ফাগুনে আগুনরাঙা শিমুল ফুল আর বর্ষায় সবুজের সমরোহ দেখতে প্রতিদিনই দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে পর্যটকরা আসেন সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার মানিগাঁও শিমুল বাগানে। পহেলা ফালগুন ও ভালোবাসা দিবসে পর্যটকদের উপচেপড়া ঢল নামে যাদুকাটা ও মাহারাম নদীর তীরের জয়নাল আবেদীন শিমুল বাগানে। বাগানে এসে পর্যটকরা উপভোগ করেন বসন্তের অপরূপ রূপমাধুর্য।
জেলা শহর থেকে ২৮ কিলোমিটার দূরে তাহিরপুর উপজেলায় শিমুল বাগানের অবস্থান। সবুজ জলের যাদুকাটা নদী পেরিয়ে যেতে হয় এই শিমুল বাগানে। বিস্তৃর্ণ বালুচর পায়ে হেঁটে গিয়ে শিমুলের সৌন্দর্য উপভোগ করতে হয়।ভালোবাসা দিবস ও বসন্ত উৎসবে শিমুল বাগানে হাজারও পর্যটকের ঢল নামে। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে প্রকৃতিপ্রেমীরা প্রতিদিনই আসছেন ফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করতে। গাছে গাছে রক্তরাঙা শিমুল। এ বছর বাগানের তিন হাজার শিমুল গাছের মধ্যে দুই হাজার শিমুল গাছে ফুল ফুটেছে। আবার বর্ষাকালে গাছে গাছে সবুজ পাতার সৌন্দর্য বিমোহিত করে পর্যটকদের।
ঢাকা থেকে বন্ধুদের নিয়ে শিমুল বাগানে ঘুরতে গেছেন লুৎফর। তিনি বলেন, ‘এই বাগানের অনেক ভিডিও দেখেছি। বন্ধুদের সঙ্গে প্ল্যান করে সবাই মিলে এসেছি। এখানে এসে খুবই ভালো লাগছে। একদিকে যাদুকাটা আর আর তার তীরেই এই বাগান।’
উপজেলার সোহালা গ্রামের বৃক্ষপ্রেমী প্রয়াত জয়নাল আবেদীন ২৫ বছর আগে ১০০ একর জায়গার উপর তিন হাজার শিমুলের চারা রোপণ করে গড়ে তুলেন এই বাগান। ২০১২ সালে বাগানে প্রথন শিমুল ফুল ফোটে। ধীরে ধীরে এই বাগানের সৌন্দর্য বিভিন্ন মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
তবে অনুন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা ও পর্যটকদের পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা নেই। বাগানটি এখন দেখভাল করেন জয়নাল আবেদীনের ছেলে রাখাব উদ্দিন। তিনি জানান, পর্যটকদের জন্য সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এছাড়া শিশুদের খেলাধুলার জন্য বিভিন্ন রাইড করা হবে। বাগানের পাশে গড়ে তোলা হবে রেস্ট হাউজ, বাড়ানো হবে অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা।
চলতি বছর বাগানে আরও তিন শতাধিক শিমুলের চারা লাগানো হয়েছে বলেন জানান বাগান মালিক।
সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক দিদারে আলম মোহাম্মদ মাকসুদ চৌধুরী বলেন, সুনামগঞ্জের পর্যটন শিল্পের বিকাশে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে রিসোর্ট স্থাপন, যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নসহ নানামুখী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।’