ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) টিএসসি সংলগ্ন সোহরাওয়ার্দী উদ্যান এলাকায় দুর্বৃত্তের ছুরিকাঘাতে ঢাবির শিক্ষা ও গবেষণা ইন্সটিটিউটের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র শাহরিয়ার আলম সাম্যের হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- মাদারীপুর সদরের এরশাদ হাওলাদারের ছেলে মো. তামিম হাওলাদার (৩০), কালাম সরদারের ছেলে পলাশ সরদার (৩০) ও ডাসার থানার যতিন্দ্রনাথ মল্লিকের ছেলে সম্রাট মল্লিক (২৮)। মঙ্গলবার দিবাগত রাতে রাজধানীর রাজাবাজারসহ কয়েকটি এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করে বুধবার সকালে শাহবাগ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ খালিদ মুনসুর বলেন, তিনজনকে ইতোমধ্যে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে আরও কেউ জড়িত আছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
এবিষয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের রমনা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মাসুদ আলম জানান, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের কালি মন্দিরের পাশে তিন যুবক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী সাম্যর ওপর হামলা করেন। এসময় হামলাকারীরাও আহত হন। তারা একটি ক্লিনিকে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। খবর পেয়ে পুলিশ সেখান থেকে দুজনকে আটক করে। এ সময় পালিয়ে যান আরেক যুবক। তাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
এর আগে বুধবার সকালে হত্যার ঘটনায় নিহতের বড় ভাই শরীফুল ইসলাম শাহবাগ থানায় ১০ থেকে ১২ জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন।
এর আগে রাত ১২টা নাগাদ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বাইকে ধাক্কা লাগাকে কেন্দ্র করে দুপক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটি হলে দুর্বৃত্তরা অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে সাম্যকে। এতে গুরুতরো আঘাতপ্রাপ্ত হন তিনি। পরে সহপাঠীরা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করে।
ক্যাম্পাস এলাকায় শিক্ষার্থী এমন মৃত্যুর ঘটনায় প্রতিবাদ জানিয়ে উপাচার্য বাসভবনের সামনে তাৎক্ষণিক বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে ছাত্রদল। এসময় উপস্থিত ছিলেন ছাত্রদল কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব, সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন নাছির, ঢাবি ছাত্রদলের সভাপতি গণেশ চন্দ্র রায় সাহস ও সাধারণ সম্পাদক নাহিদুজ্জামান শিপনসহ কেন্দ্রীয় ও বিভিন্ন হল শাখার নেতাকর্মীরা।
এসময় তারা ‘উই ওয়ান্ট, উই ওয়ান্ট, জাস্টিস জাস্টিস’, ‘আমার ভাই মরলো কেন? প্রশাসন জবাব চাই’, ‘নিরাপদ ক্যাম্পাস, আমাদের অধিকার’, ‘শিক্ষার্থীদের অধিকার, নিরাপদ ক্যাম্পাস’, ‘ভিসি তুমি কী করো? ক্যাম্পাসে লাশ কেন?’ ‘এক দুই তিন চার, ভিসি তুই গদি ছাড়’ ‘সাম্য ভাইয়ের রক্ত, বৃথা যেতে দেবো না’ প্রভৃতি স্লোগান দেন।
শাহরিয়ার আলম সাম্য বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল স্যার এ এফ রহমান হল শাখার সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক ছিলেন। থাকতেন হলের ২২২ নাম্বার রুমে। গ্রামের বাড়ি সিরাজগঞ্জ জেলার উল্লাপাড়া উপজেলায়।
শেয়ার করুন