আজ বিশ্ব শিশুশ্রম প্রতিরোধ দিবস

জাতীয়

স্বীকৃতি বিশ্বাস, যশোরঃ

আজ ১২ জুন ‘বিশ্ব শিশুশ্রম প্রতিরোধ দিবস’। দিবসটি উপলক্ষে আজ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন শিশু অধিকার প্রতিষ্ঠা ও রক্ষাকল্পে ঝুঁকিপূর্ণ শিশুশ্রম বন্ধে সভা,সমাবেশ করে টেবিলে ঝড় তুলে ফেলেছেন।

১৯৮৯ সালের ২০ নভেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে ‘জাতিসংঘ শিশু অধিকার সনদ’ অনুমোদিত হলে ১৯৯২ সালে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) শিশুশ্রম বন্ধ করতে এক কর্মসূচি হাতে নেয় এবং ২০০২ সালের ১২ জুন থেকে আন্তর্জাতিক শিশুশ্রম সংস্থা (আইএলও) বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহনের মাধ্যমে প্রতিবছর দিবসটি ‘বিশ্ব শিশুশ্রম প্রতিরোধ দিবস’ হিসেবে পালন করে।
আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা আইএলও’র সর্বশেষ এক পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বিশ্বের প্রতি ছয় জন শিশুর মধ্যে একজন শ্রমিক এবং প্রতি তিন শিশু শ্রমিকের মধ্যে দুইজনই অর্থবান পরিবারে গৃহকর্মের সাথে যুক্ত এবং এসকল শিশুর সুরক্ষার কোনো ব্যবস্থাই নেওয়া হয় না।

বিভিন্ন এনজিও শিশুদের কথা বলে বিদেশ থেকে যে ফান্ড কালেকশান করে সে গুলোর কতটুকু শিশুদের জন্য ব্যয় হয় ? তার সঠিক হিসাব যেমন সরকারি কোন প্রতিষ্ঠানের কাছে নেই তেমনি দাতা সংস্থার কাছেও নেই।
আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) বিশ্ব শিশুশ্রম বিরোধী দিবস উদযাপন উপলক্ষে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলেছে, বেশীরভাগ শিশুই এমন অবস্থায় কাজ করছে যা ‘ক্রীতদাসের কাছাকাছি’। এতে বলা হয়েছে, কর্মরত বেশিরভাগ শিশু শ্রমিকের বয়সই ৫ থেকে ১৪ বছরের মধ্যে এবং এদের ৭১% শতাংশ মেয়ে শিশু। এদের অধিকাংশই শিক্ষার সুযোগ থেকে বঞ্চিত। এ সকল শিশু শারিরীক এবং যৌন হিংসতার ঝুঁকির মুখে রয়েছে। শিশুশ্রম বেশীর ভাগ ক্ষেত্রেই অপ্রকাশিত থাকে উল্লেখ করে আইএলও এ ব্যাপারে নতুন আন্তর্জাতিক বিধি-বিধান আহ্বান করেছে। শিশু শ্রমিকরা বেশির ভাগই ঘরে কাজ করায় তাদের কাজের পরিবেশ নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন। “শিশুরা কাজ করে কিন্তু শ্রমিক হিসেবে তাদের কে গণ্য করা হয় না এবং পারিবারিক পরিবেশে থাকা সত্বেও তাদের প্রতি পরিবারের সদস্যের মতো আচরণ করা হয় না।
‘শিশুশ্রম প্রতিরোধ দিবস’এ আমাদের দেশের সরকারের কাছে দাবী রাখি – ‘রাষ্ট্র’ দায়িত্ব নিক সমস্ত অপ্রাপ্তবয়স্ক নাগরিকের খাদ্য, বস্ত্র, বাসাস্থান শিক্ষা ও চিকিৎসার । পুঁজিপতির ঋণ মকুব না করে, অপ্রয়োজনীয় উন্নয়ন খাতে খরচ বন্ধ করে, জনপ্রতিনিধির ব্যয়বরাদ্দ কমিয়ে এবং সমরাস্ত্র কেনার প্রতিযোগিতা বন্ধ করে সরকারী কোষাগার থেকে অনায়াসে এ অর্থের যোগান দেওয়া যেতে পারে।
ভবিষ্যতের সুনাগরিক দেশের শ্রেষ্ঠ সম্পদ। আর এই সুনাগরিক গড়ে তুলতে হলে আর্থ-সামাজিক অবস্থার পরিবর্তন করার সাথে সাথে আইন প্রণয়নের মাধ্যমে সমাজের মৌলিক সমস্যার সমাধান একান্ত প্রয়োজন।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *