৪ লক্ষাধিক টাকার অবৈধ মালামাল নিয়ে সিলেট থেকে ঢাকাগামী একটি কাভার্ডভ্যানকে এসএমপির দক্ষিণ সুরমা থানা পুলিশ রহস্যজনক কারণে ছেড়ে দিলেও ছাড় দেয় নি জেলা পুলিশ। অবৈধ মালামালসহ কাভার্ডভ্যানটি আটক করে জেলা পুলিশের ওসমানীনগর থানা পুলিশ।
জানা যায়, রোববার (১৯ মার্চ) দুপুর দেড়টায় সিলেট-ঢাকা মহাসড়কের ওসমানীনগর ইলাশপুর নামক স্থানে চেকপোষ্ট বসিয়ে বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমারের ভিতরের তামার তারসহ আনুষাঙ্গিক মালামাল আটক করে পুলিশ। কাভার্ডভ্যান তল্লাশী করে ৪লক্ষাধিক টাকা মূল্যের মালামাল জব্দ করা হয়।
অনুসন্ধানে জানা যায়, শনিবার (১৮ মার্চ) অবৈধ মালামাল নিয়ে সিলেট থেকে ঢাকার উদ্দ্যেশ্যে যাত্রা করে ঢাকা মেট্টো-ট-১৮-৪৬৫৮ নম্বরের একটি কাভার্ডভ্যান। বিপত্তি ঘটে দক্ষিণ সুরমার কুশিয়ারা পেট্রোল পাম্পের সামনে। সেখানে শনিবার (১৮ মার্চ) সন্ধ্যা ৬টায় সিলেট মেট্টোপলিটন পুলিশের (এসএমপি) এর দক্ষিণ সুরমা থানার উপ-পরিদর্শক শাহিন কবির আটক করেন এই কাভার্ডভ্যান। কিন্তু রহস্যজনক কারণে কোন আইনগত ব্যবস্থা না নিয়ে পরদিন ভোরে ১২ ঘন্টার মধ্যেই ছেড়ে দেয়া হয় কাভার্ডভ্যানটি।
অজ্ঞাত কারণে দক্ষিণ সুরমা থানা পুলিশ ছেড়ে দিলেও গোপন সংবাদের ভিত্তিতে চেকপোষ্ট বসিয়ে কাভার্ডভ্যানটি আটক করে ওসমানীনগর থানা পুলিশ। পরে পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের এজিএম এ.কে.এম ওমর ফারুক ও ইঞ্জিনিয়ার রিপন কুমার চন্দের উপস্থিতিতে কাভার্ডভ্যানে তল্লাশী চালিয়ে পাটের বস্তার ভেতর থেকে ৩৩৮ কেজি বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমারের ভিতরের তামার তারসহ আনুষাঙ্গিক মালামাল জব্দ করে পুলিশ। যার আনুমানিক মূল্য ৪ লক্ষ ৩১ হাজার ৭৫০টাকা।এসব মালামাল খোলাবাজারে ক্রয়-বিক্রয় নিষিদ্ধ থাকায় ও কোন বৈধ কাগজ পত্র না দেখাতে পারায় কাভার্ডভ্যান চালক কাউসার আহমদ ও সহকারী সোহেল আহমদ সুমেলকে আটক করা হয়।
চোরাই মাল হিসেবে স্বল্প মূল্যে ক্রয় করে পরস্পর যোগসাজশে তা বিক্রির জন্য ঢাকায় নিয়ে যাচ্ছিল বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানায়।
পরে ঘটনায় উপ-পরিদর্শক মোহাম্মদ খবির উদ্দিন ৭ জনের নাম উল্লেখ করে ও আরও ৩/৪জন কে অজ্ঞাত রেখে ওসমানীনগর থানায় মামলা দায়ের করেন। (মামলা নং ১৯/২০.০৩.২৩)
মামলার আসামীরা হলেন, কাভার্ডভ্যান চালক দক্ষিণ সুরমার সাধুর বাজার গ্রামের আব্দুর রশিদের ছেলে কাউসার আহমদ (২২), জকিগঞ্জের কলাতগনিয়া গ্রামের খছরুল ইসলামের ছেলে ও ড্রাইভারের সহকারী সোহেল আহমদ সুমেল (২০), মুন্সিগঞ্জ জেলার লৌহজং উপজেলার নরসিংপুর গ্রামের হামিস উদ্দিনের ছেলে লিটন (৫০), শরীয়তপুর জেলার নড়িয়া উপজেলার নশাসন গ্রামের রমিস উদ্দিনের ছেলে তোতা মিয়া (৪৮), নরসিংদীর রায়পুরার মির্জারচর গ্রামের ফরিদ মিয়ার ছেলে শাহ জালাল (৪১), আবুল হোসেন, স্বপনসহ অজ্ঞাত আরও ৩/৪জন।
এব্যাপারে ওসমানীনগর থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ এস. এম মাইন উদ্দিন আটকের সত্যতা নিশ্চিত করেন।
এদিকে, দক্ষিণ সুরমা থানা পুলিশ অবৈধ মালামাল সহ কাভার্ডভ্যানটি আটক করেও ছেড়ে দেয়ার ঘটনায় থানা পুলিশের ভূমিকাকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে। এমনটাই বলছেন সচেতন মহলের লোক।
এব্যাপারে উপ-পরিদর্শক শাহিন কবির বলেন, আমরা সোর্স মাধ্যমে খবর পেয়ে অভিযান পরিচালনা করি কিন্তু আমাদের কাছে যে তথ্য ছিল সে অনুসারে গাড়ি পাইনি।তবে এই গাড়িটি আমাদের সন্দেহে ছিল কিন্তু গাড়ির নাম্বার না জানায় গাড়িটি নিশ্চিত করতে পারিনি।গাড়িটি আটকের পর ছেড়ে দেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি অস্বীকার করেন।
এব্যাপারে জানতে দক্ষিণ সুরমা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শামসুদ্দোহা (পিপিএম) মুঠোফোনে দুপুর ১২টায় কল দিলে তিনি বলেন, আমি একটা মিটিংয়ে আছি।পরে কথা বলছি।পরবর্তীতে দুপুর ১টা ৪২ মিনিটতে আবার যোগাযোগের চেষ্টা করলে মোবাইল নাম্বার ব্যস্ত পাওয়া যায়।
শেয়ার করুন