সালেহার গাইনি সমস্যা রেডিওলজি করতে হবে, যেতেই হবে সিলেট শহরে। দাঁতে প্রচন্ড ব্যথা, দাঁত ফেলতে বা চিকিৎসা করাতে যেতে হবে ওসমানী হাসপাতালে অথবা শহরের কোনো ক্লিনিকে। বুকে ব্যথা, অঙ্গে আঘাত। এক্সে করাতে হবে সিলেট শহরে গিয়ে।
প্রসূতি ছটফট করছে, সার্জারী প্রয়োজন, পাঠিয়ে দেওয়া হয় নগরে বা দূরবর্তী কোনো ক্লিনিকে। শুধুমাত্র প্রাথমিক ব্যবস্থাপত্রের জন্যই কি প্রায় ২০ কোটি টাকায় নির্মিত চাকচিক্যময় এ ভবন। এটা কি শুধু দৃশ্যমান অবকাঠামোগত উন্নয়ন ? সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দিকে আঙ্গুল তুলে উপর্যুক্ত প্রশ্ন করলেন স্থানীয় এক নাগরিক।
জনবল ও যন্ত্রপাতি সংকটে ভোগছে সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। বর্ণিল রঙের বহুতল ভবন হলেও তা একেবারে অন্তঃসারশূন্য। সরকারি চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত উপজেলার ২ লক্ষ মানুষ। জনবল ও যান্ত্রিক সংকটের কারণে চিকিৎসা সেবা ব্যহত হচ্ছে প্রতিনিয়ত।
বিগত ১৯৯৭ সালে নির্মিত হয় ৩১ শয্যা বিশিষ্ট সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা হাসপাতাল। দীর্ঘ ২৬ বছরেও পূর্ণতা পায়নি হাসপাতালটির চিকিৎসা ব্যবস্থা। নিয়োগ করা হয়নি বিভিন্ন বিভাগে পর্যাপ্ত জনবল। প্রতিষ্ঠা করা হয়নি উন্নত মানের একটি ল্যাব। রেডিওলজি সচল না থাকায় সামান্য একটা এক্সরে, ইসিজি বা আলট্রাসনোগ্রাম করাতে হলে দীর্ঘপথ পাড়ি দিয়ে রোগী নিয়ে যেতে হয় সিলেট নগরে ।
প্রথমাবস্থায় হাসপাতালে একটি এক্সরে মেশিন দেওয়া হলেও দীর্ঘ ১৬ বছর ধরে মেশিনটি বিকল। হাসপাতালের একজন মাত্র রেডিও গ্রাফারকে প্রেষনে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে ঢাকার আইসিটিতে। ডেন্টাল এমটিকে প্রেষনে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে ঢাকাস্থ ডেন্টাল হাসপাতালে। সেনিটারী ইন্সপেক্টরকে রাজশাহী এবং প্রধান সহকারীকে সিলেট মেট্রাসিটির খাদিমপাড়ায়।
প্রতিষ্ঠার পর থেকে অদ্যাবধি কোন প্রসুতির অস্ত্রোপাচার করা হয়নি এ হাসপাতালে। মাত্র ১ জন পুরুষ চিকিৎসক দিয়ে পরিচালিত হয় গাইনী বিভাগ। হাসপাতালটির জন্য নির্ধারিত পদের প্রায় অর্ধেক পদই শূন্য ১৯ মাস থেকে অ্যাম্বুলেন্স চালকের পদ শূন্য। এতে করে অ্যাম্বুলেন্স সেবা থেকে বঞ্চিত উপজেলার নানা রোগী।
২০১৯ সালে ৩১ শষ্যা থেকে ৫০ শষ্যায় উন্নীত করা হয়েছে হাসপাতালটি। নতুন ভবনের কাজ শেষ হয় ২০২২ সালে। কিন্তু ৫০ শষ্যার কার্যক্রম এখন ও চালু হয়নি।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ কামরুজ্জামান রাসেল জানান,হাসপাতালটির শয্যা সংখ্যার বিপরীতে অর্ধেক পদই শুন্য রয়েছে। এরপর ও আমরা সাধ্যমত চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছি। পুরো জনবল নিয়োগ পেলে সেবার মান আর ও বৃদ্ধি পাবে।
সিলেটের সিভিল সার্জন এস,এম, শাহরিয়ার ওই হাসপাতালে জনবল সংকটের কথা স্বীকার করে বলেন, ৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল চালু করা হলে পর্যাপ্ত জনবল দেওয়া হবে।
শেয়ার করুন