ব্রাজিলের বিপক্ষে প্রথম আন্তর্জাতিক ম্যাচ, শুরু থেকে উজ্জীবিত ফুটবলও খেলল গিনি। তবে প্রথমার্ধে ক্ষণিকের ছন্দপতনে গোল হজম করল দুইটি। এরপর তারা ঘুরেও দাঁড়াল, কিন্তু রেকর্ড পাঁচবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের বিপক্ষে শেষ পর্যন্ত বড় ব্যবধানেই হারল আফ্রিকার দলটি। কাতার বিশ্বকাপে পথ হারানো সেলেসাওরা ফিরল জয়ের পথে।
বার্সেলোনার আরসিডিই স্টেডিয়ামে শনিবার (১৭ জুন) প্রীতি ম্যাচে ৪-১ গোলে জিতেছে ব্রাজিল। জোয়েলিনতন, রদ্রিগো, এদের মিলিতাও ও ভিনিসিউস জুনিয়র একটি করে গোল করেন। টানা দুই হারের পর জয় পেল ব্রাজিল। ক্রোয়েশিয়ার কাছে টাইব্রেকারে হেরে কাতার বিশ্বকাপ স্বপ্ন গুঁড়িয়ে যাওয়ার পর গত মার্চে মরক্কোর বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচে ২-১ গোলে হেরেছিল তারা। বর্ণবাদ বিরোধী অভিযানে ভিনিসিউসের সমর্থনে এই ম্যাচগুলো খেলছে ব্রাজিল। আগামী মঙ্গলবার সেনেগালের মুখোমুখি হবে তারা।
শুরু থেকে ব্রাজিলের চোখে চোখ রেখে খেলতে থাকে গিনি। রিশার্লিসন, ভিনিসিউস জুনিয়রদের রীতিমতো বেশ কিছুটা সময় বোতলবন্দী করে রাখে দলটির ডিফেন্ডাররা। তাতে জোয়েলিতনের গোলের আগ পর্যন্ত বলার মতো কোনো সুযোগই তৈরি করতে পারেনি তারা! সপ্তম মিনিটে ভিনিসিউসের থ্রু বল ধরে পাকেতার শট ফেরান গোলরক্ষক। তিন মিনিট পর রদ্রিগোর শট এক ডিফেন্ডারের পায়ে লেগে বাইরের জাল কাঁপায়। ওই কর্নার থেকেও কিছু করতে পারেনি ব্রাজিল। এরপর হঠাৎ করেই খেই হারায় গিনি। তিন মিনিটের মধ্যে হজম করে বসে দুই দল।
২৭তম মিনিটে সতীর্থের ফ্রি কিক কাসেমিরোর বাহুতে লেগে ছুটছিল জালের দিকে। গোলরক্ষক ঝাঁপিয়ে পড়ে ফেরালেও পুরোপুরি বিপদমুক্ত করতে পারেননি। সামনে থাকা জোয়েলিনতন নিখুঁত ফিরতি শটে লক্ষ্যভেদ করেন। রেফারি ভিএআরে কাসেমিরোর সম্ভাব্য হ্যান্ডবল চেক করলেও টিকে যায় গোল। এরপর রক্ষণের ভুলে বল পেয়ে বাঁ দিক দিয়ে বক্সে ঢুকে দুরূহ কোণ থেকে জাল খুঁজে নেন রদ্রিগো। একটু পর বাঁকানো শটে চেষ্টা করেছিলেন ভিনিসিউস জুনিয়র, কিন্তু বল দূরের পোস্টের বেশ খানিকটা বাইরে দিয়ে বেরিয়ে যায়।
পাল্টা জবাব দিতে গিনি দেরি করেনি খুব একটা। ৩৬তম মিনিটে ঘুরে দাঁড়ানোর উপলক্ষ পেয়ে যায় তারা। বাইলাইনের একটু উপর থেকে ইসিয়াগার কাট ব্যাকে মার্কিনিয়োস ও এইরতনের মাঝে থাকা ফরোয়ার্ড গিরাসি অনেকটা লাফিয়ে হেডে লক্ষ্যভেদ করেন। কালো জার্সি তুলে রেখে দ্বিতীয়ার্ধে চেনা হলুদ জার্সিতে শুরু করে ব্রাজিল। ব্যবধান বাড়ানো গোলের দেখা তারা পেয়ে যায় ৪৭তম মিনিটেই। পাকেতার ফ্রি কিকে হেডে লক্ষ্যভেদ করেন মিলিতাও।
৫৮তম মিনিটে রিশার্লিসনের জোরাল শট কোনোমতে ফেরান গিনি গোলরক্ষক কোনে। ৭৬তম মিনিটে ‘ডাবল’ সেভ করেন এদেরসন। বক্সের বাইরে থেকে উড়ে আসা শট ফেরানোর পর ইসিয়াগার ফিরতি শট পা দিয়ে আটকান তিনি। একটু পর তালগোল পাকিয়ে গোলরক্ষককে একা পেয়েও সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি রিশার্লিসন, এমন সুযোগ হেলায় হারানোর হতাশা ফুটে ওঠে এই ফরোয়ার্ডের চোখে-মুখে।
৮৮তম মিনিটে স্পট কিক থেকে লক্ষ্যভেদ করে ব্রাজিলের জয় নিশ্চিত করে দেন ভিনিসিউস। বক্সে মালকম ফাউলের শিকার হলে পেনাল্টির বাঁশি বাজিয়েছিলেন রেফারি। বলের লাইনে ঝাঁপিয়ে পড়েও আটকাতে পারেননি গিনি গোলরক্ষক। বিশ্বকাপের ব্যর্থতার পর ব্রাজিলের দায়িত্ব ছাড়েন তিতে। অন্তর্বর্তীকালীন কোচ হিসেবে হাল ধরেন রামোন মেনেজেস। প্রথম জয় পেলেন তিনিও।
শেয়ার করুন