উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও অতিবৃষ্টিতে সিলেটের সব নদ-নদীর পানি আবারও বাড়ছে। এতে চলমান বন্যা পরিস্থিতি দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। একইসাথে হতাশা আর দুশ্চিন্তায় বাড়ছে বন্যাকবলিত পরিবারগুলোর মধ্যে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) দুপুর ১২টায় সুরমা নদীর পানি কানাইঘাট পয়েন্ট বিপৎসীমার ৬১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। এর আগে, গতকাল এই পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ৩৬ সেন্টিমিটার ওপরে ছিল।
একই সময়ে কুশিয়ারা নদীর পানি আমলশিদ পয়েন্টে বিপৎসীমার ৩৯ সেন্টিমিটার ওপর ও ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে ৮৮ সেন্টিমিটার দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। এর আগে, গতকাল দুটি পয়েন্টে পানি যথাক্রমে বিপৎসীমার ৩২ সেন্টিমিটার ও ৯১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।
সিলেট জেলা প্রশাসনের বন্যা সংক্রান্ত এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, বন্যায় জেলার ১৩টি উপজেলার ৯৫টি ইউনিয়নের ১ হাজার ৪১টি গ্রাম প্লাবিত রয়েছে। এতে পনিবন্দি অবস্থায় রয়েছেন ৫ লাখ ৩৯ হাজার ২৯৮ জন মানুষ। এসব এলাকায় ২১৩টি আশ্রয়কেন্দ্রে ৯ হাজার ২০৬ জন মানুষ অবস্থান করছেন। এরমধ্যে বালাগঞ্জ, ওসমানীনগর, ফেঞ্চুগঞ্জ ও বিয়ানীবাজার উপজেলায় বন্যা দীর্ঘস্থায়ী হওয়ায় দুর্ভোগ বেড়েছে।
সিলেট আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ শাহ মোহাম্মদ সজীব হোসাইন বলেন, বুধবার সকাল ৬টা থেকে বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা পর্যন্ত সিলেটে ১১৩ দশমিক ৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। আজ সারাদিন বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ২৯ মে ভারী বৃষ্টিপাত ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সিলেটে প্রথম দফা বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। ৮ জুনের পর পরিস্থিতি অনেকটা স্বাভাবিক হয়। পরে ১৬ জুন ঈদুল আজহার আগের দিন ফের ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে দ্বিতীয় দফায় বন্যা দেখা দেয়। এরপর ২৫ জুন থেকে সিলেট অঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতি উন্নতি হতে শুরু করে।
কিন্তু ১ জুলাই ফের অতিবৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে নদ-নদীর পানি বেড়ে তৃতীয় দফায় বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। তৃতীয় দফা বন্যার ১০ দিন পার হলেও এখনও জেলার সবকটি উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত রয়েছে। বুধবার (১০ জুলাই) বিকেল থেকে অতিবৃষ্টির কারণে বিভিন্ন এলাকায় নদ-নদীর পানি ফের বাড়ছে।
শেয়ার করুন