সম্প্রতি তুরস্ক ও সিরিয়ায় ঘটেছে বিশ্বকে কাঁপিয়ে দেওয়া ভয়াবহ ভূমিকম্প। এতে প্রায় দেড় লক্ষ প্রাণহানি ঘটেছে। এরই মাঝে কপালে আতঙ্কের রেখা ফুটিয়ে সিলেটের পার্শ্বদেশ ভারতের দুটি অঞ্চল কেঁপেছে ভূমিকম্পে।
রোববার (১২ ফেব্রুয়ারি) আসামে হয়েছে ভূমিকম্প। রিখটার স্কেলে যার মাত্রা ছিল চার। আর সোমবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) ভূমিকম্পে কেঁপেছে ভারতের সিকিম রাজ্য। রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল চার দশমিক তিন। দুই স্থানই সিলেট থেকে খুব বেশি দূরে নয়।
জানা যায়, সিকিমের রাজধানী গ্যাংটক থেকে ১২০ কিলোমিটার দূরের শহর ইউকোসাম। শহরের ১০ কিলোমিটার গভীরে ছিল ভূমিকম্পের উৎসস্থল। স্থানীয় সময় ভোর ৪টা ১৫ মিনিট নাগাদ এই ভূমিকম্প হয়। প্রায় পুরো সিকিমই কেঁপে ওঠে এতে।
পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে ভূমিকম্প হওয়ায় আতঙ্ক আছেন সিলেটবসী। ভূ-তত্ত্ব বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তুরস্ক ও সিরিয়ার মতো বাংলাদেশও ভয়াবহ ভূমিকম্পের ঝুঁকিতে রয়েছে। দেশে ভূমিকম্পের অন্যতম ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চল সিলেট। সিলেটকে ভূমিকম্পের ‘ডেঞ্জার জোন’ বলে থাকেন বিশেষজ্ঞরা। গত দুই বছরে সিলেটে অন্তত ১৫ বার ভূমিকম্প হয়েছে। ভূমিকম্পের ঝুঁকি থাকলেও তা মোকাবেলায় সিলেটে নেই কার্যকর উদ্যোগ।
কলোম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক যৌথ গবেষণায় দেখা গেছে, উত্তরে তিব্বত সাব-প্লেট, ইন্ডিয়ান প্লেট এবং দক্ষিণে বার্মা সাব-প্লেটের সংযোগস্থলে বাংলাদেশের অবস্থান। ফলে সিলেট-সুনামগঞ্জ হয়ে, কিশোরগঞ্জ চট্টগ্রাম হয়ে একেবারে দক্ষিণ সুমাত্রা পর্যন্ত চলে গেছে।
ইন্ডিয়া প্লেট ও বার্মা প্লেটের সংযোগস্থলে দীর্ঘসময় ধরে কোন ভূমিকম্পের শক্তি বের হয়নি। ফলে সেখানে ৪০০ থেকে হাজার বছর ধরে শক্তি জমা হয়ে রয়েছে।
ইন্ডিয়া প্লেট পূর্ব দিকে বার্মা প্লেটের নীচে তলিয়ে যাচ্ছে আর বার্মা প্লেট পশ্চিম দিকে অগ্রসর হচ্ছে। ফলে সেখানে যে পরিমাণ শক্তি জমা হচ্ছে, তাতে ৮ মাত্রার অধিক ভূমিকম্প হতে পারে। এটা যেমন একবারে হতে পারে, আবার কয়েকবারেও হতে পারে।
তবে যে কোনো সময় বড় ধরনের ভূমিকম্প হতে পারে বলে তারা আশঙ্কা করছেন। সাধারণত এ ধরনের ক্ষেত্রে সাত বা আট মাত্রার ভূমিকম্প হয়ে থাকে। কিন্তু কবে বা কখন সেটা হবে, তা এখনো বিজ্ঞানীদের এখনো ধারণা নেই। সানফ্রানসিসকো বা দক্ষিণ আমেরিকার ভূমিকম্পের সঙ্গে এর মিল রয়েছে।
সুনামগঞ্জ, জাফলং অংশে ডাউকি ফল্টের পূর্বপ্রান্তেও ভূমিকম্পের ঝুঁকি রয়েছে বলে বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন।
শেয়ার করুন