শেরপুরে নিখোঁজের সাত দিন পর সুমন মিয়া (১৭) নামে এক কলেজছাত্রের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। সোমবার (১১ নভেম্বর) রাতে শহরের সজবরখিলা এলাকার একটি বাড়ির উঠানে মাটিচাপা অবস্থায় লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় তরুণী (১৯) ও তার আরেক প্রেমিক রবিনসহ (১৯) তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
শেরপুরের পুলিশ সুপার মো. আমিনুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। নিহত সুমন শেরপুরের কসবা বারাকপাড়া নিমতলার মো. নজরুল ইসলামের ছেলে। তিনি শেরপুর সরকারি কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্র ছিলেন। গ্রেপ্তার তরুণীর সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক ছিল বলে জানা গেছে। রবিন শহরের সজবরখিলা এলাকার বাসিন্দা। এ ঘটনায় তরুণীর বাবাকেও গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নিহত সুমন ও তরুণী শেরপুর সরকারি কলেজের একাদশ শ্রেণিতে একসঙ্গে পড়াশোনা করতেন। সে সুবাদে তাদের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। তবে তরুণী পরে রবিনের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়ান। গত ৪ নভেম্বর বিয়ের কথা বলে সুমনকে ডেকে আনেন তরুণী। এরপর থেকে তার খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না।
সুমনের নিখোঁজের ঘটনায় প্রথমে সাধারণ ডায়েরি এবং পরে তরুণী ও তার বাবাসহ কয়েকজনকে আসামি করে অপহরণ মামলা দায়ের করেন তার বাবা নজরুল ইসলাম। পুলিশ জানিয়েছে, প্রথমে তরুণী ও তার বাবাকে গ্রেপ্তার করলেও সুমনকে পাওয়া যাচ্ছিল না। পরে সোমবার রাতে ময়মনসিংহ থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে সুমনকে মেরে শহরের সজবরখিলায় তার বাড়ির উঠানে লাশ মাটিচাপা দেওয়ার কথা স্বীকার করে রবিন। পরে পুলিশ তাকে নিয়ে অভিযান চালিয়ে মাটি খুঁড়ে লাশ উদ্ধার করে। ত্রিভূজ প্রেমের দ্বন্দ্বে এ হত্যকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গেছে।
যদিও গ্রেপ্তারের আগে কলেজছাত্রীর বাবা দাবি করেছিলেন, এ ঘটনায় তার মেয়ের সংশ্লিষ্টতা নেই। তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ এনে হয়রানি করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে শেরপুরের পুলিশ সুপার মো. আমিনুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, পুরো ঘটনাটি গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করেছে পুলিশ। মোবাইল ফোন ট্র্যাকিং করে সুমনের সর্বশেষ অবস্থান ময়মনসিংহে পাওয়া যায়। প্রেমঘটিত বিষয় নিয়ে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে।
তিনি বলেন, এ ঘটনায় মূল তিন আসামি গ্রেপ্তার হয়েছেন। আরও কেউ জড়িত থাকলে তাদেরও দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। প্রেমঘটিত বিষয়ে এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে জানান তিনি।
শেয়ার করুন