পিআর পদ্ধতি ফ্যাসিবাদ ফিরে আসার পথ রুদ্ধ করবে: জামায়াত আমির

জাতীয়

জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, জামায়াতে ইসলামী সংস্কার উদ্যোগকে স্বাগত জানায়। ইতোমধ্যেই বিভিন্ন পরামর্শ ও সুপারিশ প্রদান করেছে। বিশেষ করে বাংলাদেশে সমানুপাতিক প্রতিনিধিত্বশীল (পিআর) নির্বাচন ব্যবস্থা চালুর পক্ষে আমরা জোরাল মতামত ব্যক্ত করেছি। বিশ্বাস করি, এ ব্যবস্থায় জনগণের মতামত সঠিকভাবে প্রতিফলিত হবে এবং ফ্যাসিবাদী শাসন পুনরায় ফিরে আসার পথও রুদ্ধ হবে।

শনিবার (8 মার্চ) রাজধানী গুলশানের হোটেল ওয়েস্টিনে ঢাকায় বিদেশি কূটনীতিকদের জন্য আয়োজিত ইফতার মাহফিলে এসব কথা বলেন তিনি।

কূটনীতিকদের উদ্দেশে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, আপনাদের অংশগ্রহণ আমাদের বন্ধুত্ব ও সংলাপের প্রতি অঙ্গীকারের প্রমাণ। আসুন, পারস্পরিক সম্পর্ক আরও দৃঢ় করি এবং শান্তি, ন্যায়বিচার ও সাম্য এমন এক বিশ্ব গঠনের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করি। একইসঙ্গে জুলাই বিপ্লবের সব শহিদ ও নির্যাতিতদের স্মরণ করি।

প্রতিষ্ঠাকাল থেকেই জামায়াতে ইসলামী গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ মন্তব্য করে জামায়াত আমির বলেন, বাংলাদেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা অত্যন্ত জরুরি, যাতে বিভিন্ন রাজনৈতিক শক্তির মধ্যে সহনশীলতা ও পারস্পরিক সম্প্রীতি বজায় থাকে। কিন্তু গত ১৫ বছরের দুঃশাসনে আওয়ামী লীগ সরকার জামায়াতকে দমন করার সব ধরনের অপচেষ্টা চালিয়েছে। দলের পাঁচজন শীর্ষ নেতাকে ফাঁসি দেওয়াসহ হাজার হাজার নেতাকর্মীকে হত্যা করা হয়েছে। অনেকে গুমের শিকার হয়েছেন এবং অনেকেই স্থায়ীভাবে পঙ্গু হয়ে গেছেন।

নিষ্ঠুরতার মধ্যেও জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবির জুলাই বিপ্লবে ঐতিহাসিক ভূমিকা পালন করেছে দাবি করে শফিকুর রহমান বলেন, বিপ্লব-পরবর্তী সময়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা, ধর্মীয় উপাসনালয়গুলোর নিরাপত্তা এবং সাধারণ মানুষের জানমালের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে সংগঠনের নেতাকর্মীরা গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন।

২০১৪ সালের পর এই প্রথম কূটনীতিকদের সম্মানে জামায়াতে ইসলামীর ইফতার মাহফিলে ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক, ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত মেরি মাসদুপি, চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়ো ওয়েন, রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত আলেকজান্ডার গিরি গোরিওভিস কোজিন, অস্ট্রেলিয়ান হাই সুসান রেলি, ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত মিকায়েল মিলার, ইরানের রাষ্ট্রদূত মানসুর চাভোশি, তুরস্কের রাষ্ট্রদূত রমিস সেন, পাকিস্তানের হাইকমিশনার কামরান ধাংগল ছাড়াও যুক্তরাষ্ট্র, দক্ষিণ কোরিয়া, মরক্কো, নেদারল্যান্ডস, সুইজারল্যান্ড, নরওয়ে, ভারত, ভুটান, সিঙ্গাপুর, ব্রুনেই, ডেনমার্ক, মালয়েশিয়া, ইরাক, ভ্যাটিকান সিটি, কানাডা, ব্রাজিল, আলজেরিয়া, কসোভো, জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রতিনিধি, আইআরআই এবং এনডিপির আবাসিক প্রতিনিধিসহ বিভিন্ন দেশের কূটনীতিক অংশ নেন।

এছাড়াও দলটির নেতাদের মধ্যে ছিলেন-নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো. তাহের ও মাওলানা আনম শামসুল ইসলাম, সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এটিএম মাছুম, মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, হামিদুর রহমান আজাদ, মাওলানা আবদুল হালিম, অ্যাডভোকেট মোয়াযযম হোসাইন হেলাল, অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জোবায়ের, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য সাইফুল আলম খান মিলন, আবদুর রব ও অধ্যক্ষ মো. ইজ্জত উল্লাহ, কেন্দ্রীয় প্রচার ও মিডিয়া বিভাগের সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমির নূরুল ইসলাম বুলবুল, উত্তরের আমির সেলিম উদ্দিন, দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ, উত্তরের সেক্রেটারি ড. রেজাউল করিম, ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম ও সেক্রেটারি জেনারেল নূরুল ইসলাম সাদ্দাম প্রমুখ।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *