প্রধানমন্ত্রীর ভুয়া সফর সফরসঙ্গী!

মুক্তমত

মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ভুয়া সফরসঙ্গীদের প্রচারনায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম সয়লাব। নিজে অথবা কর্মি সমর্থকদের দিয়ে ভ্রান্ত এ কাজটি করাচ্ছেন নিজের পয়সায় বিদেশে যাওয়া কিছু কথিত নেতা। দেখা গেছে, প্রধানমন্ত্রীর বিদেশ সফরের খবর শুনলেই এক শ্রেণির নেতাকর্মি বিভিন্ন মন্ত্রনালয় বা দফতরে তদবির শুরু করেন। বিশেষ করে যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রে রাষ্ট্রীয় সফরে গেলে এমন ঘটনা ঘটে।

দেখা যায় প্রধানমন্ত্রী যতদিন সফর করেন ততদিন অথবা সেই দেশ থেকে আশার দিন পর্যন্ত, যে কেউ বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রে ভিজিট ভিসায় গিয়ে নিজে নিজে ও কর্মিদের দিয়ে ফেইসবুক প্রচার করে থাকেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী হয়ে যাচ্ছি।

এবার আসি মূল কথায়, আজ আমার এক ফেইসবুক বন্ধু আমাকে মেসেঞ্জারে ফোন দিয়ে বললেন, আমি জাতিসংঘের প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী হয়ে আমেরিকা আসতেছি, আমাকে একটা হোটেল বা থাকার যায়গা করে দিতে পারবেন।

আমি শুনে অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলাম, আজ আপনে আসতেছেন বুজলাম না। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী গতকাল জাতিসংঘের ভাষন দিয়ে অলরেডি ওয়াশিংটন চলে গেছেন আজ। আর প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী হলে আপনার সবকিছু হোটেল থেকে শুরু করে এ টু জেড যাবতীয় রেডি থাকার কথা। সব কিছু সরকারি ভাবে হয়। তিনি উত্তরে বললেন, না ভাই এসব কে করবে, সব কিছু নিজে নিজে করছি। তার পর যা বুজার বুজে গেলাম…. (সরি, বন্ধু আপনার হুবুহু কথা ফেসবুকে তুলে ধরলাম, মাইন্ড করবেনা)।

আসলে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যতবার যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র জাতিসংঘের অধিবেশনে যান ততবারই দেখা যায়, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সফরসঙ্গীর টিমের বাইরে আলাদা ভাবে আলাদা বিমানে নিজ খরছে গিয়ে সফরসঙ্গী বলে থাকেন। আবার কেউ কেউ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের ডিও নিয়ে ভিসা করাইয়ে বলে থাকেন সফরসঙ্গী। আর বিদেশে গিয়ে কেউ নিজের আত্মীয়ের বাসায় কেউ বা হোটেলে তাকেন। এটা কি ওরা বুঝে করে, না- না বুঝে করে থাকেন এসব ভুয়া সফরসঙ্গীরা।

ভুয়া সফরসঙ্গীদের উদ্দেশ্যে আমার কিছু কথা…।

(এক) মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সফরসঙ্গী যারা হয়ে থাকেন তারা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সাথে একই দিনে একই বিমানে সফরসঙ্গীরা যান। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গীদের বিমান থেকে নামার পর যে দেশে যাবেন সেই দেশে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত বা এ্যাম্বাসেডররা গাড়ি বহর নিয়ে প্রধানমন্ত্রীসহ সফরসঙ্গীদের হোটলে নিয়ে যাবেন, সবাইকে মোবাইল সিম দিবে, এছাড়াও অনেক কিছু সরকারি ভাবে দিয়ে থাকে ওরা।

(দুই) মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সফরকালীন ভিবিন্ন অনুষ্ঠানে যোগ দিবেন, এছাড়া রিয়েল সফরসঙ্গীদের
সাথে সারাক্ষণ এক সাথে থাকবেন ঘুরবেন। সব শেষে রাষ্ট্রীয় সফর শেষ হলে আবার একই বিমানে নিজ দেশে আসবেন।

(তিন) মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সফরসঙ্গী হলে আপনে রাষ্ট্রীয় চিঠি পাবেন, এছাড়া সফরসঙ্গীদের সবার নাম দিয়ে (সিমীত) নামে একটি বই বের হয়। সেই বইয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে সকল সফরসঙ্গীদের নাম, হোটেলের রোম নাম্বার, মোবাইল নাম্বারসহ সফরের সব তথ্য। এই বইয়ে যাদের সফরসঙ্গীর নাম নেই তারা সফরসঙ্গী না। এর বাহিরে যারা সফরসঙ্গী বলে এরা ভুয়া সফরসঙ্গী।
কিন্ত রাষ্ট্রীয় সফরে এতো সুযোগ সুবিধা থাকার পর আপনে কেনো আলাদা বিমানে যাবেন, নিজের খরছে থাকবেন।

আমার কথা হলো বতর্মান ডিজাল যুগে মানুষ বুঝে, কে সফরসঙ্গী আর কে নিজে খরছে গিয়ে ভুয়া সফরসঙ্গী হচ্ছেন। তাহলে কেনো আপনারা সাধারণ মানুষকে বোকা বানিয়ে মিথ্যা দাপ্পা… দিচ্ছেন।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে আবেদন, যারা রাষ্ট্রীয় সফরসঙ্গী দলের না হয়েও সফরসঙ্গী বলে তাদের আইনের আওতায় আনা হোক।

সিনিয়র সাংবাদিক ফয়সল আহমদ মুন্নার ফেইসবুক থেকে নেওয়া।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *