অবহেলিত চা শ্রমিকদের দাবি মেনে নেয়া হোক

সিলেট

কামরুল ইসলামঃ জকিগঞ্জ উপজেলা প্রতিনিধি-

দেশে বিষয় ফলাও ভাবে সামনে না আসলে আমরা জানতেই পারি না। এই যে চা শ্রমিকদের বিষয় টা যখন সামনে আসছে মনে হলো তারা সেই আদিকালের মানুষদের মতো বসবাস করছে। বিশেষ একটা সিন্ডিকেটের মুঠোয় তাদের জীবন জীবীকা সীমাবদ্ধ, তাদের জীবনে নেই কোনো শখ আল্লাদ কেবল রোদে পোড়ে বৃষ্টিতে ভিজে মাত্র ১২০টা টাকা নিয়ে আপনাদের শুধু দিয়েই যাচ্ছে। চিন্তা করেন এই সময়ে কি হয় এই ১২০ টাকায়, না ভাত না তরিতরকারি পোষাক আশাক তো অনেক দূরে এসব কথা চিন্তা করলে গা শিহরে ওঠে। তাদের এই শ্রমের টাকা দিয়ে আপনি/আপনারা বউ বাচ্চা নিয়ে রাজার হালে দেশ বিদেশ ঘুরে বেড়াচ্ছেন। তাদেরও তো একটা পরিবার আছে,ছেলে-মেয়েদের চাহিদা রয়েছে শুধু আপনাদেরটাই চিন্তা করে গেলেন! আপনি এখন ২লিটার কিছু ভালো মানের ঠান্ডা কিনেন ১০০/১১০ টাকা পরবে সেখানে সারাদিন কামলা খেটে তাদের মজুরি মাত্র ১২০ টাকা। ভাবতে পারেন এরপর ও এই বৈষম্যের শিকার হওয়া মানুষগুলো কতকাল এভাবে মুখ বুঝে সহ্য করে দিন পার করছে,মুখ ফুটে কিছু বলে নাই কারণ তাদের পিছুটান রয়েছে কারণ তাদের রুটি রুজি যে ও-ই জায়গায় ই সীমাবদ্ধ। এদেশে প্রতিদিন কত-শত আন্দোলন হয়, কোন অভিনেতা অভেনেত্রী কি খাচ্ছেন, কোথায় যাচ্ছেন তাদের পিছনে পড়ে আছে। কিন্তু এই যৌক্তিক একটা আন্দোলনে মিডিয়ায় নেই কোনো তেমন সাড়া কারণ তারা তো সেলিব্রেটি নয় অথচ আমার কিংবা আমাদের দেশের জন্য তারাই সবচেয়ে বড় বাস্তবতার সেলিব্রেটি কারণ তাদের এই ঘাম শ্রমের বিনিময়ে চা শিল্প থেকে আমরা কোটি কোটি টাকা আয় করি। আমার কথা হলো তাহলে আমরা কেনো পারব না তাদের জীবন-জীবিকার মান উন্নত করতে? কেনো পারবা না তাদের এই যৌক্তিক একটা আন্দোলনে একাত্বতা পোষন করে তাদের দাবিটা আদায় করতে। তাদের চাওয়াটাও বেশি না মাত্র ৩০০টাকা এটাও তাদের জন্য অবিচার এই সময়ে ৫০০ টাকা মজুরী দিলেও খেয়ে বেচে থাকা দুষ্কর তারপরও তাদের চাহিদা এখানেই সীমাবদ্ধ। দল মত নির্বিশেষে একজন মানুষ হিসাবে আমরা এই অবহেলিত বঞ্চনার শিকার হওয়া মানুষগুলার পাশে দাড়ানো আমাদের দায়ীত্ব এবং কর্তব্য। আমাদের মাতৃভূমি এগিয়ে যাচ্ছে ইনশাআল্লাহ আরও যাবে কিন্তু শুধু দেশ এগিয়ে চলবে না এ দেশের প্রতিটা নাগরিকদের যে ৫টি মৌলিক অধিকার তা বাস্তবায়নে কাজ করতে হবে। চা-শ্রমিকদের প্রতি এই অমানবিক বৈষম্য দূর হোক, তাদের এই যৌক্তিক দাবি মেনে নিয়ে তাদের কে কাজে ফেরানো হোক।
পরিশেষে হোসেন মাহমুদ সাগরের কবিতার লাইন দিয়ে শেষ করবো
কলম দিয়েছি তোমায়,অসহায়ের মুখে
ফোটাতে সুখের হাসি।
সাহায্য সহযোগিতার পরিবর্তে,
না পড়াতে গলায় ফাসি।
কলম দিয়েছি তোমায়,
রেখো কিন্তু এর মান।
মানুষের ভেতর শ্রেণীবিভাগ করোনা, তারা যে সকলেই সমান।

লেখকঃ মিজান আহমদ
সাবেক সাধারণ সম্পাদক
৩নং কাজলসার ইউনিয়ন ছাত্রলীগ।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *