‘সিলেট সাইট’ নামে ওয়েবসাইট করে ভয়ঙ্কর প্রতারণা! ৩ নারী-পুরুষ সিআইডি’র জালে

সিলেট

‘সিলেট সাইট’ নামে ওয়েবসাইট করে একটি চক্র হুন্ডির মাধ্যমে চার মাসে চার কোটি টাকা দুবাইয়ের পাচার করেছে বলে জানিয়েছেন পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) সাইবার স্টেশনের বিশেষ পুলিশ সুপার এস.এম আশরাফুল আলম।

সংস্থাটির ভাষ্য, এই চক্রটির সদস্যরা সাধারণ মানুষকে অনলাইনের মাধ্যমে অধিক লাভের লোভ দেখিয়ে প্রতারণা করে আসছে। এই চক্রের হোতা থাকেন দুবাইয়ে। বাংলাদেশে এজেন্ট নিয়োগ করে বিপুল পরিমাণের টাকা হুন্ডির মাধ্যমে পাচার করে চক্রটি।

সিআইডি বলছে, মাত্র চার মাসের মধ্যে কয়েক কোটি টাকা হুন্ডির মাধ্যমে দুবাইয়ে পাচার করেছে একটি চক্র। এমন অভিযোগে এই চক্রের তিন সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৪ আগস্ট) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সিআইডির সদর দপ্তরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার এসএম আশরাফুল আলম।

এর আগে সাইবার পুলিশ সেন্টারের সাইবার মনিটরিং শাখা বরিশাল জেলায় অভিযান চালিয়ে এই চক্রের তিনজন বাংলাদেশি এজেন্টকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- রনি খান, আরজু আক্তার এবং তাসনিম রহমান।

তাদের কাছ থেকে চারটি মোবাইল, তিনটি বিকাশ, নগদ এজেন্টের সিম, বিভিন্ন ব্যাংকের কয়েকটি চেক বই এবং এক লাখ ২৮ হাজার ৬৩০ টাকা জব্দ করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ‘সিলেট সাইট’ নামের অনলাইন ইনভেস্টমেন্ট ব্যবসায় সাধারণ মানুষকে বিপুল টাকা আয়ের প্রলোভন দেখায়। পরে মানুষের কাছ থেকে টাকা সংগ্রহ করে প্রথম দিকে কিছু মুনাফা দিতেন তারা। এর পর আরও বেশি টাকার বিনিয়োগ সংগ্রহ করে সিলেট সাইট নামের ওয়েবসাইট ডিজেবল করে দেয়। এভাবে ডিজিটাল প্রতারণার মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ টাকা আত্মসাৎ করেছেন তারা। এই কাজে বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে এজেন্ট নিয়োগ করে নগদ, বিকাশ অথবা ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে তারা টাকা সংগ্রহ করতেন।

সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টারের কাছে এমন তিনটি অভিযোগ আসে।

এছাড়াও রাজধানীর প্রেসক্লাবের সামনে গত ২৭ জুলাই সিলেট সাইটের প্রতারণায় ভুক্তভোগীরা একটি মানববন্ধনও করেন।

গ্রেপ্তারকৃতদের বরাত দিয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসএম আশরাফুল আলম বলেন, ‘এই চক্রের প্রধান হোতা আশিক ও তার স্ত্রী সানজিদা। তারা দুবাইয়ে বসবাস করছেন। গত চার মাসের মধ্যে তারা চার কোটি টাকারও বেশি আত্মসাৎ করেছে।’

গ্রেপ্তারকৃতদের বরাত দিয়ে সংবাদ সম্মেলনে সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার বলেন, ‘এই চক্রের সদস্যরা বিকাশ, নগদ, এজেন্ট ও ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে টাকা সংগ্রহ করতো। পরে সেই টাকা দুবাই প্রবাসী আশিক ও তার স্ত্রী সানজিদার নির্দেশে বিভিন্ন ব্যাংকের হিসাবে জমা করে দিতো। তাদের কাছ থেকে জব্দ করা মোবাইলে ব্যাংকে জমা দেওয়ার রশিদ থেকে এই তথ্য পাওয়া যায়।

সংবাদ সম্মেলনে সিআইডির অতিরিক্ত বিশেষ পুলিশ সুপার আজাদ রহমান, সাইবার পুলিশ স্টেশনের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শেখ রাজিবুল আলম এবং সাইবার পুলিশ স্টেশনের সহকারী পুলিশ সুপার কাজী আবু সাঈদ উপস্থিত ছিলেন।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *