নানান নাটকীয়তার পর মাঠে গড়াচ্ছে এশিয়া কাপের ১৬তম আসর। ছয় জাতির এই টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় দিনে বৃহস্পতিবার (৩১ আগস্ট) মাঠে নামছে বাংলাদেশ। তবে টুর্নামেন্ট শুরুর আগের দিন পরিবর্তন এসেছে টাইগার স্কোয়াডে। ভাইরাল জ্বরের কারণে স্কোয়াড থেকে ছিটকে গেছেন ওপেনার লিটন দাস। আর দেশসেরা এই ক্লাসিক ব্যাটারের পরিবর্তে দলে ডাক পেয়েছেন এনামুল হক বিজয়।
স্কোয়াডে ডাক পাওয়ার চার ঘণ্টা পার হওয়ার আগেই শ্রীলঙ্কার উদ্দেশ্যে উড়াল দিয়েছেন উইকেটরক্ষক এই ব্যাটার। এ সময় দেশবাসীর কাছে দোয়াও চেয়েছেন তিনি। ধারণা করা হচ্ছে, বৃহস্পতিবার (৩১ আগস্ট) লঙ্কানদের সঙ্গে ম্যাচের আগেই পাওয়া যাবে তাকে।
এবার আচমকা বিজয়ের দলে ডাক পাওয়া নিয়ে কথা বলেছেন টাইগার দলপতি সাকিব আল হাসান। লঙ্কানদের বিপক্ষে ২২ গজে নামার আগে ম্যাচ পূর্ববর্তী সংবাদ সম্মেলনে এ নিয়ে যুক্তি টেনেছেন দেশসেরা এই ক্রিকেটার।
এ সময় সাকিব বলেন, যেহেতু আমাদের আরেকজন উইকেটকিপার নাই; অতিরিক্ত উইকেটকিপার সো এটা একটা আমাদের জন্য ফ্যাক্টর। আর লাইক ফর লাইক বলবো লিটনও টপ-অর্ডার ব্যাটিং করে, বিজয়ও টপ-অর্ডারে ব্যাটিং করে। আর যদি ইনকেস মুশফিক ভাইয়ের কিছু হয়। বিশেষ করে ম্যাচ চলাকালীন সময়ে। কনকাশন হতে পারে ছোট, খাটো ইনজুরি হতে পারে; দেখা যাচ্ছে যে উনি ওইদিন কিপিং করতে পারছে না।
লাল-সবুজের কাপ্তান আরও যোগ করেন, যেহেতু এখন একটা রুলস আছে যে, দ্বিতীয় উইকেটকিপার যদি ম্যাচে না খেলে তাহলে সেও উইকেটকিপিং করতে পারবে। এটাও একটা অপশন, সো ওই গ্যাপগুলো ফিল করার জন্য বিজয়কে পিক করা।
এদিকে দেশ ছাড়ার আগে গণমাধ্যমে বিজয় বলেন, আমার আসলে বেশি কিছু বলার নেই। শুধু এইটুকু বলার যে সবার প্রচুর ভালোবাসা আর প্রচুর দোয়া ছিল। সেই কারণে হয়তো আজকে বাংলাদেশ দলে সুযোগ পেয়েছি। আপনারা দোয়া রাখবেন, যেভাবে করে যাচ্ছেন আমার জন্যে। আমি ইনশাল্লাহ চেষ্টা করব, আমার শতভাগ দেওয়ার। দোয়া রাখবেন, আমি টাইগার্স ক্যাম্পে যেহেতু ছিলাম। জেমি সিডন্সের আন্ডারে ছিলাম। ভালো প্রস্তুতি হয়েছে। বাকিটা দেখছি, সুযোগ যদি আসে চেষ্টা করব।
এর আগে, হঠাৎ করে বিজয়কে দলে অন্তর্ভুক্ত করার প্রসঙ্গে বিসিবির প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন নান্নু জানিয়েছিলেন, বিজয় ঘরোয়া ক্রিকেটে রানের ধারাতেই ছিল। বাংলাদেশ টাইগার্সের প্রোগ্রামে ওকে (বিজয়) আমরা নজরে রাখি। সে সবসময়ই আমাদের পরিকল্পনাতেই ছিল। লিটনের ছিটকে যাওয়ার আমাদের একজন টপ-অর্ডার ব্যাটারের প্রয়োজন ছিল, যে কিনা উইকেট আগলে ধরে খেলতে পারবে। সে জন্যই বিজয়কে নেওয়া।
যদিও এর আগে লিটনের বিকল্প হিসেবে বিসিবির পরিকল্পনায় ছিলেন সাইফ হাসান। তবে ডেঙ্গু আক্রান্ত হওয়ায় তিনিও পরিকল্পনার বাইরে চলে যান। এরপর অবশ্য টেস্টে অভিষিক্ত ওপেনার জাকিরের নামটাও চাউর হয়েছিল। তবে সেই পথে না হেঁটে শেষ পর্যন্ত বিজয়ের দ্বারস্থ হয়েছে ক্রিকেট বোর্ড।
লাল-সবুজের জার্সিতে ৪৪ ওয়ানডেতে ৩০ দশমিক ৫৮ গড় এবং ৭৪ দশমিক ১৫ স্ট্রাইক রেটে এক হাজার ২৫৪ রান করেছেন বিজয়। ওয়ানডে ক্রিকেটে তিন শতকের সঙ্গে পাঁচটি ফিফটি আছেন এনামুলের।
এদিকে দেশের হয়ে সবশেষ গত বছরের ডিসেম্বরে ভারতের বিপক্ষে খেলেছিলেন বিজয়। সেই সিরিজে তিন ম্যাচে ১৪, ১১ ও ৮ রান করায় বাদ পড়েন এই ব্যাটার। এরপর ইংল্যান্ড-আফগানিস্তান-আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজে আর ডাক পাননি তিনি।
অন্যদিকে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে (ডিপিএল) দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক ছিলেন ৩০ বছর বয়সী এই ক্রিকেটার। আবাহনীর হয়ে ১৬ ম্যাচে ৫৯ দশমিক ৫৭ গড় এবং ৯৭ দশমিক ৩১ স্ট্রাইক রেটে করেছেন ৮৩৪ রান। প্রিমিয়ার লিগে এনামুলের ব্যাট থেকে এসেছে সর্বোচ্চ তিনটি সেঞ্চুরি।
শেয়ার করুন