ফিলিস্তিনের গাজায় একদিকে বাড়ছে গৃহহীনদের সংখ্যা, অন্যদিকে কমছে বসতি স্থাপনের জমি। ফলে গোরস্থানে থাকতে বাধ্য হচ্ছেন অনেক ফিলিস্তিনি। মানবেতর জীবনযাপন করছেন তারা। জমির অভাবে নতুন করে কোনো কবরস্থানও তৈরি করতে পারছে না কর্তৃপক্ষ। পুরনো কবর ভেঙে সেখানেই দাফন সম্পন্ন করা হচ্ছে। এক পাশে সারি সারি কবর আরেক পাশে কোনো রকমে মাথা গোঁজার ঠাঁই করে চলছে জীবনযাপন। গাজার রাদওয়ান সমাধিক্ষেত্রে দেখা যাবে এমন দৃশ্য।
কবরস্থানে আশ্রয় নেয়া এক নারী বললেন, লাশগুলো যদি কথা বলতে পারতো তাহলে হয়তো আমাদের রাগ করে এখান থেকে সরে যেতে বলতো। ভেবে দেখুন তো, সারি সারি কবরের পাশে আমরা থাকছি, খাচ্ছি, গোসল করছি। কী কঠিন জীবন আমরা পার করছি, সেটা আল্লাহই জানেন।
ইসরায়েলি আগ্রাসনে অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় প্রতিনিয়তই ফিলিস্তিনিদের উচ্ছেদ করে দখল করা হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা। বর্তমানে উপত্যকায় বসবাস করেন ২০ লাখের বেশি ফিলিস্তিনি। কর্তৃপক্ষ বলছে, আগামী ৩০ বছরের মধ্যে এ সংখ্যা হবে দ্বিগুণ। অথচ গাজা শহরে নতুন করে বসতি গড়ার মতো আর কোনো জমি নেই। ফলে বাড়ছে গৃহহীনের সংখ্যা। অন্যদিকে সংকট দেখা দিয়েছে সমাধিক্ষেত্রেরও।
গাজার কবরস্থান বিষয়ক সমন্বয়ক মাজেন আল নাজ্জার বলেন, অনেকগুলো সমাধিক্ষেত্রেই আর কোনো জায়গা নেই নতুন করে কবর দেয়ার। পুরনো কবর ভেঙে সেখানেই নতুন কবর তৈরি করা হচ্ছে। আবার অনেক কবরস্থানে আশ্রয় নিচ্ছে গৃহহীন মানুষ। সব মিলিয়ে খুবই কঠিন পরিস্থিতিতে রয়েছেন তারা।
গৃহহীনদের বেশিরভাগই আশ্রয় নেন কবরস্থানগুলোতে। অন্যদিকে আবাসনের জন্যও জায়গা প্রয়োজন। তাই বাধ্য হয়ে এরই মধ্যে ২৪টি সমাধিক্ষেত্র বন্ধ ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ। কবরস্থানগুলোর রক্ষকরা বলছেন, কর্তৃপক্ষ করবস্থান বন্ধ করে দিচ্ছে, কারণ গৃহহীনরা এখানে আশ্রয় নিতে আসে। আমরা অনেক চেষ্টা করেও তাদের থামাতে পারি না।
এ অবস্থায়, নতুন করে আবাসনের পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে গাজা কর্তৃপক্ষ। এতে সাড়ে ৭ লাখ গাজাবাসী মাথা গোঁজার ঠাঁই পাবেন বলে আশাবাদী তারা।