স্টাফ রিপোর্টার : সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে। রোডম্যাপও চুড়ান্ত করেছে ইসি। নির্বাচন ২১ জুন। সময় খুব একটা নেই। মাঝখানে শুধু মে মাস। কিন্তু অদ্ভুত নিরবতা বিএনপি নেতা ও বর্তমান মেয়র আরফিুল হক চৌধুরীর মাঝে। তিনি প্রার্থী হচ্ছেন কি-না তা স্পষ্ট হচ্ছেনা। রহস্যের জটও খুলছেনা। বরং হঠাৎ লন্ডন যাওয়ায় রহস্য বরং আরো বেড়েছে। অথচ কয়েকমাস ধরে মাঠে ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগের সম্ভাব্য প্রার্থীরা।
ইতিমধ্যে আওয়ামীলীগের সম্ভাব্য প্রার্থীদের ব্যানার, পোস্টার, বিলবোর্ডে ছেয়ে গেছে নগর। নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরে ব্যাপক তোড়জোড়। ইতিমধ্যে দলীয় মনোনয়ন ফরম বিক্রির তারিখও ঘোষণা করা হয়েছে। এই ঘোষণার পর আরো নড়েচড়ে বসেছেন মনোনয়ন প্রত্যাশীরা।
কিন্তু কোনো তোড়জোড় নেই বিএনপিতে। কেউ প্রার্থিতাও ঘোষণা করছেন না। কিংবা নির্বাচন করবেন কিনা সেটিও বলছেন না। এ যাত্রায়ও বরাবরের মতোই কৌশলী আরিফুল হক চৌধুরী।
গত শনিবার সিলেট সিটি করপোরেশনে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করলেন বাস টার্মিনাল নিয়ে। এই সভায় ঘুরেফিরে আসে তার প্রার্থিতার বিষয়টি। কিন্তু কিছুই বলেননি আরিফ। সময়ের অপেক্ষায় থাকতে বললেন তিনি। নির্বাচন নিয়ে আরিফের মতো তার দল বিএনপিতেও রহস্যময় নিরবতা। এই অবস্থায় নগরজুড়ে আলোচনা কেবল আরিফকে নিয়ে। অনেকে বলছেন, এই মুহূর্তে আরিফের জনপ্রিয়তার ধারকাছেও কেউ নেই। দলের সিদ্ধান্ত মেনে তিনি নির্বাচন না করলে সেটা হবে ‘আত্মঘাতী’।
এমন আলোচনার মাঝে রহস্য আরো ঘনিভূত করলেন আরিফ। হঠাৎ পাড়ি জমালেন লন্ডনে। লন্ডন সফর নিয়েও চলছে কানাঘুষা। মেয়র নির্বাচনের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে আরিফ লন্ডন গেছেন বলে জানিয়েছে দলীয় সূত্র। লন্ডনে অবস্থানরত দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে তিনি বৈঠক করবেন। তারেক রহমানকে বাস্তবতা বুঝানোর চেষ্টা করবেন। গত ১০ বছরে তার উন্নয়নের ফিরিস্তি তুলে ধরে দলের সিদ্ধান্ত নিজের পক্ষে আনার চেষ্টা করবেন।
তবে সিদ্ধান্ত ইতিবাচক আসবে বলে মনে করেনা দলের বিশ^স্ত সূত্র। এই সরকারের অধীনে বিএনপি নির্বাচনে যাবে না-এ কথায় দল অনঢ়। সিটি নির্বাচনে অংশ নেয়ার অর্থ এই নির্বাচন কমিশনকে স্বীকৃতি দেয়া। তাই লন্ডন থেকে সুখবর না আসার কথাই উচ্চারিত হচ্ছে বেশী।
এ অবস্থায় বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য আরিফুল হক চৌধুরী সিটি নির্বাচনে প্রার্থী হবেন কি না, তা নিয়ে চলছে নানা জল্পনা তবে মেয়র আরিফুল হকের ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র জানায়, বিএনপির চলমান আন্দোলনে সক্রিয় থাকলেও নিজের মতো করে নির্বাচনের প্রস্তুতিও নিচ্ছেন আরিফ। শেষ সময়ে তিনি অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা নেবেন।
ওই সূত্র বলছে, ২০১৩ ও ২০১৮ সালে কামরানকে হারিয়েই মেয়র নির্বাচিত হন আরিফুল। ২০২০ সালে কামরানের মৃত্যুর কারণে এবার সিলেটে আওয়ামী লীগের শক্তিশালী কোনো প্রার্থী নেই। ফলে ‘সুষ্ঠু নির্বাচন’ হলে আরিফুলের জয় অনেকটাই সহজ হবে। বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতাদের এটি বুঝিয়ে শেষ মুহূর্তে তিনি নির্বাচনে রাজি করাতে পারেন অথবা শীর্ষ নেতাদের সম্মতি নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থীও হতে পারেন। এখন দেখার পালা রাজনীতির মাঠে সুচতুর আরিফ শেষ পর্যন্ত কি চমক উপহার দেন।
শেয়ার করুন