সম্প্রতি গরুর মাংসের দাম বেঁধে দিয়েছে ডেইরি ফার্ম এসোসিয়েশন ও মাংস ব্যবসায়ী সমিতি। এক মাসের জন্য প্রতি কেজি গরুর মাংসের মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৬৫০ টাকা। কিন্তু রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বাজারে একেক বাজারে গরুর মাংসের দাম একেক রকম। এমনকি এক বাজারের ৩ দোকানে গরুর মাংসের দাম দেখা গেছে তিন রকম।শুক্রবার রাজধানীর মোহাম্মদপুরের বিভিন্ন বাজার ঘুরে গরুর মাংসের এমন এলোমেলো দাম দেখা যায়। এছাড়াও দাম নিয়ে ব্যবসায়ীদের অযৌক্তিক যুক্তির মুখে বিভ্রান্ত হয়েছেন ক্রেতারাও। এদিন সকালে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের হাজী জয়নাল আবেদিন বাজারে দেখা যায়, গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭০০ টাকা কেজি দরে। বাজারে গরুর মাংসের দোকান তিনটি, প্রতিটি দোকানেই একই দাম।
৬৫০ টাকা মূল্য নির্ধারণ করার পরেও বাড়তি দাম কেন? বিক্রেতাদের এমন প্রশ্ন করা হলেও উত্তর মেলেনি।গরুর মাংসের বাড়তি দাম দেখে বিরক্তি প্রকাশ করে সালাউদ্দিন আহমেদ নামে একজন ক্রেতা বলেন, ৬৫০ টাকা তো দাম ঠিক করেই দেওয়া আছে। তারপরও আবার অতিরিক্ত দাম নিচ্ছে। মাংসই নিবো না।ঢাকা উদ্যানে বাড়তি দাম হলেও বিভ্রান্তিকর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে নবোদয় হাউজিং বাজারে। মোহাম্মদপুরের এ বাজারে একেক দোকানে একেক দামে বিক্রি হচ্ছে গরুর মাংস।বাজারের মামা-ভাগনে মিট শপে গিয়ে দেখা যায়, প্রতি কেজি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৫০ টাকা কেজি দরে।বাড়তি দামের কারণ জানতে চাইলে একজন বিক্রেতা বলেন, মাংস নেন, রান্না করেন, তারপর বুঝবেন।
পাশের আরেক দোকানে গরুর মাংসের দাম জানতে চাইলে বিক্রেতা দাম হাঁকেন ৭০০ টাকা। সেখান থেকে কিছুটা পশ্চিমে এগোতেই দাম নেমে আসে ৬৫০ টাকায়।পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে একজন মাংস ব্যবসায়ী বলেন, সাড়ে ছয়শো টাকায় যে মাংস দেখতেছেন, ওগুলা পাম্পিং করা মাংস। পাম্পিং বলতে বোঝানো হয়েছে, গরু জবাই করার পর গরুর আর্টারি বা ধমণী দিয়ে পানি প্রবেশ করানো। এতে মাংসের ওজন বেড়ে যায়। প্রতি কেজি মাংসে প্রায় ১১৫ গ্রাম পানি থাকে।একই বাজারে তিন রকম দাম দেখে বিভ্রান্ত হচ্ছেন ক্রেতারা। আশিকুর রহমান নামে একজন ক্রেতা বলেন, মাংস কিনতে এসে তো কনফিউজড হয়ে গেলাম। কোনটা ভালো, কোনটা খারাপ বোঝার উপায় নাই। দাম তিন দোকানে তিন রকম। এমন হওয়ার তো কথা না।
এদিকে গরুর মাংসের দাম ৬৫০ টাকা নির্ধারণের পরেও বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে, এ বিষয়ে জানতে চাইলে মাংস ব্যবসায়ী সমিতির মহাসচিব রবিউল আলম বলেন, গরুর মাংসের দাম তো ৬০০ টাকার কম হওয়ার কথা। এটাকে ৬৫০ টাকা নির্ধারণ করা হলো কেন? যারা এটা নির্ধারণ করেছে এই পরিস্থিতির জন্য তারা দায়ী।বাংলাদেশ ডেইরি ফার্ম এসোসিয়েশনের সভাপতি ইমরান হোসেনের কাছে একই বিষয়ে জানতে চাইলে এই এগ্রো ব্যবসায়ী বলেন, এটা হওয়ার কথা না। গত কুরবানি ঈদের পর প্রচুর গরু আমদানি হয়েছে। আমরা ৬৫০ টাকা দাম নির্ধারণ করেছি এক মাসের জন্য। এক মাস পর দাম আরও কমবে। বাড়ার কোনো সুযোগ নেই। কিছু অসাধু ব্যবসায়ী অতি মুনাফার লোভে এই কাজগুলো করছে।
বিষয়টি তিনি ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরকে অবগত করবেন বলে জানান।