পূর্ব বিরোধের জের ধরে বিশ্বনাথে মুখোমুখি দুই প্রবাসী ভাই, প্রবাসী-নারীসহ আটক ২৮

সিলেট

ফারুক আহমদ
স্টাফ রিপোর্টার

জায়গা-জমি নিয়ে থাকা পূর্ব বিরোধের জের ধরে সিলেটের বিশ্বনাথে মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছেন প্রবাসী দুই ভাই। দুই ভাইয়ের দ্বন্দের কারণে বেশ কিছু দিন ধরে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে উপজেলার বিশ্বনাথ ইউনিয়নের পশ্চিম শ্বাসরাম গ্রামে।

শনিবার (৭ জানুয়ারী) সকালে জায়গা-জমি দখল ও পাল্টা দখল নিয়ে দু’পক্ষ দেশীয় অস্ত্র-সস্ত্রে সজ্জিত হয়ে মুখোমুখি অবস্থান নেন। এসংবাদ শুনে বিশ্বনাথ থানার একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে অনাকাঙ্খিত ঘটনা এড়াতে যুক্তরাজ্য প্রবাসী ও নারীসহ উভয় পক্ষের ২৮ জনকে আটক করে। এরপর আটককৃতদের মধ্যে ২১ জন ১৫১ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে প্রেরণ করে পুলিশ এবং শিশু-নারীসহ অপর ৭ জন তাদের আত্নীয়-স্বজনদের জিম্মায় ছেড়ে দেওয়া হয়।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে পশ্চিম শ্বাসরাম গ্রামের যুক্তরাজ্য প্রবাসী আব্দুল মন্নান উরফে মসকুদ আলী ও তার ভাই আব্দুল কদ্দুছ উরফে চিকন আলীর মধ্যে বিরোধকে কেন্দ্র করে উভয় পক্ষে আদালতে মামলা মোকদ্দমা রয়েছে। বিষয়টি নিস্পত্তি করতে স্থানীয় পঞ্চায়েতসহ এলাকারগণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ব্যর্থ হন। একপর্যায়ে বিষয়টি নিস্পত্তির উদ্যোগ নেন পৌরসভার মেয়র মুহিবুর রহমান। এরিই মধ্যে শনিবার (৭ জানুয়ারি) সকালে উভয় পক্ষের লোকজনদের মধ্যে উত্তজনা বিরাজ করলে অনাকাঙ্খিত ঘটনা এড়াতে বাড়িতে অভিযান চালিয়ে পুলিশ উভয় পক্ষের প্রবাসীসহ ২৮ জন নারী-পুরুষকে আটক করে থানায় নিয়ে নিয়ে যায়। এরপর তাদের মধ্যে ২১ জনকে শনিবার বিকেলে ১৫১ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে প্রেরণ করে পুলিশ এবং মানবিকদিক বিবেচনায় শিশুসহ ৭ নারীকে তাদের পরিবারের জিম্মায় ছেড়ে দেওয়া হয়।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- পশ্চিম শ্বাসরাম গ্রামের মৃত মরম আলীর পুত্র যুক্তরাজ্য প্রবাসী আব্দুল কদ্দুছ উরফে চিকন আলী (৬০), একই গ্রামের মৃত কটু মিয়ার পুত্র টুনু মিয়া (৩২), সাজু মিয়া (৩০), মৃত হাফিজ আলীর পুত্র আবুল মিয়া (৪৫), নানু মিয়ার পুত্র শরীফ আহমদ (১৯), আলকাছ আলীর পুত্র জয়নাল মিয়া (৩২), মৃত খুর্শেদ আলীর পুত্র সেবুল আহমদ (৪৮), আর্শ্বব আলীর পুত্র রোহান উদ্দিন জাফর (১৯), মৃত ছিদ্দিক আলীর স্ত্রী জাহানারা বেগম (৫০), নানু মিয়ার স্ত্রী নাছিমা বেগম (৩০), জুনু মিয়ার স্ত্রী মোর্শেদা বেগম (৩৫), চান্দশীরকাপন গ্রামের মৃত আমজদ আলীর পুত্র ছালেক মিয়া (২৫), ধীতপুর গ্রামের মৃত তৈয়ব আলীর কন্যা রিয়া বেগম রুবি (৩০), দক্ষিণ সুরমা উপজেলার জালালপুর পূবভাগ গ্রামের ফজলু মিয়ার পুত্র ফয়ছল আহমদ (২৬), ওসমানীনগর উপজেলার রাঘবপুর গ্রামের আইন উল্লাহর পুত্র রাসেল উল্লাহ (২৪), খাপনখালপাড় গ্রামের মৃত ইসমাইল আলীর পুত্র লাল মিয়া (২৪), মৃত আমজদ খানের পুত্র কামরুল খান (২৪), মোল্লারগাঁও গ্রামের আব্দুল মালিকের পুত্র আব্দুল মতিন (৪৩), সুনামগঞ্জ জেলার জগন্নাথপুর উপজেলার চিলাউড়া গ্রামের মৃত আফিজ আলীর পুত্র কফিল আহমদ (২৩) ও কুবাজপুর গ্রামের মৃত জালাল উদ্দিনের পুত্র রাসেল মিয়া (২৪)।

আটকের সত্যতা স্বীকার করে বিশ্বনাথ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) গাজী আতাউর রহমান বলেন, ‘উভয়পক্ষের লোকজন রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলো। খবর পেয়েই আমরা অনাকাঙ্খিত ঘটনা এড়াতে উভয় পক্ষের ২৮ জনকে আটক করা হয়। এরপর আটককৃতদের মধ্যে ২১ জনকে আদালতে প্রেরণ করা হয় এবং ৭ জন মহিলাকে পরিবারের জিম্মায় ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *