আগুনে পুড়ছে সুন্দরবন

জাতীয়

তীব্র তাপদাহের মধ্যে বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দরবনের প্রায় দুই কিলোমিটার এলাকা জুড়ে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে।

শনিবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে পূর্ব সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের আমুরবুনিয়া টহল ফাঁড়ি সংলগ্ন লতিফের ছিলা নামক এলাকায় এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।

শুরুতে বন বিভাগ ও স্থানীয়রা আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করলেও পরে মোরেলগঞ্জ, শরণখোলা ও মোংলা ফায়ার সার্ভিসের ৩টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে ঘটনাস্থলে পৌঁছে। তবে তারা এখনও আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করতে পারেনি।

এর কারণ হিসেবে ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ফায়ার ফাইটিংয়ের মেশিন ও যন্ত্রপাতি নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছানো যায়নি। তাছাড়া যেখানে আগুন লেগেছে, সেখান থেকে পানির দূরত্ব প্রায় দুই কিলোমিটার।

রোববার সকালে আগুন নেভানোর কাজ শুরু করা হবে বলে জানিয়েছেন ফায়ার সার্ভিসের মোংলার স্টেশন কর্মকর্তা মোহাম্মদ কায়মুজ্জামান।

আগুনের বর্তমান পরিস্থিতি কেমন সে বিষয়ে মোহাম্মদ কায়মুজ্জামান বলেন, ‘বনের ভেতর প্রচুর পরিমাণ গাছের শুকনো পাতা রয়েছে। যার কারণে আগুনটা বাতাসে বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বর্তমানে ওই এলাকায় কালো ধোঁয়া দেখা যাচ্ছে। তবে আগুন নতুন এলাকায় ছড়িয়ে যাতে না পড়ে সে বিষয়ে খেয়াল রাখা হচ্ছে।’

এদিকে বনরক্ষী ও স্থানীয়রা জানিয়েছেন, লতিফের ছিলা এলাকার অনেক জায়গা জুড়ে আগুন লেগেছে। বনের মাটিতে পড়ে থাকা বিভিন্ন গাছের পাতার স্তুপের মধ্যে আগুন জ্বলছে। অন্তত ৫০টি জায়গায় আগুন জ্বলছে বলে দাবি তাদের।

আগুন নেভাতে যাওয়া সিপিজি সদস্য মণিময় মণ্ডল বলেন, ‘বনভূমির বিভিন্ন স্থানে এখনও আগুন জ্বলছে। প্রচণ্ড তাপে ভেতরে প্রবেশ করা সম্ভব হয়নি। কাছাকাছি কয়েকটি জায়গার আগুন আমরা নেভাতে পারলেও এখনও আগুন নিয়ন্ত্রণে আসেনি।’

তিনি বলেন, ‘আগুন যাতে নতুন এলাকায় ছড়িয়ে না পড়ে সেজন্য সন্ধ্যার ভিতর বন বিভাগ ও ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের সঙ্গে আমরা শুকনো গাছ অপসারণ করেছি। বিভিন্ন স্থানে ছোট ড্রেন কেটে রেখেছি। গহীন বনে অনেক হিংস্র প্রাণী আছে এবং একই সঙ্গে সন্ধ্যা হয়ে যাওয়ায় আগুন নেভানোর কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়েছে।’

সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের বিভাগীয় কর্মকর্তা (ডিএফও) কাজী মোহাম্মদ নূরুল করিম বলেন, ‘কাল সকাল থেকে আবারও আগুন নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম শুরু হবে।’

বনের মধ্যে কীভাবে আগুন লেগেছে বা কী পরিমাণ জায়গায় আগুন লেগেছে- এমন প্রশ্নে ডিএফও বলেন, ‘আগুন লাগার কারণ এখন পর্যন্ত আমরা জানতে পারিনি। কী পরিমাণ জায়গা জুড়ে আসলে আগুনের ব্যাপ্তি তাও জানা যায়নি।’

তিনি জানান, আগুনের পরিমাণ, ক্ষয়ক্ষতি ও আগুন লাগার কারণ সম্পর্কে জানতে চাঁদপাই রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক রানা দেবকে প্রধান করে ৩ সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হচ্ছে। এই কমিটিকে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে রিপোর্ট দিতে বলা হবে এবং তাদের রিপোর্ট পেলে জানা যাবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *