আওয়ামী লীগের কোনো ভবিষ্যৎ দ্বিতীয় বাংলাদেশে নেই বলে মন্তব্য করেছেন বিশিষ্ট সাংবাদিক মুশফিকুল ফজল আনসারী। বলেছেন, “আওয়ামী লীগ নামের সঙ্গে জুলুম শব্দ যুক্ত। আওয়ামী লীগ নামের সঙ্গে গুমের নাম সম্পৃক্ত, দেখামাত্রই গুলির বিষয় সম্পৃক্ত। আমার মনে হয় না, আওয়ামী লীগের কোনো ভবিষ্যৎ এই দ্বিতীয় বাংলাদেশে আছে।”
প্রায় এক দশক নির্বাসনে থাকার পর বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্র থেকে দেশে ফিরে মানবজমিনের সাথে একান্ত আলাপচারিতায় মুশফিক উক্ত মন্তব্য করেন।
সকলের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনে শেখ হাসিনা পালাতে বাধ্য হলেও এখন অনেকেই বিভ্রান্ত হচ্ছেন কিংবা ওই ঐক্য আর আগের মতো নেই- এমনটা অনেকেই বলছেন। এ বিষয়ে মুশফিক বলেন, “১৫ বছরের বেশি সময় একটি ফ্যাসিবাদি শাসনব্যবস্থা ছিল। তাদের লোক রন্ধ্রে রন্ধ্রে প্রবেশ করেছে। প্রশাসনে বলেন, সিভিল সার্ভিসে বলেন, সব জায়গায়৷ অনেকে অবশ্য খোলস পরিবর্তন করেছে খুব তাড়াতাড়ি। আবার অনেকে খোলস পরিবর্তন করে অন্য উদ্দেশ্য সাধনের চেষ্টা করছে। তাছাড়া ভিনদেশি প্রভুদের ইন্ধন রয়েছে। সবমিলিয়ে একটা জটিল পরিস্থিতি।”
মুশফিক মনে করেন, যারা সরকার পরিচালনায় রয়েছেন তাদের আরও দৃঢ় হওয়া উচিত। প্রফেসর ইউনূসের মতো একজন মানুষকে পেয়ে যদি এই দেশের মানুষ নিজেদের ভাগ্য পরিবর্তন করতে না পারে তারচেয়ে বড় দুর্ভাগ্য আর কি হতে পারে? এমন প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, “পৃথিবীতে একমাত্র নোবেলজয়ী যিনি সরকার প্রধানের দায়িত্বে রয়েছেন। তার টিম মেম্বার, সহকর্মীদের সেটার সাথে সংগতি রেখেই কাজ করতে হবে। এটা কোনো সাধারণ তত্ত্বাবধায়ক সরকার নয়, এটা একটা বিপ্লবী সরকার। কাজেই এখানে সাধারণ তত্বাবধায়ক সরকারের মতো রুটিনমাফিক কাজ করলে হবে না। আপনার মিশন এবং ভিশনের সাথে সমন্বয় থাকতে হবে। আপনি কি ম্যাসেজ দিতে চাচ্ছেন জাতিকে, কোনদিকে নেভিগেট করতে চাচ্ছেন…এগুলো খুব গুরুত্বপূর্ণ।”
আপনার বিরুদ্ধে একটি গোষ্ঠীর অভিযোগ আপনি যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্ট এবং জাতিসংঘে সবসময় আওয়ামী লীগ বিরোধী প্রশ্ন করে থাকেন… প্রশ্নটি শেষ করার আগেই মুশফিক বেশ স্পষ্টভাবে বলেন, “আমার বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগই আছে। তবে, আওয়ামী বিরোধী প্রশ্ন করতাম কিনা জানি না। সবসময় মানবাধিকার, ভোটাধিকার, গণতন্ত্রের পক্ষেই প্রশ্ন করতাম। আপনারা হয়তো পাবলিকগুলো দেখেছেন, প্রাইভেটগুলো দেখেন নি। প্রাইভেট ডোমেইনেও আমি সেই একই কাজই করেছি। ১৫ বছর এই দল শুধু ক্ষমতায় থাকার জন্য যে গুম-খুন-নির্যাতন করেছে, এই দলের পক্ষে থাকারতো কোনো সুযোগই নেই। আজকের বাংলাদেশেও যদি গুম-খুনের কিংবা ভয়ের সংস্কৃতি চালু হয় সেসবের বিরুদ্ধেও সমভাবে বলবো।”
উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্রে মুশফিকুল ফজল আনসারী হোয়াইট হাউস এবং জাতিসংঘের স্থায়ী সংবাদদাতা হিসেবে কাজ করছেন। তিনি মানবাধিকার সংস্থা রাইট টু ফ্রিডমের নির্বাহী পরিচালক এবং অ্যাম্বাসেডর উইলিয়াম বি মাইলাম সম্পাদিত ‘সাউথ এশিয়া পারসপেক্টিভস’ এর নির্বাহী সম্পাদক হিসেবেও কাজ করছেন।