হবিগঞ্জে নিরব মহামারিতে রূপ নিয়েছে ‘পানিতে ডুবে মৃত্যু’। গত ১০ মাসে এই জেলায় পানিতে ডুবে মৃত্যু হয়েছে ৪০ জন শিশুর। এরমধ্যে আটটি জোড়া মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। যা অন্য বছরের তুলনায় অনেক বেশি।
পানিতে মৃত্যুর ঘটনা সবচেয়ে বেশি ঘটেছে হাওর অধ্যুষিত বানিয়াচং উপজেলায়। এ উপজেলায় গত ১০ মাসের মৃত্যু হয়েছে ১০ শিশুর।
এছাড়া আজমিরীগঞ্জ চারজন, নবীগঞ্জ তিনজন, বাহুবল আটজন, হবিগঞ্জ সদর উপজেলায় তিনজন, মাধবপুর আটজন, চুনারুঘাট তিন জন এবং শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলায় ১ জনের মৃত্যু হয়েছে। তবে কোন মৃত্যুর ঘটনা ঘটেনি লাখাই উপজেলাতে।
হবিগঞ্জের স্থানীয় দৈনিকে গত ১০ মাসের তথ্য বিশ্লেষণ করে এই পরিসংখ্যান পাওয়া গেছে। এসব মৃত্যুর ঘটনার অধিকাংশই ঘটেছে বাড়ির পাশের পুকুর বা বদ্ধ জলাশয়ে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন- মা বাবাসহ পরিবারের বড় সদস্যদের উদাসীনতা ও সচেতনতার অভাবেই পানিতে ডুবে শিশু মৃত্যুর ঘটনা বেশি ঘটছে। তাই পানিতে ডুবে মৃত্যুর হার কমাতে সচেতনতা বাড়ানোর তাগিদ তাদের।
হবিগঞ্জের ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. মুখলেছুর রহমান উজ্জল বলেন, ‘পানিতে ডুবে শিশু মৃত্যুররোধ করতে হলে অভিভাবকদের আরো সচেতন হতে হবে। বেশিরভাগ অসচেতনতার জন্যই শিশুরা পানিতে ডুবে মারা যাচ্ছে। বিশেষ করে সকাল ৯টা থেকে দুপুর পর্যন্ত তাদের নজরে রাখতে হবে। কারণ এ সময়টাতে পরিবারের সদস্যরা কাজকর্মে চলে গেলে শিশুরা খেলতে গিয়ে পুকুরের পানিতে ডুবে মারা যায়।’
শুধু হবিগঞ্জ জেলায় নয়, পুরো বাংলাদেশেই পানিতে ডুবে শিশু মৃত্যুর ঘটনা এক নিরব মহামারিতে রূপ নিয়েছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে প্রতি বছর প্রায় ১৮ হাজার মানুষ পানিতে ডুবে মৃত্যুবরণ করেন এবং এক থেকে চার বছর বয়সী শিশু মৃত্যুর ঘটনার ৪৩ শতাংশই পানিতে ডুবার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট।
শেয়ার করুন