ওসমানী হাসপাতাল থেকে জনদূর্ভোগ লাঘব ও দুর্নীতি দুর করার দাবীতে পরিচালক বরাবরে স্মারকলিপি প্রদান

সিলেট

সিলেট কল্যাণ সংস্থা, সিকস’র অঙ্গ সংগঠন সিলেট বিভাগ যুব কল্যাণ সংস্থা ও সিলেট প্রবাসী কল্যাণ সংস্থার যৌথ উদ্যোগে ২৭ মে ২০২৪ সোমবার বেলা ১১.৩০ ঘটিকায় ওসমানী হাসপাতাল থেকে সবধরনের জনদূর্ভোগ লাঘব ও দুর্নীতি দূর করার দাবীতে ওসমানী হাসপাতালের পরিচালক বরাবরে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। স্মারকলিপি প্রদানকালে পিএ টু পরিচালকের আচরণ সাংগঠনিক নেতৃবৃন্দদের মর্মাহত করে, এ জন্য ক্ষোভ প্রকাশ করেন উপস্থিত নেতৃবৃন্দ।

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছ থেকে জাতীয় যুব দিবস-২০১০ এ জাতীয় যুব পুরস্কার শ্রেষ্ঠ যুব সংগঠক পদকপ্রাপ্ত সংস্থাগুলোর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও সিলেট কল্যাণ সংস্থার কার্যকরী কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ এহছানুল হক তাহেরের নেতৃত্বে বৈরী আবহাওয়ায় বৃষ্টির মধ্যে স্মারকলিপি প্রদান কর্মসূচীতে উপস্থিত ছিলেন সিবিযুকস’র বিভাগীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মুসলেহ উদ্দিন চৌধুরী মিলাদ, সিবিযুকস’র সিলেট জেলা কমিটির সহ-সভাপতি তোফায়েল আহমদ, সহ-সভাপতি মোঃ মিনহাজ উদ্দিন, সাংগঠনিক সম্পাদক বিজিত চন্দ, সিবিযুকস’র সিলেট মহানগর কমিটির সহ-সভাপতি জাকারিয়া মোহাম্মদ সালাউদ্দিন সাকের, প্রচার সম্পাদক দিপক কুমার মোদক বিলু ও  সমাজ সচেতন নাগরিকদের মধ্য থেকে গোবিন্দ রায়।
স্মারকলিপির বিষয়বস্তুঃ সিলেট বিভাগে চিকিৎসাক্ষেত্রে একমাত্র ভরসার নাম সিলেট এম.এ.জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। পুরো দেশজুড়ে সিলেট অঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী এই চিকিৎসা কেন্দ্রটির সুনাম ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে। বর্তমানে সর্বস্তরের নাগরিকদের প্রধান চিকিৎসা কেন্দ্র ওসমানী হাসপাতালে চিকিৎসার নামে চলছে রমরমা ব্যবসা। অসহায় ও সর্বসাধারণ রোগীদের সরকারীভাবে চিকিৎসাসেবা সহ ফ্রি ঔষধ পাওয়ার কথা থাকলেও বর্তমানে তা পাচ্ছেন না রোগীরা। সর্বাবস্থায় সর্বস্তরের প্রভাবশালী ব্যক্তিবর্গ ছাড়া আর কেউই চিকিৎসা সেবা গ্রহণ করতে পারছেন না। বিভিন্ন ওয়ার্ড ও কেবিনে পর্যাপ্ত সিট খালি থাকার পরও চিকিৎসা সেবা নিতে আসা রোগীদেরকে ওয়ার্ডের ফ্লোর, বারান্দা ও বাথরুমের পাশের খালি জায়গায় রাখা হচ্ছে। রোগীদের প্রতি চিকিৎসকদের মারাত্মক অবহেলা, অসহায় রোগীদের পরীক্ষা-নিরীক্ষা ওসমানী হাসপাতালের ল্যাবে না করিয়ে ডাক্তারদের কর্ন্টাককৃত ডায়গনষ্টিক সেন্টারের ¯িøপ দিয়ে তাদের নির্দেশমত বাহির থেকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে আনার জন্য পাঠানো হয়, যা অত্যন্ত ব্যয়বহুল ও দুঃখজনক। পাশাপাশি গেইটে আনসার-দারোয়ানদের অনাকাঙ্খিত চাঁদা আদায় বাণিজ্য। হাসপাতালে আসা অস্বচ্ছল রোগীদেরকে হাসপাতালে থাকা সরকারী ঔষধ না দিয়ে বাহিরের ফার্মেসী থেকে ঔষধ ক্রয় করতে বাধ্য করা হয়। রোগীর স্বজনরা অসহায় ও নিরুপায় হয়ে ডাক্তার, নার্স, ব্রাদার, আয়া, বোয়া ও ওয়ার্ডের  গেইটম্যান এর নির্দেশ এবং হুমকি দামকিতে বাহির থেকে ঔষধ আনতে বাধ্য করা হয়। এমনকি রোগীর কোন স্বজন সামান্য অভিযোগ করলে হাসপাতালের ওয়ার্ডে চিকিৎসা সেবায় কর্তব্যরতরা অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও দুর্ব্যবহার করে। যথাসময়ে কর্তব্যরত চিকিৎসক না পাওয়ায় দূর-দূরান্ত থেকে আগত রোগীদের মারাত্মক ভোগান্তিতে পড়তে হয়। ওসমানী হাসপাতালে দুর্নীতি চরম পর্যায়ে পৌঁছে গেছে। হাসপাতালের ট্রলি ও হুইল চেয়ার ব্যবহার করতে টাকা গুনতে হয় অনেকের, তার কারণ কি? অপারেশন থিয়েটারে রোগীকে ঢুকানোর পরপরই ভেতর থেকে শুধু অপারেশন সম্পৃক্ত ঔষধের একের পর এক ¯িøপ ও প্রয়োজনীয়-অপ্রয়োজনীয় সার্জারী সামগ্রীর নাম লিখে দেওয়া হয়, যা রোগীর স্বজনরা বাধ্য হয়ে আনতে হয়। অপারেশন থিয়েটারের আশেপাশে ফার্মেসীর দালালরা সাধারণ রোগীদের স্বজনদের অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে সর্বশান্ত করে ছাড়ে। আমরা সিলেটবাসী বড় অসহায় হয়ে চিকিৎসাসেবার কাছে জিম্মি হয়ে আছি। সিলেট বিভাগের প্রায় ২ কোটি মানুষের চিকিৎসার প্রধান ভরসাস্থল ওসমানী হাসপাতাল। চিকিৎসা সেবার মান উন্নত করতে হাসপাতাল থেকে জনদুর্ভোগ লাঘব ও দুর্নীতিমুক্ত করতে আপনার সুপরিকল্পিত পদক্ষেপ নিতে আমরা সিলেটবাসী আশা করি।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *