে, ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে ২৬ ফেব্রুয়ারি এই তিন দিনের জন্য ঢাকায় সফরে এসেছেন যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিল, ডিপার্টমেন্ট অফ স্টেট এবং এজেন্সি ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট (ইউএসএআইডি) এর এই প্রতিনিধিদল।
দলটিতে আছেন ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলের (এনএসসি) দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক সিনিয়র ডিরেক্টর এলিন লাউবাকের, ইউএসএআইডির এশিয়াবিষয়ক ব্যুরোর অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যাডমিনিস্ট্রেটর মাইকেল শিফার এবং ডিপার্টমেন্ট অফ স্টেটের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়ার ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি আফরিন আক্তার।
ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে পারস্পরিক স্বার্থের অগ্রগতির জন্য কূটনৈতিক সম্পর্ক জোরদার, চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা এবং অভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে বাংলাদেশ সরকারের সাথে আলোচনা করবেন তারা। সফরকালে তারা তরুণ অ্যাক্টিভিস্ট, সুশীল সমাজ, শ্রম সংগঠক এবং মুক্ত গণমাধ্যমের বিকাশে নিযুক্ত ব্যক্তিদের সাথেও বৈঠক করবেন।
মানবাধিকারকে সমর্থন, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা ও আন্তর্জাতিক হুমকির বিরুদ্ধে আঞ্চলিক সহনশীলতার শক্তিকে এগিয়ে নিতে এবং অর্থনৈতিক সংস্কারের প্রচারে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের সাথে অংশীদারিত্বে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
জানা গেছে, দুই দেশের নিয়মিত সফর বিনিময় ও সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার অংশ হিসেবে গত বছরের অক্টোবরে সফরটি নির্ধারণ করা হয়। ঢাকা-ওয়াশিংটন বৈঠকে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন ও পুনর্বাসন, মানবিক সহায়তা, প্রতিরক্ষা সহযোগিতা, ভারত ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় কৌশল, উন্নয়ন সহযোগিতা, সমুদ্রবিষয়ক নিরাপত্তা, আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে শক্তিশালীকরণ, নিরাপত্তাসহ দ্বিপক্ষীয় স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়গুলোতে আলোচনার কথা রয়েছে।
মার্কিন সফর নিয়ে জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ জানান, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক আরও এগিয়ে নিতে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের চিঠি অত্যন্ত গুরুত্ববহ এবং তাদের কর্মকর্তাদের সফর আমাদের সম্পর্ককে আরও গভীর ও বিস্তৃত করবে।
রোববার দুপুরে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি দল পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেনের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক আলোচনা করবে। একই দিন বিকেলে এলিন লাউবাকের প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের সঙ্গেও দেখা করবেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, নির্বাচনের পর অনেকেই ধারণা করেছিলেন দুই দেশের সম্পর্ক তলানিতে গিয়ে পৌঁছেছে। বিশেষ করে যখন মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত সংবাদ ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে সমালোচনা করা হয়। কিন্তু পরক্ষণেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেনের চিঠি সব ঘুরিয়ে দেয়। সেখানে বাংলাদেশের উন্নয়ন-অগ্রযাত্রায় সহযাত্রী হওয়ার প্রত্যাশা করা হয় যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে। এরই অংশ হিসেবে সফরটিকে বিবেচনা করছে বাংলাদেশ।
এলিন লাউবাকেরের সঙ্গে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে আলোচনায় যোগ দেওয়ার পাশাপাশি আফরিন আক্তার আলাদাভাবে শ্রমিক নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন।
সফর নিয়ে এক মার্কিন কর্মকর্তা বলেন, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের সঙ্গে অংশীদারিত্বকে গুরুত্ব দেয়। একে আরও গভীর করতে চায়। জলবায়ু, নিরাপত্তাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে দুই দেশের আরও নিবিড়ভাবে কাজ করার সুযোগ রয়েছে। এরই অংশ হিসেবে চলতি বছরে দুই দেশের মধ্যে একাধিক সফর ও বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।
শেয়ার করুন