রোদে পুড়ছে সিলেট, বেঁকে গেছে রেললাইন

মৌলভীবাজার

সিলেট: রোদে পুড়ছে সিলেট, বাতাসে আগুনের হলকা। ঘরে-বাইরে হাঁসফাঁস অবস্থা। কড়া রোদ আর তীব্র গরমে জনজীবনে নাভিশ্বাস উঠেছে। এ যেন কাঁঠালপাকা গরম। দুপুর গড়িয়ে সন্ধ্যা নেমেছে। তবুও কমছে না বাতাসের উত্তাপ। তীব্র গরমে দিনভর সিলেট নগরী অনেকটা ফাঁকা ছিল। এই গরমে বেশি ভোগান্তিতে পড়েছেন শ্রমজীবী মানুষ। কয়েকদিনের টানা বৃষ্টি স্বস্তি বয়ে আনলেও আজকের গরমে ত্রাহি অবস্থা করছিল সবার মাঝে।

মঙ্গলবার (২৭ মে) প্রচণ্ড গরমের কারণে সিলেটের লংলা ও কুলাউড়া স্টেশনের মাঝামাঝি সৈয়দ বাড়ি এলাকায় রেললাইন বেঁকে যায়। এতে চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে আসা পাহাড়িকা এক্সপ্রেস অল্পের জন্য বড় দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পায়। চালক রেললাইন বেঁকে যাওয়া দেখতে পেয়ে ট্রেন ব্রেক করেন। ফলে দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পায় শত শত যাত্রী।

এদিন সিলেটে মৌসুমের সর্বোচ্চ তামপাত্রা রেকর্ড করা হয় ৩৮ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সিলেট আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, এই তাপমাত্রা সিলেটে এ বছরের রেকর্ড। এছাড়া, গত ২৪ ঘণ্টায় সিলেটে ৯৫ দশমিক ৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, সকাল থেকে প্রচণ্ড রোদে ভোগান্তি পোহাতে হয় পথচারী ও দিনমজুরদের। নগরীর ব্যস্ততম সড়কগুলোতে মানুষজন কম দেখা গেছে। সড়কে যানবাহনও অন্যান্য দিনের তুলনায় ছিল কম। তীব্র রোদের কারণে লোকজন বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বের হনিন। বাইরে বের হওয়া খেটে খাওয়া মানুষরা একটু পর পর পানি পান করছেন। অনেকেই সড়কের পাশে বিক্রি করা ডাব ও লেবুর শরবত কিনে পান করেন।

গরমে জনজীবন অতিষ্ঠ। ছবি: সংগৃহীত

গরমে জনজীবন অতিষ্ঠ। ছবি: সংগৃহীত

নগরীর মিরের ময়দান এলাকায় দুপুর ২টার দিকে রিকশা চালক ফজলুর রহমান সারাবাংলা বলেন, ‘ইলা গরম দিলে আয় রোজগার করা মছিবত হই যাইব। আমরা গরিব বাঁচব কিলা! সারাদিনে মাত্র তিনটা টিপ মারছি। এখন জিরানিত (বিশ্রাম) আইছি (এসেছি)।’

সিলেট আবহাওয়া অধিদফতরের আবহাওয়াবিদ সজিব আহমদ চৌধুরী সারাবাংলাকে জানান, তাপমাত্রা ৩৬ ডিগ্রি থেকে ৩৭ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকলে মৃদু তাপপ্রবাহ ধরা হয়। তাপমাত্রা ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছালে মাঝারি তাপপ্রবাহ ধরা হয়। সে হিসাবে আজ সিলেটে মাঝারি তাপপ্রবাহ চলছে। দেশে সাধারণত মে-জুন মাসে গরম বেশি থাকে। তবে এবার সিলেটে মে থেকেই তাপ ছড়াতে শুরু করেছে সূর্য। ফলে এরই মধ্যে সিলেটে জনজীবন অতীষ্ট হয়ে উঠেছে।

তবে এমন অবস্থায় সুখবর দিয়েছে সিলেট আবহওয়া অফিস। সিলেটের আবহাওয়া সহকারী রুদ্র তালুকদার এদিন সন্ধ্যায় সারাবাংলাকে বলেন, ‘বুধবার রাত থেকে সিলেটে বৃষ্টি নামার পূর্বাভাস রয়েছে। বৃষ্টি হলে জনজীবনে নেমে আসবে স্বস্তি। কয়েকদিন টানা বৃষ্টির পর গত সপ্তাহের শেষ দিকে সিলেটের আকাশ রোদ ঝলমল হওয়ায় স্বস্তি বইছিল সবার মাঝে। কিন্তু গত কয়েক দিনের তীব্র গরমে জনজীবনে শুরু হয়েছে হাঁসফাঁস।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *