নৌকাডুবিতে মা-বাবা হারানো দিপু রায়ের দায়িত্ব নিলেন জামায়াত আমির

জাতীয়

পঞ্চগড়ের করতোয়া নদীর আউলিয়ার ঘাটে ভয়াবহ নৌকাডুবিতে বাবা মাকে হারানো শিশু দিপু রায়ের লেখাপড়াসহ যাবতীয় খরচের দায়িত্ব নিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। ২০২২ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর ভয়াবহ নৌকাডুবিতে প্রাণ হারায় ৭২ জন। একজন বাদে বাকি সবাই সনাতন ধর্মালম্বী। মহালয়া অনুষ্ঠানে যোগ দিতে তারা নদী পেরিয়ে বোদেশ্বরী পীঠমন্দিরে যাচ্ছিলেন তারা।

নিহতদের মধ্যে রয়েছেন- পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ উপজেলার ছত্রশিকারপুর এলাকার ভুপেন্দ্রনাথ ও রূপালী রানী দম্পতি। তারা দিপুর বাবা-মা। বাবা-মায়ের সঙ্গে দিপু ওই নৌকার করে মহালয়া অনুষ্ঠানে যাচ্ছিলেন। তখন তার বয়স ছিল ৩ বছর।

কিছুদূর যাওয়ার পর নৌকাটি ডুবে যায়। দিপুকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। রংপুর মেডিক্যাল কলেজে জ্ঞান ফিরে দিপুর। ভাগ্যক্রমে বেঁচে যায় সে।
তবে তার বাবা ও মা দুজনই প্রাণ হারান। দিপুর বড় আরো দুই ভাই রয়েছে। তারা হলো- দীপন রায় ও পরিতোষ রায়। তারা দুজনই শিক্ষার্থী।

নৌকাডুবিতে একসঙ্গে বাবা-মাকে হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়ে পরিবারটি।

ঘটনার কয়েক দিনের মধ্যেই আওয়ামী লীগ সরকারের সময়েই জামায়াতের পক্ষ থেকে নিহত প্রতিটি ব্যক্তির বিপরীতে ওই পরিবারকে ৩৫ হাজার টাকা করে নগদ অর্থ সহায়তা তুলে দেন জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমান। সেসময়েই দিপুর সঙ্গে পরিচয় হয় তার। তিনি শিশুটির দায়িত্ব নিতে চেয়েছিলেন। তবে তৎকালীন রেলপথ মন্ত্রী ও তার স্ত্রী শিশুটি দায়িত্ব নেওয়ার ঘোষণা দিলে তিনি সরে যান। তবে তারা ঘোষণা দিলেও পরে আর খোঁজ খবর রাখেননি পরিবারটির। তাই এবার শিশুটির লেখাপড়াসহ যাবতীয় খরচের দায়িত্ব নেয়ার ঘোষণা দিলেন জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমান।

ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘নৌকাডুবির পর নিহতদের পরিবারগুলোর কাছে যাই আমরা। একটি শিশুকে কোলে নেওয়ার সুযোগ হয়েছিল আমার। এই শিশুটিই দিপু। আমরা শিশুটি প্রাপ্ত বয়স্ক না হওয়া পর্যন্ত আর্থিক দায়িত্ব নিতে চেয়েছিলাম। পরদিন এই এলাকার সংসদ সদস্য রেলপথ মন্ত্রী ও তার স্ত্রী গিয়ে শিশুটির দায়িত্ব নেওয়ার ঘোষণা দেন। আমরা খুশি হলান। এবার এসে আমি দিপুর ভাই পরিতোষকে জিজ্ঞাসা করেছি দায়িত্ব নেওয়ার পর তারা প্রতি মাসে তাদের খোঁজ-খবর রেখেছে কিনা। সে জানায় মাঝে মধ্যে জামাকাপড় ছাড়া আর কিছুই করেনি।’

এ সময় তিনি বলেন, ‘দিপু যতদিন পর্যন্ত প্রাপ্তবয়স্ক না হবে তার লেখাপড়া চলবে। প্রতি মাসের ১ তারিখে আমরা তাদের কাছে পৌঁছে যাব।’

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *