নীলফামারীর ডোমারে দুই সন্তানের জননী প্রেমিকা সুমনা আক্তার(৩০) এর সাথে রাত কাটাতে গিয়ে ধরা পড়েছেন নামে একজন র্যাবের এসআই। বুধবার রাতে উপজেলার আরডিআরএস সংলগ্ন মোজাম্মেল হক ভিলায় এ ঘটনা ঘটে। আটককৃত মহাবীর ডোমার থানার এসআই হিসেবে কর্মরত থাকার পর এখন নায়ারনগঞ্জে র্যাব- ১১তে কর্মরত রয়েছেন বলে আটক মহাবীর জানান। বর্তমানে প্রেমিকা সুমনা আক্তারসহ তাকে ডোমার থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। সুমনা আক্তার দেবীগঞ্জ উপজেলার খুটামারা ইউনিয়নের রাজীব হোসেনের স্ত্রী ও দুই সন্তানের জননী।
অন্যদিকে মহাবীর দিনাজপুর জেলার কাহারোল উপজেলার কেউরাপাড়া রসুলপুর এলাকার কালিমোহন রায়ের ছেলে। সুমনা আক্তারের মামা শুশুর ইসমাইল হোসেন বলেন, সুমনার ছেলে তার দাদার বাসায় ছিল। বুধবার রাত নয়টার পরে আমি সুমনার ছেলেকে তাদের বাড়ীতে পৌছে দেওয়ার জন্য আরডিআরএস সংলগ্ন মোজাম্মেল ভিলায় আসি। দরজা নক করার পর আমার বউমা দরজা খুলে দেয়। এ সময় আমি তার সন্তানকে তাকে দিয়ে চলে যেতে চাইলে সে চা খেয়ে যেতে বলে। এ সময় পাশের রুমে শব্দ হলে আমি সেই রুমে যেতে চাইলে সুমনা আমাকে সেখানে যেতে বাধা দেয়। এক সময় আমি ঐ রুমে গিয়ে দেখি একজন পুরুষ মানুষ সেখানে লুকিয়ে রয়েছে। আমাকে দেখে সে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে আমি তাকে আটক করি। আটকের পর জানা গেল সে ডোমার থানায় এসআই হিসেবে কর্মরত ছিল। এ খবর ছড়িয়ে পরলে হাজার হাজার উৎসুক জনতা তাদের এক নজর দেখার জন্য বাড়ীতে ভিড় জমায়। আটককৃত মহাবীর হিন্দু ঘরের সন্তান ও সুমনা আক্তার মুসলমান। প্রেমিকা সুমনা আক্তার বলেন, ডোমার থানায় আমাদের স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে একটি অভিযোগ ছিল। সেই অভিযোগটি তিনি মিমাংসা করে দেওয়ার পর থেকেই তার সাথে আমার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। প্রেমের সম্পর্ক থেকে সে আমাকে বিয়ের কথা জানালে আমি তাকে বলি তুমি যে হিন্দু আমাকে কিভাবে বিয়ে করবে। সে সময় সে আমাকে জানায় আমি মুসলমান ধর্ম গ্রহন করে তোমাকে বিয়ে করবো। এর পর থেকে আমরা বিভিন্ন জায়গায় ঘুরাঘুরি করি ও আমাদের মধ্যে দৈহিক সম্পর্ক গড়ে উঠে। পুজাঁর ছুটিতে সে বাড়ীতে আসলে বুধবার তার সাথে দেবীগঞ্জে ঘুরার পর রাত নয়টার দিকে আমার বাসায় সে আসে। এর কিছুক্ষন পর আমার মামা শুশুর তাকে বাড়ীতে দেখতে পেয়ে আটক করে। তিনি বলেন, এ ঘটনার পর আমার প্রথম স্বামী আমাকে আর গ্রহন করবেনা। আমি এখন তাকেই বিয়ে করতে চাই।
আটককৃত এসআই মহাবীর প্রেমের সম্পর্কের কথা স্বীকার করে বলেন, বুধবার রাতে সে আমাকে তার বাড়ীতে আসতে বলায় আমি এসেছি। এর আগে আমি কখানো তার বাড়ীতে আসেনি। বাড়ীতে লোক আসায় অন্য ঘরে লুকালেন কেন জানতে চাইলে তিনি জানান, সুমনা আক্তার আমাকে লুকাতে বলায় আমি বারান্দায় এসে লুকায় ছিলাম।
ডোমার সদর ইউপি চেয়ারম্যান মাসুম আহম্মেদ এসআই মহাবীর দুই সন্তানের জননীসহ আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, মেয়ে পরিবারকে আসতে বললেও তারা কেউ আসেননি।
তাছাড়া এখানে মুসলমান-হিন্দুর বিষয় থাকায় আমার পক্ষে সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব হয়নি। তাই থানায় খবর দিলে বৃহস্পতিবার সকালে ডোমার থানা পুলিশ এসে তাদের থানায় নিয়ে যায়। তার স্বামী ওষধ কোম্পানীতে চাকুরী করে। ডোমার থানার অফিসার্স ইনচার্জ মাহমুদ উন নবী এসআই মহাবীরসহ এক নারীকে থানায় নিয়ে আসার বিষয়টি নিশ্চিত করলে এ বিষয়ে তিনি আর কিছু বলতে চাননি।
নীলফামারীর ডোমারে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে গৃহবধূকে ধর্ষণের অভিযোগে মহাবীর ব্যানার্জি নামে পুলিশের এক উপ-পরিদর্শককে (এসআই) কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৬ অক্টোবর) বিকেলে আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। এর আগে বিকেল ৩টার দিকে ডোমার থানায় ধর্ষণ অভিযোগে মামলা করেন উপজেলার চিকনমাটি এলাকার ভুক্তভোগী এক গৃহবধূ। অভিযুক্ত মহাবীর ব্যানার্জি বর্তমানে নারায়ণগঞ্জ জেলা র্যাবে কর্মরত। এর আগে তিনি ডোমার থানায় কর্মরত ছিলেন।
মামলা সূত্রে জানা যায়, দাম্পত্য কলহের জেরে এক বছর আগে স্বামীর বিরুদ্ধে থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছিলেন ওই গৃহবধূ। বিষয়টি তদন্তের দায়িত্ব পান ডোমার থানার এসআই মহাবীর। তদন্তের সুবাদে তাদের মধ্যে যোগাযোগ ও সুসম্পর্ক হয়। ছয় মাস আগে ডোমার থানা থেকে বদলি হলেও মোবাইলে তাদের যোগাযোগ অব্যাহত ছিল।
শেয়ার করুন