কুলাউড়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে জনপ্রিয়তায় এগিয়ে রেনু

মৌলভীবাজার

৮ মে অনুষ্ঠিত কুলাউড়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদের জন্য লড়ছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের শীর্ষ তিন নেতা। তারা হলেন- উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি রফিকুল ইসলাম রেনু, সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আ স ম কামরুল ইসলাম, সহ-সভাপতি কামাল হাসান। তাদের মধ্যে রফিকুল ইসলাম রেনু (আনারস), কামরুল ইসলাম (কাপ-পিরিচ) ও সহ-সভাপতি কামাল হাসান (মোটরসাইকেল) প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন। আওয়ামীলীগের তিন প্রার্থী থাকলেও জনপ্রিয়তায় বেশ এগিয়ে রয়েছেন রফিকুল ইসলাম রেনু।

এছাড়া উপজেলা আল ইসলাহ’র সাধারণ সম্পাদক বর্তমান (ভারপ্রাপ্ত) চেয়ারম্যান ফজলুল হক খান সাহেদ প্রার্থী হয়েছেন দোয়াত-কলম প্রতীকে। প্রতীক পেয়ে চলছে প্রার্থীদের ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা। গণসংযোগে ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রার্থীরা। দিনরাত তারা ভোটারদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোট কামনা করছেন। আর ভোটাররাও তাদের পছন্দের প্রার্থীদের ভালো-মন্দসহ এলাকার নানা দাবি নিয়ে আলোচনা করছেন। এবার উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ৪ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্ধিতায় নামলেও কাপ পিরিচ ও আনারস প্রতীকের মধ্যেই মূল লড়াই হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে ভোটাররা মনে করছেন।
এদিকে আওয়ামীলীগের সভাপতি ও সম্পাদক প্রার্থী হওয়ায় দলীয় নেতাকর্মীরা দ্বিধাবিভক্ত হয়েছেন। কর্মীদের টানতে প্রার্থীরা নানামুখী তৎপরতা চালাচ্ছেন। দলের সভাপতি রফিকুল ইসলাম রেনুর পক্ষে ভোটের মাঠে প্রচারণায় অংশ নিচ্ছেন , কুলাউড়া পৌর মেয়র সিপার উদ্দিন আহমদ, জেলা পরিষদ সদস্য বদরুল আলম সিদ্দিকী নানু, ইউপি চেয়ারম্যান ওয়াদুদ বক্স, আকবর আলী সোহাগ, আব্দুর রব মাহাবুবসহ দলের আংশিক নেতৃবৃন্দ। অন্যদিকে সাধারণ সম্পাদক কামরুল ইসলামের পক্ষে ভোটের মাঠে প্রচারণা চালাতে দেখা গেছে তাঁর বড়ভাই ও প্রধানমন্ত্রীর প্রটোকল অফিসার-২ আবু জাফর রাজু, ইউপি চেয়ারম্যান সৈয়দ একেএম নজরুল ইসলাম, মুহিবুল ইসলাম আজাদ, মোছাদ্দিক আহমদ নোমানসহ দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ। চা-বাগান অধ্যুষিত কুলাউড়া উপজেলায় ভোটারদের কেন্দ্রে টানতে প্রার্থীরা নানা কৌশল অবলম্বন করছেন। চা-শ্রমিকদের প্রায় ৪০ হাজারের অধিক ভোট প্রার্থীর জয়-পরাজয়ে ব্যবধান করে দিতে পারে।

গত তিনদিন সরেজমিনে সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত কুলাউড়া পৌরশহর, কুলাউড়া সদর ইউনিয়নের জনতাবাজার, গাজীপুর চা-বাগান, ভূকশিমইল ইউনিয়নের নবাবগঞ্জ ও রসুলগঞ্জ বাজার, ব্রাহ্মণবাজার ইউনিয়ন, বরমচাল ইউনিয়নের ফুলেরতল বাজার, ভাটেরা ইউনিয়নের স্টেশন বাজার, পৃথিমপাশা ইউনিয়নের রবিরবাজার, টিলাগাঁও ইউনিয়ন, হাজীপুর ইউনিয়নের কটারকোনা, পাইকপাড়া, শরীফপুর ইউনিয়নের নছিরগঞ্জ বাজারসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, বিভিন্ন সড়কে প্রতিদ্বন্ধি প্রার্থীদের পোস্টার ঝুলছে। কোথাও স্থাপন করা হয়েছে নির্বাচনী কার্যালয়। প্রার্থীরা তাদের কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে এলাকায় এলাকায় গিয়ে উঠোন বৈঠক ও পথসভা করে উন্নয়নের নানা প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন আর ভোট কামনা করছেন। কোনো কোনো প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকেরা বাজারের দোকানে-দোকানে প্রচারপত্র বিলি করছেন। কোথাও চায়ের দোকানে বসে স্থানীয় লোকজন প্রার্থীদের নিয়ে নানা আলোচনা করছেন।
ভোটারদের মতে, চেয়ারম্যান পদে ৪ প্রার্থীকে নিয়ে চলছে নানা বিশ্লেষণ। তবে শালিস ব্যক্তিত্ব হিসাবে রেনু খুবই জনপ্রিয়। কারণ তার মাধ্যমে  শিক্ষা, যোগাযোগ, স্বাস্থ্যসহ বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন ছাড়াও অসহায়-দুঃস্থ মানুষের চিকিৎসার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে অনেক অর্থ সহায়তা ব্যবস্থা করে দিয়েছেন।

ফজলুল হক খান সাহেদ বলেন, দীর্ঘ ১০ বছর সততা ও নিষ্ঠার সাথে উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেছি। দল, মত নির্বিশেষে ভোটাররা আমাকে নির্বাচিত করবেন বলে আমি আশাবাদী। কামরুল ইসলাম বলেন, জয়ের ব্যাপারে আমি শতভাগ আশাবাদী।

নির্বাচনে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে বর্তমান মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ফাতেহা ফেরদৌস চৌধুরী পপি (হাঁস) ও সাবেক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নেহার বেগম (ফুটবল) প্রতীক পেয়েছেন। এছাড়াও পুরুষ ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৫ প্রার্থীর মধ্যে উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক প্রভাষক ময়নুল ইসলাম সবুজ (টিউবওয়েল), চা শ্রমিক নেতা রাজকুমার কালোয়ার রাজু (চশমা), সাইফুল ইসলাম কুতুব (তালা), তালামীয নেতা আফজাল হোসেন সাজু (বই) ও আদিবাসী সন্তান পূরণ উরাং (টিয়া পাখি) প্রতীক প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন।
উল্লেখ্য, কুলাউড়া আসনে ১৩টি ইউনিয়ন ও ১ পৌরসভায় মোট ভোটার রয়েছেন ২ লাখ ৯০ হাজার ৬৪৮ জন। মোট ভোট কেন্দ্র ১০৩।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *