আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি ও অপরাধীদের গ্রেফতারে সিলেটে অব্যাহত রয়েছে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’। গত ২৪ ঘন্টায় এই অপারেশনে সিলেটে বিভাগের আরো ১১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ নিয়ে সিলেটে গ্রেফতারের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩৪৩ জনে। চলমান অভিযানের ১৫ দিনেও সিলেটে কোন অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার হয়নি ও কোন অস্ত্রধারীও গ্রেফতার হয়নি।
এদিকে জুলাই আন্দোলনে সিলেটে ভয়ানক অস্ত্রসহ আগ্নেয়াস্ত্রের মহড়া চালিয়েছে আওয়ামী লীগ- যুবলীগ-স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। যার সচিত্র প্রতিবেদন জাতীয় ও স্থানীয় প্রিন্ট-ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় একাধিক বার প্রকাশিত হয়েছে। ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পটপরিবর্তনে অধিকাংশ নেতাকর্মী আত্মগোপনে চলে যায়। এই সময়ে তারা অস্ত্র নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার কথা নয়। কিন্তু জুলাই বিপ্লবের ৬ মাসেও অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার ও চিহ্নিত অস্ত্রধারীদের গ্রেফতার করতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারি বাহিনী। চলমান অপারেশনে সিলেট বিভাগে প্রায় সাড়ে ৩০০ ডেভিলকে গ্রেফতার করা হলেও অস্ত্র উদ্ধার করতে না পারা ও অবৈধ অস্ত্রধারীদের গ্রেফতার করতে না পারায় জনমণে ক্ষোভ বিরাজ করছে।
এদিকে দেশে ছুরি-ছিনতাই, রাহাজানি-খুণ-খারাবি বৃদ্ধি পাওয়ায় যৌথ বাহিনীর নেতৃত্বে দেশব্যাপী কম্বাইন্ড টহল জোরদার করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারি বাহিনী। এই সময়ে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার ও অস্ত্রধারী গ্রেফতার হবে এমনটাই প্রত্যাশা জনসাধারণের।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গত ২৪ ঘন্টায় সিলেট মহানগর এলাকায় আরো ২ জনকে আটক করা হয়েছে। এছাড়া এই সময়ে সিলেট জেলায় ২, সুনামগঞ্জে ১, হবিগঞ্জে ৩ ও মৌলভীবাজারে ৩ জনকে আটক করা হয়েছে।
এসএমপি সূত্রে জানা গেছে, গত ২৪ ঘন্টায় সিলেট নগর এলাকায় আটক ২ জন হলেন- দক্ষিণ সুরমার বেটুয়ার মুখ গ্রামের মোঃ আলীর পুত্র দক্ষিণ সুরমা উপজেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আলী বিন শাহিন, লাউয়াই মুহাম্মদপুর আলী হোসেন খানের পুত্র আলী আহমদ খান (৫৮)। গ্রেফতারকৃতদেরকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
এ নিয়ে সিলেট মহানগর পুলিশ ‘অপারেশন ডেভিল হান্টে’ মোট ৮৪ জনকে আটক করা হয়েছে। এর মধ্যে ৭২ জনকে পুলিশ ও বাকী ১২ জনকে অন্যান্য বাহিনী আটক করে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছে।
পুলিশের সিলেট রেঞ্জের ডিআইজি অফিসের অপারেশন্স ইনচার্জ ইন্সপেক্টর মোহাম্মদ আব্দুন নুর দৈনিক জালালাবাদকে জানান, চলমান অপারেশন ডেভিল হান্টে মঙ্গলবার পর্যন্ত সিলেট বিভাগের ৪ জেলায় ২৫৯ জনকে আটক করা হয়েছে। এর মধ্যে সিলেট জেলায় ৩৩, মৌলভীবাজার জেলায় ১০১, সুনামগঞ্জে ৮১ ও হবিগঞ্জ জেলার ৪৪ জন রয়েছেন। এছাড়া মহানগর এলাকায় আটক হয়েছেন ৮৪ জন। সবমিলিয়ে সিলেট বিভাগে এই অপারেশনে ৩৪৩ জন ডেভিল আটক হয়েছেন।
এ ব্যাপারে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের মিডিয়া অফিসার অতিরিক্ত উপ-কমিশনার মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম দৈনিক জালালাবাদকে বলেন, এখন পর্যন্ত ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’-এ মহানগর এলাকায় মোট ৭২ জনকে পুলিশ আটক করেছে। এছাড়া অন্যান্য বাহিনী আটক করে ১২ জনকে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছে। এদিকে দেশে চুরি ছিনতাই বৃদ্ধি পাওয়ার মঙ্গলবার থেকে সিলেটেও যৌথবাহিনীর অভিযান জোরদার করেছে। পাশাপাশি ডেভিলদের গ্রেফতারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
শেয়ার করুন