পৃথিবীতে চলমান অনৈসলামিক মতবাদ, মতাদর্শ ও রাষ্ট্রীয় কাঠামোকে ভেঙে চুরমার করে তদস্থলে ইসলামী হুকুমাত কায়েম করার কাজ করছে জামায়াতে ইসলামী। এটা নিছক কোনো বক্তব্য বা চমক লাগানো কথা নয়। এজন্য জামায়াতে ইসলামী মেধা-যোগ্যতা, শ্রম, ত্যাগ-কুরবানী, ঘাম-রক্ত এমনকি শাহাদাতের নজরানাও পেশ করেছে। যা ছিল নবীদের সুন্নাহ।
দ্বীন প্রতিষ্ঠার একাজ ঐতিহাসিকভাবে নবী-রাসূলগণ করেছেন। কালের আবর্তে ও সুন্নাতে নববীর দাবী হিসেবে সকল মুসলমানদেরকে দ্বীন প্রতিষ্ঠার কাজে একত্রিত করছে জামায়াতে ইসলামী। বিভিন্ন বিজ্ঞান ভিত্তিক কর্মসূচি, সময়ের প্রয়োজনে বিভিন্ন কর্মসূচি, দাওয়াতি উপকরণ ও বিভিন্ন প্লাটফর্মে দ্বীনের মহান দায়িত্ব আঞ্জাম দিয়ে যাচ্ছে জামায়াতে ইসলামী।
তাওহীদের মূলমন্ত্র প্রচার ও বাস্তবায়নে প্রশিক্ষণ প্রদানকে অন্যতম হাতিয়ার হিসেবে গ্রহণ করেছে জামায়াতে ইসলামী। সকল মানুষের কাছে দ্বীনের আহবান যেন সহজেই বোধগম্য হয় এজন্য যোগ্য নেতৃত্ব ও কর্মী বাহিনী গড়ে তুলতে নিয়মিত প্রশিক্ষণের মাধ্যমে ক্যাডারভিত্তিক জনশক্তি তৈরি করছে জামায়াতে ইসলামী। নবী-রাসূলদের নবুওত ও রিসালতের অন্যতম শর্ত ছিল আসমানী প্রশিক্ষণ। প্রশিক্ষণের একাজ বাস্তবায়নে কুরআন ও হাদীসের মর্মবাণীকে পুঁজি করে চলছে জামায়াতের কাজ।
উলুহিয়া ও রুবুবিয়ার দাবি হলো, প্রতিষ্ঠিত খোদাদ্রোহী ব্যাবস্থার বিপরীতে আল্লাহর আইন প্রতিষ্ঠা। জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত, ঘর থেকে সংসদ পর্যন্ত, আসমান থেকে যমিন পর্যন্ত, ভূত থেকে ভবিষ্যৎ পর্যন্ত সর্বত্র বিরাজমান থাকবে ❝আল্লাহর আইন❞। অন্য কোনো হুকুমাত, মতাদর্শ, মতবাদ এখানে অচল ও অপ্রয়োজনীয় বিষয় হিসেবে থাকবে। এককথায়, ❛আল্লাহর আইন ছাড়া বাকি সবই হারাম হিসেবে গণ্য হবে❜। জামায়াতে ইসলামী সেসমাজ ব্যাবস্থা বাস্তবায়নে আপোষহীন এগিয়ে চলা এক কাফেলার নাম।
সমাজ সংস্কারে জামায়াতে ইসলামী এক বৈপ্লবিক পরিবর্তন সৃষ্টি করেছে। ইসলামী বিপ্লবের যোগ্য লোক তৈরি করা ছাড়াও এসমাজের ইসলামী চিন্তাধারা, শিক্ষা, নির্মাণ, শিল্প, প্রতিষ্ঠান, সরকার, প্রসাশন, আমলা ইত্যাদিতে অনন্য নজির স্থাপন করেছে। যা উপমহাদেশের এযাবত রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। ইসলামের নানাবিধ প্রায়োগিক দিক গুলোও যে দুনিয়ায় কল্যাণ বয়ে আনতে পারে চোখের সামনে জামায়াতে ইসলামী তা প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছে।
যেসব দেশে বা অঞ্চলে জামায়াতে ইসলামী নির্বাচিত প্রতিনিধি পেয়েছে সেখানকার রাজনৈতিক চিন্তাধারা, আমানতের অনন্য দৃষ্টান্ত ও সত্যনিষ্ট অবস্থান উপস্থাপন করে জনমনে নন্দিত হয়েছে। অল্পে তুষ্টি, দূরদর্শী চিন্তা-গবেষণা আর টেকসই কার্যক্রমে অতীতের সকল রেকর্ড ভঙ্গ করে নতুন গতিধারা সৃষ্টিতে ভূমিকা পালন করেছে। অন্যায়, দূর্নীতি, অনিয়ম ও অনৈতিকতার বিষবাষ্প নিঃশেষ করে তদস্থলে ইসলামী আদর্শের ভাবধারা প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছে।
বর্তমান সময়ে জামায়াতে ইসলামীর সামাজিক কার্যক্রম বেশ জনপ্রিয় ও প্রশংসিত হচ্ছে। পুরো উপমহাদেশে জনসাধারণের কাছে ও বিভিন্ন মহলে এর প্রভাব বিদ্যমান। জামায়াতে ইসলামী এক নতুন স্রোতধারা সৃষ্টি করেছে বলে বিভিন্নভাবে আলোচিত হচ্ছে। যা জামায়াতে ইসলামীকে এক অন্যরকম যায়গায় নিয়ে গেছে। বর্তমান সময়ে জামায়াতে ইসলামী রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড থেকে আপাতদৃষ্টিতে দূরে মনে হলেও প্রকৃতপক্ষে মানুষের কাছে চলে গেছে জামায়াতে ইসলামী। শহরে-নগরে, গ্রামে-গঞ্জে সর্বত্র এখন জামায়াতে ইসলামী বিরাজমান।
সুবিশাল আসমান ও জমিনের বিশালতা যেমন সত্য। অচিরেই আল্লাহর জমিনে আল্লাহর বিধান বাস্তবায়ন হবে এটাও সত্য। সর্বক্ষেত্রে মানবরচিত মতবাদের কবর রচনা করে ❝আল্লাহর আইন❞ প্রতিষ্ঠা হোক। জামায়াতে ইসলামী সেখানে অগ্রসেনানীর ভূমিকা পালন করবে। ইনশাআল্লাহ
প্রতিটি মুসলমানের কন্ঠে তাকবীর ধ্বনিতে রব উঠুক-
❝আল্লাহর আইন চাই,
সৎ লোকের শাসন চাই❞
বাংলাদেশ জিন্দাবাদ,
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী জিন্দাবাদ।