সিলেটে পূর্ব বিরোধের জেরে ফিনল্যান্ড প্রবাসী সাজ্জাদুর রহমান মুন্না (৩৭) ও তার ভাতিজা মারুফুর রহমান জিসানের ওপর হামলার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় গত ১৪ অক্টোবর সিলেট মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ২য় আদালতে কুলাউড়ার ভাটেরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সদস্য সৈয়দ একেএম নজরুল ইসলামকে প্রধান আসামী করে আরো ৮জনের নামোল্লেখ করে একটি মামলা (নং-৪৪০/২০২৪) দায়ের করেন ফিনল্যান্ড প্রবাসী সাজ্জাদুর রহমান মুন্না। মামলাটি তদন্তের জন্য সিআইডিকে দায়িত্ব দিয়েছেন বিজ্ঞ আদালত। রোববার রাতে কুলাউড়ার একটি অভিজাত রেষ্টুরেন্টে সংবাদ সম্মেলন করে এমন তথ্য জানান প্রবাসী মুন্না।
আদালতে দায়েরকৃত অভিযোগ থেকে জানা যায়, সাজ্জাদুর রহমান মুন্না কুলাউড়া উপজেলার ব্রাহ্মণবাজার ইউনিয়নের চকেরগ্রামের বাসিন্দা হীরা মিয়ার ছেলে। বর্তমানে তিনি সিলেটের শিবগঞ্জ সোনারপাড়া এলাকায় নবারুন-২ এর বাসিন্দা। মুন্নাসহ তার ৫ ভাই প্রবাসে থাকেন। ২০১৭-২০১৮ সালে ছয় শতক জায়গা ক্রয় করে শিবগঞ্জ সোনারপাড়া নবারুন-২ একটি ভবন নির্মাণ করে বসবাস করছেন সাজ্জাদুর রহমান মুন্নার পরিবার। পরবর্তীতে ২০১৯ সালে ওই বাসার পাশে ১৪ শতক জায়গা ক্রয় করে রাস্তাবিহীন এল সাইজ ৬তলা ভবন নির্মাণ করেন ভাটেরা ইউপি চেয়ারম্যান একেএম নজরুল ইসলাম। ওই ভবন নির্মাণের পর মুন্নার সাথে ভবনের রাস্তা নিয়ে বিরোধ দেখা দেয় চেয়ারম্যান নজরুল ইসলামের। দীর্ঘদিন থেকে এ বিরোধ চলার পর একপর্যায়ে মুন্না ফিনল্যান্ড চলে যান। গত ২৩ সেপ্টেম্বর ফিনল্যান্ড থেকে দেশে ফিরেন মুন্না। মুন্নার দেশে আসার সংবাদ পেয়ে নজরুল ইসলাম গং বিরোধের বিষয়টি আপোষ মিমাংসা করার জন্য যোগাযোগ করলে
গত ১ অক্টোবর সিলেটের বালুচর এলাকায় অবস্থান করেন মুন্না ও তার ভাতিজা জিসান। ৩ অক্টোবর সন্ধ্যার পরে চেয়ারম্যান একেএম নজরুল ইসলাম তার ব্যবহৃত মোবাইল নাম্বার দিয়ে মুন্নার আত্মীয় সারোয়ার খানের সাথে বিধোধের বিষয়টি সমাধানের জন্য উপশহর এলাকায় যাওয়ার জন্য বলেন। পরে প্রবাসী মুন্না ও তার ভাতিজা জিসান উপশহর যাওয়ার পথে পথিমধ্যে ৩ অক্টোবর আনুমানিক রাত ৯টা থেকে ১০টায় চেয়ারম্যান নজরুল ইসলামের নেতৃত্বে তার সহযোগী রাসেল আহমদ চৌধুরী, সিতার আহমেদ মুন্না, মোরশেদ মিয়া, সুলতান মিয়া, ড্রাইভার সাকিব মিয়া, দিলাল মিয়া, তোফায়েল আহমদ তারেক, সৈয়দ জয়দু মিয়া তাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। হামলায় গুরুতর আহত হন প্রবাসী মুন্নাসহ তার ভাতিজা জিসান। পরে স্থানীয়রা মুন্না ও জিসানকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। ওই ঘটনায় মুন্নার ভাতিজা জিসান আসামীদের বিরুদ্ধে থানায় এজাহার দায়ের করলে গত ৬ অক্টোবর আসামীরা ক্ষিপ্ত হয়ে আবারো জিসানের ওপর হামলার করেন। পরে আহতবস্থায় জিসানকে আবারো ওসমানী হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয়।
ফিনল্যান্ড প্রবাসী সাজ্জাদুর রহমান মুন্না বলেন, আওয়ামীলীগের প্রভাবশালী চেয়ারম্যান নজরুল গং এর কার্যকলাপে আমি ও আমার পরিবার খুবই নিরাপত্তাহীনতায় আছি। গত ৭ অক্টোবর আসামীদের বিরুদ্ধে শাহপরাণ থানায় লিখিত একটি অভিযোগ দায়ের করি। কিন্তু প্রধান আসামী প্রভাবশালী হওয়ার কারণে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা না নেওয়ায় বাধ্য হয়ে আদালতে গিয়ে চেয়ারম্যান নজরুল ইসলামকে প্রধান আসামীসহ ৯জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করি। তিনি আরো বলেন, আমার আবেদনের প্রেক্ষিতে ২০২১ সালের ১৪ অক্টোবর সিলেট সিটি কর্পোরেশনের নির্বাহী প্রকৌশলী স্বাক্ষরিত একটি পত্রে বিধি বহির্ভূতভাবে চেয়ারম্যান নজরুল ইসলামের নির্মিত ইমারতের অনুমোদন বাতিল করা হয়। সিটি কর্পোরেশনের বক্তব্য অনুযায়ী যারা এসপি টাওয়ার-৩ থেকে ফ্ল্যাট কিনেছেন তারা ভবিষ্যতে ক্ষতিগ্রস্থ হবেন। বর্তমানে সিলেটে নজরুল ইসলামকে সহযোগিতা করছেন স্থানীয় বর্তমান সময়ের প্রভাবশালীরা।
এ বিষয়ে ভাটেরা ইউপি চেয়ারম্যান সৈয়দ একেএম নজরুল ইসলাম বলেন, আমাদের বিরুদ্ধে কাল্পনিক তথ্য দিয়ে মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে কোন হামলার ঘটনা ঘটেনি। একই ধরনের মিথ্যা অভিযোগ শাহ পরান থানায় দায়ের করেছিল থানার তদন্তে তা মিথ্যা প্রমাণিত হয়। এর আগে আরো অনেক মিথ্যা মামলা করেছে সবগুলো মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে।