আমি আওয়ামী লীগের দালাল: ব্যারিস্টার সুমন

জাতীয়

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন বলেছেন, ‘অনেকে আমাকে বলেন, আমি নাকি সরকারের দালালি করি। স্পষ্ট করে বলি, আমি ২০০১ সাল থেকে ছাত্রলীগ-আওয়ামী লীগ করা লোক। সবচেয়ে খারাপ সময়ে আমি আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগ করেছি।’

তিনি বলেন, ‘আপনারা নিশ্চিত ধরে রাখতে পারেন, আমি আওয়ামী লীগের দালাল, শেখ হাসিনা আমার নেতা, আর আদর্শ হচ্ছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। এটি স্পষ্ট, এর বাইরে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই আমার। আমাকে যারা এটি মনে করেন, তাদের গালাগালি করার কোনো সুযোগ নাই।’

কলকাতা থেকে ফেসবুক লাইভে এসব কথা বলেন হবিগঞ্জের ছেলে ব্যারিস্টার সুমন। টিপকাণ্ডে চাকরি হারানো পুলিশ কনস্টেবল নাজমুল তারেককে সহযোগিতা করতে চাননি- এমন অভিযোগ নিয়ে বিদেশে অবস্থানরত সাংবাদিক ইলিয়াসের একটি ভিডিওর জবাবে লাইভে আসেন তিনি।

ফেনীর সোনাগাজীর মাদরাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফী হত্যার ঘটনায় দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা নির্দোষ- এমন দাবি করে সাংবাদিক ইলিয়াস হোসেন সম্প্রতি ইউটিউবে একটি ভিডিও আপলোড করেন। তাতে ওসি মোয়াজ্জেম ও টিপকাণ্ডে চাকরিচ্যুত পুলিশ কনস্টেবল নাজমুল তারেকের বিষয়ে জড়ানো হয় সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমনকে।

ব্যারিস্টার সুমন বলেন, ‘টিপকাণ্ডে কনস্টেবল সাহেব আমার কাছে তিনবার এসেছেন। প্রথমবার যখন এসেছেন, আমি তাকে বলেছি বিনা পয়সায় সাহায্য করব। যদি কোনো কারণে আপনার পানিশমেন্ট (সাজা) বেশি হয়ে থাকে আইজিপি বরাবর একটি আবেদন করুন। তিনি আমার এ উপদেশের কারণে আবেদন করেছেন। তিনি আবার আসেন। আমি বলি, আপনার ওপর মানুষের সহানুভূতি আছে, আপনি চেষ্টা করে দেখুন, চাকরিটা ফেরত  পেতে পারেন। আমি আপনাকে একটা রুল নিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করব। কিন্তু তৃতীয় বার তিনি যখন আমার কাছে বউ-বাচ্চাকে নিয়ে আসেন, আমি তাকে বলি চাকরি গেছে আপনার। আপনি কেন আপনার বউ-বাচ্চাকে সামনে নিয়ে এসেছেন? এটা তো শরিয়ত বিরোধী। আপনি একজন হুজুর মানুষ। এভাবে দ্বারে দ্বারে ঘুরতে পারেন না। আমি বলেছি, আপনি যদি আরেকদিন বউ-বাচ্চা নিয়ে আসেন, তাহলে আপনি আর আমার কাছে আসবেন না।’

সুপ্রিম কোর্টের এ আইনজীবী বলেন, ‘ওই ভিডিওটি পুরোটা না দেখিয়ে, অর্ধেক অর্ধেক করে ভিডিও করে যারা মানুষকে দেখায়, তাদের প্রতি আমি বলব আপনাদের জন্যও এই ধরনের জিনিসই অপেক্ষা করছে। আরেকটি বিষয় হলো, তিনি (কনস্টেবল নাজমুল) বার বার আমার পিএসের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন। আমি নাকি তার সঙ্গে দেখা করিনি। শেষ বার তিনি আমাকে চিটার বলার চেষ্টা করেছেন। এইভাবেই যদি হয়, তাহলে ভিডিও এলো কীভাবে?’

সুমন বলেন, ‘আপনারা জানেন তিনি কী অপরাধ করেছেন, ঠিক ওসি মোয়াজ্জেম যে রকমের অপরাধ করেছিলেন। আমি ইচ্ছা করলে তার (কনস্টেবল নাজমুল) বিরুদ্ধে মামলা দিতে পারি। ওসি মোয়াজ্জেমের মতো নাজমুলের ৮ বছরের সাজাও হতে পারে। কিন্তু আমি এটা করব না। কারণ এমন ছোটলোকদের বিরুদ্ধে কাজ করি না। আমি সমাজের বড় বড় লোকের বিরুদ্ধে, যারা সমাজের বড় বড় ক্ষতি করে তাদের বিরুদ্ধে কথা বলি।’

বিদেশে অবস্থানরত সাংবাদিক ইলিয়াস হোসেনের ওই ভিডিওতে বলা হয়, ব্যারিস্টার সুমনের কাছে বার বার গিয়েও কোনো সহযোগিতা পাননি টিপকাণ্ডে চাকরিচ্যুত হওয়া পুলিশ কনস্টেবল নাজমুল হোসেন।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *