স্টাফ রিপোর্টার: গ্রামবাংলায় একটি কথা প্রচলিত আছে-ভাদ্র মাসে শীতের জন্ম। কোনো কোনো অঞ্চলে প্রচলিত রয়েছে-ভাদ্র মাসের ১৩ তারিখ শীতের জন্ম। কিন্তু ভাদ্রের বিশ তারিখে পেরিয়ে গেলেও তীব্র গরমে-তাপপ্রবাহে নাভিশ^াস উঠেছে জনজীবনে।শুধু যে অসহনীয় গরম আবহাওয়া তাই নয়, এ সময় কয়েকটি জীবাণু সক্রিয় হয়ে থাকে বলে ডায়রিয়ার প্রকোপ বেড়ে যায়। ইতোমধ্যে হাসপাতালগুলোতে ডায়রিয়া আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে যেতে শুরু করেছে। হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিতে আসার মানুষের ভিড়ও বাড়ছে।সিলেট আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে সোমবার সিলেটে এক ফোঁটাও বৃষ্টি হয়নি। সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল প্রায় আটত্রিশের কোঠায় (৩৭.২) ডিগ্রি সেলসিয়াস। আগেরদিন রোববার সকাল ৬টা থেকে সোমবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টিপাত রের্কড করা হয়েছে ২০ মিলিমিটার।
গত কয়েক বছর ধরেই ঋতুচক্র কিছুটা যেন খেই হারিয়ে ফেলেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন অপরিকল্পিত নগরায়ন, দেদারসে প্রয়োজনে অপ্রয়োজনে গাছকাট, বন নিধন, পুকুর দিঘি ভরাট প্রকৃতিকে গরম করে তুলেছে। মানুষ এখন এর ফল ভোগ করছে। সামনে আরও কঠিন সময়।বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা (ডাব্লিউএমও) বলছে, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বায়ুম-লের তাপমাত্রা বাড়ছে। এ ধারা অব্যাহত থাকলে বার্ষিক গড় তাপমাত্রা অতীতের সকল রেকর্ড ছাড়িয়ে যাবে। যা দুশ্চিন্তার কারণ হতে পারে বাংলাদেশের জন্য।
গরমে সবার প্রাণ যখন ওষ্ঠাগত তখন তা আরও তরান্বিত করছে বিদ্যুতের ভেল্কিবাজি। এরআগে সরকার থেকে বলা হয়েছিল সেপ্টেম্বরে এসে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হয়ে যাবে কিন্তু সেপ্টেম্বরে এসে লোডশেডিং আরও বেড়েছে। রাতদিন কোনো ভেদ নেই বিদ্যুৎ যেন যাচ্ছে ইচ্ছেমতো। ঘণ্টার পর ঘণ্টা থাকছেনা বিদ্যুৎ। কোনো কোনো এলাকায় গ্রাহকরা অভিযোগ করেছেন দেড় ঘণ্টা বিদ্যুৎ নিয়ে আধাঘণ্টা দেওয়া হচ্ছে। মানুষের এই কষ্ট কয়েকগুণ বেড়ে যায় রাতের বেলা। মধ্যরাত থেকে ভোররাত বিদ্যুৎ যাবেই। গ্রাহকরা জানান রাত ১২টায় বিদ্যুৎ নিয়ে গিয়ে দেড়টায় দেওয়া হলো আবার ২টায় নিয়ে যায়। এরপর আসে রাত ৩টায়। কোনোরকম চোখ লাগলো আবার ভোর ৫টায় চলে যায় আসে ছয়টায়। কখনও সাড়ে ৪টায় গিয়ে আসে সকাল ৬টায়। গত ১ সপ্তাহ ধরে সিলেটে এই চলছে বিদ্যুতের অবস্থা। এই অবস্থায় মাঝেমধ্যে যে বৃষ্টিপাত হচ্ছে তাও গরম কমতে খুব একটা রেখাপাাত করতে পারছে না। ফলে গরমে আর লোডশেডিং মিলে মানুষের অবস্থা নাজেহাল।
এদিকে আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের ওপর মোটামুটি সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে মাঝারি অবস্থায় রয়েছে। এর প্রভাবে সিলেট ও চট্টগ্রাম বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় এবং রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের অনেক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারি থেকে অতিভারি বর্ষণ হতে পারে।
শেয়ার করুন