আন্তঃনগর ট্রেনে যুক্ত হলো লাগেজ ভ্যান

সিলেট

বিশ্বের অনেক দেশই রেলখাত থেকে আয় করলেও বাংলাদেশ সে পথে নেই। ট্রেনে যাত্রীদের জায়গা দিতে না পারলেও প্রতি বছরই কোটি কোটি টাকা লোকসান গুণতে হয় রেলওয়েকে। এবার সেই লোকসানে ডুবে থাকা রেলওয়েকে লাভে তুলতে বাংলাদেশ রেলওয়ের যাত্রীবাহী আন্তঃনগর ট্রেনের সঙ্গে সংযোজন করা হলো লাগেজ ভ্যান। এর মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন জায়গায় প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর উৎপাদিত কৃষিপণ্য ও অন্যান্য মালামাল রাজধানী শহর ঢাকায় পরিবহন করা যাবে।

রোববার (২৪ সেপ্টেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে দেশের প্রধান রেলওয়ে স্টেশন কমলাপুরে লাগেজ ভ্যান সংযোজনের উদ্বোধন করেন রেলপথমন্ত্রী মো. নূরুল ইসলাম সুজন।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে রেলমন্ত্রী বলেছেন, আমরা বিভিন্ন পর্যায়ে কথা বলেছি। আড়তদার ও বড় বড় ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলেছি। এটা মাত্রই শুরু করলাম। ভবিষ্যতে এটাকে বহুমুখী করার জন্য অন্যান্য পরিবহনের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় আসতে হবে। আমরা এজেন্ট নিয়োগ দেওয়ার চেষ্টা করছি।

তিনি আরও বলেন, রেল নিয়ে কোনো ব্যবসা করতে চাই না। আমরা ফেসিলিটি বাড়াতে চাই। আপাতত ১৬টি ট্রেনে একটি করে লাগেজ ভ্যান দিচ্ছি। চাহিদার ওপর নির্ভর করে আমরা লাগেজ ভ্যান বাড়াবো।

রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে রেলওয়েতে ৪১টি মিটারগেজ ও ১০টি ব্রডগেজ লাগেজ ভ্যান আছে। সেগুলোর বেশিরভাগের অর্থনৈতিক আয়ুষ্কাল পেরিয়ে গেছে অনেক আগেই। ফলে, পণ্য পরিবহন থেকে যথেষ্ট আয় করতে পারছে না রেলওয়ে। এখন এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) অর্থায়নে রেলওয়ের রোলিং স্টক অপারেশন উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় নতুন করে অত্যাধুনিক ৭৫টি মিটারগেজ ও ৫০টি ব্রডগেজ লাগেজ ভ্যান সংযোজনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।

লাগেজ ভ্যান সংযোজনের মোট চুক্তি মূল্য ৩৫৮ কোটি ৩৯ লাখ টাকা। ৭৫টি মিটারগেজ লাগেজ ভ্যানের চুক্তি মূল্য ১৮৩ কোটি ২৪ লাখ এবং ৫০টি ব্রডগেজ লাগেজ ভ্যানের চুক্তি মূল্য ১৭৫ কোটি ১৫ লাখ টাকা।

ইতোমধ্যে দুটি চালানে ৫০টি মিটারগেজ লাগেজ ভ্যান চীন থেকে বাংলাদেশে পৌঁছেছে। কমিশনিং ও পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে প্রথম দফায় আজ ১৬টি লাগেজ ভ্যান পরিচালনার উদ্ভোধন হলো। অবশিষ্ট ২৫টি মিটারগেজ লাগেজ ভ্যান এ বছরের অক্টোবর মাসে এবং পরবর্তী ৫০টি ব্রডগেজ লাগেজ ভ্যান ডিসেম্বর মাসের মধ্যে পাওয়া যাবে।

এর আগে সরকার ২০১৮ সালের ২৬ জুন পণ্য পরিবহন ও যাত্রীসেবার মানোন্নয়নে রোলিং বহরে স্টক যুক্ত করার লক্ষ্যে ৩ হাজার ৬০২ কোটি ৭ লাখ টাকা ব্যয়ে বাংলাদেশ রেলওয়ের রোলিং স্টক অপারেশন উন্নয়ন প্রকল্পের (রোলিং স্টক সংগ্রহ) অনুমোদন দেয়। এর মধ্যে প্রকল্প সাহায্য হিসেবে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) ২ হাজার ৮৩৯ কোটি ৫৪ লাখ টাকা ঋণ দেবে। প্রকল্পের মেয়াদকাল ২০২১ সালের জুন পর্যন্ত হলেও পরে তা বাড়িয়ে ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত করা হয়।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *