অবিলম্বে চুক্তি সম্পাদন করে চা শ্রমিকদের ন্যুনতম মজুরির দাবি

জাতীয়

অবিলম্বে ২০২১-২২ সালের চুক্তি সম্পাদন করে চা শ্রমিকদের ন্যুনতম মজুরি ৩০০ টাকা করার আন্দোলনের দাবি মেনে নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন সিলেটের প্রগতিশীল শ্রমিক সংগঠন সমূহের নেতৃবৃন্দ।
শনিবার (১৩ আগস্ট) সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট সিলেট জেলা আহবায়ক আবু জাফর, জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশন জেলা সভাপতি সিকান্দর আলী, জাতীয় শ্রমিক জোট বাংলাদেশ জেলা আহবায়ক কে. এ. কিবরিয়া, ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের সিলেট জেলা সংগঠক খায়রুল হাছান,  জাতীয় শ্রমিক জোট বাংলাদেশ মহানগর আহবায়ক গিয়াস আহমদ, বাংলাদেশ শ্রমিক কর্মচারী ফেডারেশন সিলেট জেলার আহবায়ক মোখলেসুর রহমান, গণতান্ত্রিক শ্রমিক আন্দোলন  জেলা আহবায়ক মহিতোষ দেব মলয়  সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট সিলেট জেলা যুগ্ম আহবায়ক প্রণব জ্যোতি পাল, জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশন জেলা সাধারণ সম্পাদক কাজী আলফাজ হোসেন এক বিবৃতিতে অবিলম্বে ২০২১-২২ সালের চুক্তি সম্পাদন করে চা শ্রমিকদের  ন্যুনতম মজুরি ৩০০ টাকা করার আন্দোলনের দাবি মেনে নেওয়ার দাবি জানান।
বিবৃতিতেনেতৃবৃন্দ বলেন, দুই বছর অন্তর  চা শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধির জন্য মালিক, শ্রমিক ইউনিয়ন ও সরকারের  মধ্যে ত্রিপক্ষীয় চুক্তি সম্পাদন হয়।এই চুক্তি নিয়ে সব সময় মালিকপক্ষ তালবাহানা করে। দৈনিক মজুরি ১০২ টাকা থাকাকালীন সময়ে প্রায় তিন বছর প্রায় তিন বছরের বেশি সময় অতিক্রান্ত হবার পর অনেক ছলচাতুরির মাধ্যমে মজুরি মাত্র ১২০ টাকা নির্ধারণ করা হয়।সেই ২০১৯-২০ সালের চুক্তির মেয়াদও শেষ হয়ে ১৭ মাস আগে। সেই ধারাবাহিকতায় ২০২১-২২ এর চুক্তির কোন উদ্যোগ নেইনি মালিকপক্ষ। চুক্তি দেরিতে হলে স্থায়ী শ্রমিক এরিয়ার বিল পেলেও অস্থায়ী শ্রমিক তা পায় না।২০২১ সালে ন্যূনতম মজুরি বোর্ড কর্তৃক গেজেট করে এই মেয়াদসীমা ৩ বছর করার প্রস্তাব করা হয়েছিল অগণতান্ত্রিকভাবেই।আমরা বাংলাদেশ চা শ্রমিক ফেডারেশনকে সাথে নিয়ে  তার প্রতিবাদ করেছিলাম।ফলে তা বাস্তবায়ন হয়নি সেই সময়।এভাবে সময় ক্ষেপন করে শ্রমিক ঠকানো হয়।সেই ক্ষোভ থেকেই আন্দোলনে নামতে বাধ্য হয়েছে চা শ্রমিকরা।
চা শ্রমিকরা দৈনিক মজুরি দাবি করছে ৩০০ টাকা।বর্তমানে জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধিতে সমস্ত নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম শ্রমিকদের জীবন দুর্বিষহ করে তুলেছে।সব সেক্টরের শ্রমিকদের অবস্থা খুবই শোচনীয়,চা বাগানের ক্ষেত্রে অবস্থা আরো অমানবিক, নাজুক।বর্তমান বাজারের সাথে চা শ্রমিকদের এই মজুরি গ্রহণযোগ্য তো নয়ই,বরং অযৌক্তিক ও অন্যায়। শ্রমিকদের দাবি করা ৩০০ টাকা সমর্থন করে আমরা আমাদের সংগঠন এর পক্ষ থেকে তা ৫০০ টাকা করার দাবি জানাচ্চি।কারন আমরা বিভিন্ন সময় বলেছি,ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণ করার ক্ষেত্রে  শ্রমিক পরিবারের নুন্যতম শারীরিক চাহিদা পূরন, জীবনযাত্রার খরচ, চিকিৎসা, যাতায়াত, শিক্ষা, পোশাকসহ আনুসাঙ্গিক খরচ ইত্যাদি বিচারবিবেচনা করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুষ্টি ও খাদ্য বিজ্ঞান ইনস্টিউট হিসেব করে দেখিয়েছেন ৫ সদস্যের একটি পরিবারের নুন্যতম খাবারের জন্য ৬২৫ টাকা দরকার হয়,যা বর্তমান জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির কারনে আরো বেড়েছে।চা বাগানের সার্বিক দিক বিবেচনা করলে একটি পরিবার ৫০০ টাকা দৈনিক মজুরি ছাড়া নূন্যতম মানবিক জীবন যাপন করতে পারে না। তাই সেই প্রেক্ষাপটে চা বর্তমান ৩০০ টাকা দৈনিক মজুরি করার আন্দোলন শতভাগ যৌক্তিক। কিন্তু মালিকপক্ষ বিভিন্ন গোজামিল ও ফাঁকির হিসাব দিয়ে তা প্রত্যাখ্যান করছে।চা শ্রমিকদের তাদের এই আন্দোলন আপোষহীন মানসিকতায় শক্তিশালী করার আহবান জানাই এবং তাদের এই দাবীর প্রতি সমর্থন জানিয়ে অবিলম্বে ২০২১-২০২২ সালের চুক্তি সম্পাদন করে চা শ্রমিকদের আন্দোলনের দাবী মেনে নেওয়ার  জন্য সরকারকে আহ্বান জানাচ্ছি।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *