বানিয়াচংয়ে কওমী মাদ্রাসার শিশুকে বলাৎকার

হবিগঞ্জ

হবিগঞ্জ জেলা প্রতিনিধিঃ

বানিয়াচং উপজেলার দক্ষিন সাঙ্গরে ক্বওমি মাদ্রাসায় পড়ুয়া ১০ বছরের শিশুকে বলাৎকার করেছেন হুসামা তালুকদার নামে এক শিক্ষক। গতকাল শনিবার বিকেল ৩ টায় অসুস্থ অবস্থায় ওই ছাত্রকে হবিগঞ্জ জেলা সদর আধুনিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এর আগে শুক্রবার রাত ৮ টায় এ ঘটনা ঘটে। এর আগেও গত রমজান মাসে আরও দু’দিন অভিযুক্ত শিক্ষক ওই ছাত্রকে বলাৎকার করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

এদিকে, এ ঘটনায় গ্রাম জুড়ে সমালোচনার ঝড় বইছে। সচেতন মহলে দেখা দিয়েছে ক্ষোভ। অনেক অভিভাবক ওই মাদ্রাসা থেকে তাদের সন্তানদের নিয়ে গেছেন বলে জানা যায়। অন্যদিকে অভিযুক্ত ওই মাদ্রাসার শিক্ষক হুসামা তালুকদার আপন ভাতিজা হওয়ায় ঘটনা সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছেন ইউপি মেম্বার আক্তার হোসেন। বিষয়টি ষড়যন্ত্রমূলক বলে জানান তিনি।

স্থানীয় সূত্র জানায়, উপজেলার দক্ষিন সাঙ্গর গ্রামে অবস্থিত ক্বওমি মাদ্রাসায় আরবি পড়াশুনা করে আসছিল একই গ্রামের ১০ বছরের জনৈক ছাত্র। গত শুক্রবার রাত ৮ টায় বিদ্যুৎ না থাকায় তাকে বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে পার্শ্ববর্ত্তী নতুনবাজার সংলগ্ন নির্মাণাধীন সুন্নীয়া মাদ্রাসার পিছনে নিয়ে যান মাদ্রাসার শিক্ষক হুসামা তালুকদার। এ সময় ওই শিক্ষক একটি গর্তে ফেলে ওই ছাত্রকে বলাৎকার করেন। পরে বাড়িতে ফিরে ওই ছাত্র ব্যাথা অনুভব করলে বিষয়টি সে তার মাকে জানায়। এ সময় বিষয়টি ওই ছাত্রের মা ইউপি মেম্বার আক্তার হোসেনসহ স্থানীয় মুরুব্বীয়ানদের অবগত করেন এবং পরের দিন গতকাল শনিবার বিকেল ৩ টায় হবিগঞ্জ জেলা সদর আধুনিক হাসপাতালে ভর্তি করেন।

ভিকটিম ওই ছাত্র জানায়, বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে পার্শ্ববর্ত্তী আরেকটি মাদ্রাসার পিছনে নিয়ে শিক্ষক হুসামা তার মুখ চেপে ধরে বলাৎকার করে। এর আগেও গত রমজান মাসে আরো দু’দিন তাকে বলাৎকার করেছেন ওই শিক্ষক।

ওই ছাত্রের মা বলেন, ‘আমার ছেলে বাড়িতে এসে অসুস্থ হয়ে পড়ে। এ সময় জানতে চাইলে হুজুর তার সাথে খারাপ কাজ করেছেন বলে সে জানায়। এতে আমি স্থানীয় ফার্মেসীতে তাকে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা করিয়েছি। পরে বিষয়টি স্থানীয় মেম্বার আক্তার হোসেন, গ্রামের মুরুব্বীয়ান ও বানিয়াচং থানায় অবগত করি।

গতকাল (আজ) দুপুরে আমার প্রচন্ড ব্যাথা অনুভব করলে তাকে হাসপাতালে নিয়ে এসেছি’।
এ ব্যাপারে মোবাইল ফোনে জানতে চাইলে ইউপি মেম্বার আক্তার হোসেন প্রথমে এ বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না বললেও পড়ে লোকমুখে শুনেছেন বলে স্বীকার করেন। তাছাড়া তিনি এক পর্যায়ে বিষয়টি যড়যন্ত্রমুলক বলে জানান। তবে ঘটনাাটি যড়যন্ত্রমুলক কিভাবে বুঝলেন জানতে চাইলে তিনি কিছুই বলতে পারেননি। এ সময় অভিযুক্ত শিক্ষক হুসামা তালুকদার আপনার আপন ভাতিজা হয় জানতে চাইলে তিনি ফোন কেটে দেন।

বানিয়াচং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অজয় চন্দ্র দেব বলেন, ‘বিষয়টি জানতে পেরে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে’।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *