রাজধানীর মোহাম্মদপুরে গভীর রাতে সেনাবাহিনী ও র্যাবের পোশাক পরে ডাকাতির ঘটনায় মামলা হয়েছে। এ ঘটনায় ছয় জনকে গ্রেফতার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
ডাকাতির সময় একটি বাসা থেকে পঁচাশি লাখ টাকা, ৭০ ভরি স্বর্ণ ও কয়েকটি মোবাইল ফোন লুট করে নিয়ে যায় চক্রটি।
শুক্রবার রাত সাড়ে তিনটায় মোহাম্মদপুর তিন রাস্তা মোড় বেড়িবাঁধ এলাকার হাজী ভিলায় এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রাত ৩টা থেকে সাড়ে ৩টার দিকে ১৫ থেকে ২০ জনের একটি দল ৪টি হাইয়েস গাড়ি নিয়ে আসে। তাদের মধ্যে কয়েকজন সেনাবাহিনীর পোশাক পরা, ৪-৫ জন র্যাবের জ্যাকেট পরা এবং বাকিরা সিভিল পোশাকে ছিল।
বাড়ির মালিক আবু বক্কর সিদ্দিক জানান, রাত সাড়ে ৩টার দিকে সেনাবাহিনীর পোশাক পরা কয়েকজন এসে আমাকে বাসার গেট খুলতে বলে। আমি বাসার গেট খুলে দিলে দুইজন এসে আমার দুই হাত ধরে আমাকে বলে তোর কাছে অস্ত্র আছে। অস্ত্রগুলো বের কর। আমি তখন বললাম, আমার অস্ত্র থানায় জমা দিয়ে এসেছি। তখন তারা আমাদের আটকে রেখে পুরো বাসা তল্লাশি করে। এ সময় বাসায় থাকা ৮৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা ও ৭০ ভরি স্বর্ণালঙ্কার নিয়ে চলে যায়।
বাড়ির দারোয়ান মমিন জানান, রাত সাড়ে তিনটার দিকে সেনাবাহিনী ও র্যাবের পোশাক পরে কয়েকজন এসে আমাকে ঘুম থেক জাগিয়ে বাড়ির গেট খুলতে বলে। আমি তাদের পরিচয় জানতে চাইলে তারা আমাকে যৌথ বাহিনীর অভিযানে বাড়ি তল্লাশি করবে বলে জানায়। আমি গেট খুলে দিলে কয়েকজন বাড়ির মালিকের তিন তলার বাসায় প্রবেশ করে। সেখানে কয়েক ঘণ্টা তল্লাশি চালিয়ে ৮৫ লাখ টাকা, ৭০ ভরি স্বর্ণালঙ্কার ও কয়েকটি মোবাইল ফোন লুট করে নিয়ে যায়। এ সময় আমাকেও তারা গাড়িতে করে তুলে নিয়ে যেতে চায়।
সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, বাড়ির মূল গেট দিয়ে প্রথমে সেনাবাহিনীর পোশাক পরিহিত ১১ জন লোক প্রবেশ করে। তাদের সঙ্গে র্যাবের জ্যাকেট পরিহিত ৪ জন ও সিভিল পোশাকে ৫ জন লোক বাড়িতে প্রবেশ করে। বাড়িতে প্রবেশ করার সময় সবাই মুখোশ পড়া অবস্থায় ছিল। তারা প্রথমে সিসি ক্যামেরা ভেঙে ফেলার চেষ্টা করে।
আশপাশের কয়েকটি সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, ৪টি হাইয়েস গাড়ি এসে বাড়ির পাশে এসে থামে। সেখান থেকে ৩-৪ জন লোক গাড়ি থেকে নেমে বাড়ির পাশে একটি বিরিয়ানি দোকানে অপেক্ষা করছিল। বাড়ি থেকে সেনাবাহিনী ও র্যাবের পোশাক পড়া লোকজন নামলে অপেক্ষমাণ লোকজন গাড়িতে উঠে যায়।
মোহাম্মদপুর থানার ওসি আলী ইফতেখার জানান, আমরা আশপাশে কয়েকটি সিসিটিভি ফুটেজে তাদের কয়েকজনকে শনাক্ত করতে পেরেছি। তাদের গাড়িগুলো শনাক্তের চেষ্টা করে যাচ্ছি। আশা করি, শিগগিরই আমরা তাদের আটক করতে পারবো।
শেয়ার করুন