সিলেটের গোলাপগঞ্জের ফুলবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের সচিব ও হিসাব সহকারী কাম-কম্পিউটার অপারেটর এবং ঢাকাদক্ষিণ ইউপির সচিবকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের তদন্ত সাপেক্ষে সুষ্ঠ বিচার ও মিথ্যা মামলার হয়রানি থেকে অব্যাহতির দাবীতে বাংলাদেশ ইউনিয়ন পরিষদ সচিব সমিতি (বাপসা) সিলেট জেলা শাখার পক্ষ থেকে জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারক লিপি প্রদান করা হয়েছে।
সোমবার (২৪ জুলাই) দুপুরে সিলেটের জেলা প্রশাসক শেখ রাসেল হাসানের কাছে স্মারকলিপি প্রদান করেন বাপসা সিলেট জেলা শাখার নেতৃবৃন্দ।
স্মারকলিপিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, গত ১৬ জুলাই রোববার সকাল পৌণে ১১টায় ফুলবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের সচিব মো.নজরুল ইসলাম ও হিসাব সহকারী-কাম-কম্পিউটার অপারেটর মো.সাইফুর রহমান চৌধুরী অফিসে দায়িত্ব পালনরত অবস্থায় কিছমত মাইজভাগ গ্রামের জনৈক কামরুজ্জামান মাসুদ কর্তৃক শারিরিক ও মানসিক নির্যাতনের স্বীকার হন। ওইদিন কামরুজ্জামান মাসুদ সহকারী কাম-কম্পিউটার ডাপারেটরের রুমে ঢুকে একটি ট্রেড লাইসেন্স নেওয়ার কথা বলেন। দায়িত্বে থাকা সাইফুর রহমান পরিষদ নির্ধারিত ট্রেড লাইসেন্সের ফি’র কথা বললে কামরুজ্জামান কিসের ফি বলে উত্তেজিত হয়ে পড়েন। তখন ইউপি সচিব উচ্চ স্বরে কথাবার্তা শুনে অপারেটরের রুমে গিয়ে আস্তে কথা বলার অনুরোধ করেন। এতে কামরুজ্জামান আরও উত্তেজিত হয়ে সচিব ও অপারেটরকে নিজের দাপট দেখিয়ে বিভিন্ন অশ্লীল ও অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে এক পর্যায়ে শারিরীক ভাবে আঘাত করেন।
বিষয়টি চেয়ারম্যান আব্দুল হানিফ খানকে ফোনে তাৎক্ষনিক ভাবে অবগত করা হয়। কিছু সময় পর চেয়ারম্যান আফিসে আসেন।তখন চেয়ারম্যানকে বিষয়টি জানানোর জন্য সচিব ও দফাদার চেষ্টা করেন এসময় কামরুজ্জামান চেয়ারম্যানের সামনে সচিবকে শারিরিক ভাবে পুনরায় লাঞ্চিত করেন। চেয়ারম্যান কামরুজ্জামানকে থামানোর চেষ্টা করলেও তা না শুনে আরও উত্তেজিত হয়ে যান।
এ বিষয়টি সোমবার (১৭ জুলাই) ইউপি সচিব মো.নজরুল ইসলাম গোলাপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসাকে লিখিত ভাবে জানান। লিখিত অভিযোগের বিষয়টি কামরুজ্জামান জানতে পেরে ওইদিনের ঘটনাকে ধামাচাপা দেওয়ার উদ্যোশে পরদিন ১৮জুলাই মিথ্যা এবং বানোয়াট বিবরণ দিয়ে সচিব ও হিসাব সহকারী-কাম-কম্পিউটার অপারেটরকে হয়রানির উদ্দেশ্যে তাদের বিরুদ্ধে মাননীয় সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট ২নং আমলি আদালত, গোলাপগঞ্জ সিআর মামলা নং- ২৭৩/২০২৩ইং মিথ্যা মামলা দায়ের করে। একই সাথে এ মামলায় ৩নং ফুলবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের সচিব ও হিসাব সহকারী কাম-কম্পিউটার অপারেটরকে মিথ্যা ঘটনা সাজিয়ে অভিযুক্ত করা হয়েছে।
নেতৃবৃন্দ স্মারক লিপিতে আরও বলেন, একইদিন সকাল সাড়ে ১১টায় ঢাকাদক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদের সচিব ইয়াহিয়া সিদ্দিক দায়িত্ব পালনরত অবস্থায় সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের ১নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য সেলিম আহমদ কর্তৃক শারিরিক ও মানসিক ভাবে নির্যাতনের স্বীকার হন। ওয়ার্ড সদস্য সেলিম আহমদ কর্তৃক ইতিপূর্বে কর্মরত বিভিন্ন সচিব নির্যাতনের স্বীকার হয়েছেন বলে উপজেলা প্রশাসন অবগত রয়েছেন। এ ঘটনায় ইউপি সচিব লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে।
লিখিত অভিযোগের কার্যকর পদক্ষেপ না নেওয়ায় বাপসা গোলাপগঞ্জ উপজেলা শাখার পক্ষ থেকে গত ১৮জুলাই উপজেলা নির্বাহী বরাবরে একটি স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। উভয় ঘটনাই সরকারি দায়িত্ব শাস্তির পালনরত অবস্থায় ঘটেছে। তাই ঘটনার সাথে জড়িতদের অবিলম্বে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্ত মূলক জোর দাবী জানান। উভয় ঘটনায় জড়িতদের অবিলম্বে আইনের আওতায় এনে সুষ্টু বিচার করা না হলে বাংলাদেশ ইউনিয়ন পরিষদ সচিব সমিতি (বাপসা) সিলেট জেলার শাখার ২২ জুলাই সাধারণ সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পরবর্তীতে কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সাথে পরামর্শ করে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
দুইটির তদন্ত সাপেক্ষে সুষ্ট বিচার এবং ৩নং ফুলবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদ সচিব ও হিসাব সহকারী কাম-কম্পিউটার অপাটেরের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মিথ্যা মামলা হতে অব্যহতি প্রদানসহ উভয় ঘটনার সাথে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান নেতৃবৃন্দ।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ ইউনিয়ন পরিষদ সচিব সমিতি (বাপসা) কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মো. আফতাব উদ্দিন, কেন্দ্রীয় সদস্য মো. মোস্তাফিজুর রব, সিলেট জেলা শাখার আহবায়ক মো.হাবিবুর রহমান, সদস্য সচিব মো.নজমুল ইসলাম চৌধুরী, সিলেট জেলার সাবেক সাধারণ সম্পাদক ফয়জুল ইসলাম,মকবুল হোসেন, মোহাম্মদ ইয়াহিয়া সিদ্দিকী,মো. নজরুল ইসলাম,মো.আবুল কাহার,সমীরণ চন্দ্র,বিজিত রঞ্জন সরকার, কৈালন্দ্র কুমার দাস, অশোক তক্ন বৈদ্য,হাবিবুর রহমান, নকিব উল্লাহ শিবলু প্রমুখ।
শেয়ার করুন