শেখ হাসিনার রায়ের অপেক্ষায় জাতি: মির্জা ফখরুল

জাতীয়

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ঢাকায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলার রায় ঘোষণা হবে। তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ একটি ন্যায্য বিচার নিশ্চিত হবে। জাতি রায়ের অপেক্ষায় আছে। আজ (সোমবার, ১৭ নভেম্বর) নিজের ফেসবুক পোস্টে এমন মন্তব্য করেন তিনি।

 

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আজ শেখ হাসিনাসহ তিনজনের মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার রায় ঘোষণা হবে। রায় সরাসরি সম্প্রচার করবে বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি) এবং দেশের সব গণমাধ্যম। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম রয়টার্সেও সম্প্রচার হবে রায়ের কার্যক্রম। পাশাপাশি ঢাকার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে বড় পর্দায় সরাসরি দেখার ব্যবস্থাও করা হয়েছে।

 

 

 

সকাল থেকেই ট্রাইব্যুনালে অবস্থান নিয়েছে বিটিভির বিশেষ লাইভ সম্প্রচার টিম। সকাল ৮টার পর লাইভ টিম ট্রাইব্যুনাল গেটে পৌঁছে অবস্থান নেয়। আদালতের মূল ফটকের বাইরে ইতোমধ্যে জড়ো হয়েছেন দেশি-বিদেশি সংবাদমাধ্যমের সাংবাদিকরা।

 

 

 

আদালত সূত্রে জানা গেছে, বেলা ১১টার পর ট্রাইব্যুনাল-১-এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল রায় ঘোষণা করবেন। প্যানেলের অন্য দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারপতি মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।

 

 

 

রায়কে কেন্দ্র করে ট্রাইব্যুনাল ও সুপ্রিম কোর্ট এলাকায় বাড়ানো হয়েছে কয়েক স্তরের নিরাপত্তাব্যবস্থা। পুলিশ, র‌্যাব, এপিবিএন, বিজিবির পাশাপাশি মোতায়েন রয়েছে সেনাবাহিনীও। গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরাও সতর্ক অবস্থানে রয়েছেন। নিরাপত্তার স্বার্থে রোববার সন্ধ্যার পর দোয়েল চত্বর হয়ে শিক্ষাভবনমুখী সড়কে যান চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে এবং সাধারণ মানুষের চলাচল সীমিত করা হয়েছে।

গত ১৩ নভেম্বর মামলার রায় ঘোষণার জন্য আজকের দিন নির্ধারণ করেন ট্রাইব্যুনাল। ২৮ কার্যদিবসে ৫৪ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য ও জেরা সম্পন্ন হয়। এরপর ৯ কার্যদিন ধরে চলে উভয়পক্ষের যুক্তিতর্ক ও পাল্টা যুক্তিখণ্ডন।

 

 

 

২৩ অক্টোবর অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামানের সমাপনী বক্তব্য এবং চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম ও রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী আমির হোসেনের যুক্তিখণ্ডন শেষে রায় ঘোষণার দিন ঠিক করা হয়।

 

 

 

প্রসিকিউশন যুক্তিতর্কে শেখ হাসিনা ও কামালের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করেছে। তবে রাজসাক্ষী হওয়ায় আসামি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত ট্রাইব্যুনালের ওপর ছেড়ে দেয়া হয়। তার খালাস চেয়েছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ। রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী আমির হোসেনের বিশ্বাস, হাসিনা ও কামালও খালাস পাবেন।

 

 

 

মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় তিন আসামির বিরুদ্ধে পাঁচটি অভিযোগ আনা হয়েছে—উসকানি, মারণাস্ত্র ব্যবহার, আবু সাঈদ হত্যা, চানখারপুলে হত্যা এবং আশুলিয়ায় মরদেহ পোড়ানো। আনুষ্ঠানিক অভিযোগপত্র ৮ হাজার ৭৪৭ পৃষ্ঠার, যার মধ্যে ২ হাজার ১৮ পৃষ্ঠা তথ্যসূত্র, ৪ হাজার ৫ পৃষ্ঠা দালিলিক প্রমাণ এবং ২ হাজার ৭২৪ পৃষ্ঠা শহিদের তালিকার বিবরণ। সাক্ষী করা হয়েছে ৮৪ জনকে। গত ১২ মে ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা প্রতিবেদন জমা দেয় চিফ প্রসিকিউটরের কাছে।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *