তুরস্ক-সিরিয়ায় ভূমিকম্প: নিহতের সংখ্যা শতাধিক

বিশ্ব

তুরস্কের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। তুরস্কের স্থানীয় সময় সোমবার ৪টা ১৭ মিনিটে সংগঠিত এ ভূমিকম্পে সিরিয়ার বিভিন্ন অঞ্চলেও বেশ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। মৃতের সংখ্যা ইতোমধ্যেই শয়ের কোটা ছাড়িয়েছে, এ সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

তুরস্কের দুর্যোগ সংস্থার প্রকাশিত সর্বশেষ পরিসংখ্যান বলছে, এখন পর্যন্ত ৭৬ জন নিহত ও ৪৪০ জন আহত হয়েছেন। সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা সানা দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তার বরাত দিয়ে বলেছে, ভূমিকম্পের ফলে আলেপ্পো, হামা ও লাতাকিয়ায় ৪২ জন নিহত ও ২০০ জন আহত হয়েছে।

ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল সিরিয়া সীমান্তের কাছাকাছি হওয়ায় সেখানেও বেশ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। সীমান্তের উভয় পাশের একাধিক শহরে বিধ্বস্ত ভবনগুলোর ধ্বংসস্তূপের নীচে বেঁচে থাকা ব্যক্তিদের সন্ধানে নেমেছেন স্থানীয় উদ্ধারকর্মী ও বাসিন্দারা।

সিরিয়ার আতমেহ নামক একটি শহরের চিকিৎসক মুহিব কাদ্দুর টেলিফোনে বার্তা সংস্থা এপিকে জানিয়েছেন, এই শহরে অন্তত ১১ জন নিহত হয়েছেন। আরও অনেককে ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়েছেন। তিনি বলেন, আমরা আশঙ্কা করছি মৃতের সংখ্যা শতাধিক। আমরা অনেক চাপের মধ্যে আছি।

তুরস্কের দিকে এই অঞ্চলে বেশ কয়েকটি বড় শহর রয়েছে। এসব এলাকায় লক্ষাধিক সিরীয় শরণার্থীর আবাসস্থল।

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান টুইটারে বলেছেন, ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় অনুসন্ধান ও উদ্ধারকারী দল পাঠানো হয়েছে। আশা করছি যত তাড়াতাড়ি সম্ভব কম ক্ষতিসহ এই দুর্যোগটি একসাথে কাটিয়ে উঠব।

তুরস্কের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুলেমান সোয়লু ক্ষতিগ্রস্ত ভবনগুলোতে প্রবেশ না করার জন্য বাসিন্দাদের আহ্বান জানিয়ে বলেন, ধসে পড়া ভবনের নিচে আটকে থাকা মানুষদের উদ্ধার করা আমাদের প্রথম কাজ।

যুক্তরাষ্ট্রের ভূতত্ত্ব জরিপ সংস্থা ইউএসজিএস এক বিবৃতি অনুযায়ী, পর পর দু’টি ভূমিকম্প হয়েছে তুরস্কে। প্রথমটি হয়েছে ভোর ৪ টা ১৭ মিনিটে এবং সেটির মাত্রা ছিল ৭ দশমিক ৮; দ্বিতীয়টি ঘটে তার ১৫ মিনিট পর। সেটি মাত্রা ছিল ৬ দশমিক ৭।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, দেশটির দক্ষিণাঞ্চলীয় প্রদেশ খারমানমারাসের গাজিয়ানতেপ শহরের কাছে ভূপৃষ্ঠের ১৭ দশমিক ৯ কিলোমিটার গভীরে ছিল ভূমিকম্প দু’টির উৎপত্তিস্থল। তুরস্ক ছাড়াও সিরিয়া, লেবানন ও সাইপ্রাসে কম্পন অনুভূত হয়েছে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে এএফপি।

পার্শ্ববর্তী দেশ সিরিয়ার সীমান্ত থেকে মাত্র ৩০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত গাজিয়ানতেপ তুরস্কের অন্যতম শিল্পোৎপাদন কেন্দ্র নামে পরিচিত। এই শহরটি ও তার আশপাশের এলাকায় বেশ কিছু শিল্প কারখানা গড়ে ওঠায় তুরস্কের অন্যতম জনবসতিপূর্ণ শহর এই গাজিয়ানতেপ। সিরিয়ার সীমান্তবর্তী হওয়ায় গাজিয়ানতেপে অনেক সিরীয় শরণার্থীও আছেন।

গাজিয়ানতেপ সীমান্তের অপর প্রান্তে সিরিয়ার আলেপ্পো প্রদেশ। সিরিয়ার সরকারি সংবাদমাধ্যমের সংবাদে বলা হয়েছে, ভূমিকম্পের পর প্রদেশের অধিকাংশ ভবন ধসে পড়েছে। ফলে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক হতাহতের আশঙ্কা আছে আলেপ্পোতেও।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *