বিশ্বনাথে শ্রীশ্রী ঠাকুর বৈষ্ণব রায়ের অন্তর্ধান মহোৎসবে মানুষের ঢল

সিলেট

ফারুক আহমদ
স্টাফ রিপোর্টার

সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার দশঘর ইউনিয়নের মিয়ারবাজারের নিকটস্থ বিষ্ণুপুর ধামের সিদ্ধ বকুলতলায় শ্রীশ্রী ঠাকুর বৈষ্ণব রায়ের অন্তর্ধান মহোৎসবের দ্বিতীয় দিন রোববার (৫ ফেব্রুয়ারী) মানুষের ঢল নেমেছিল। শত শত বছর পূর্ব থেকে প্রতি বছরের মাঘী পূর্ণিমা তিথিতে ওই মহোৎসব পালন করে আসছেন সনাতন ধর্মালম্বীরা। সনাতন ধর্মালম্বীদের পাশাপাশি অন্যান্য ধর্মালম্বী লোকজনের উপস্থিতিও মহোৎসব এক মিলনমেলায় পরিণত হয়। দেশের প্রত্যান্ত অঞ্চলের গন্ডি পেরিয়ে প্রতি বছরের ন্যায় এবার বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে সনাতন ধর্মালম্বীরা এসে ওই মহোৎসবে যোগদান করেছেন। মনবাসনাপূরণের জন্য কেউ কেউ আদায় করেছে মানস, আবার অনেকেই আবার নতুন করে মানস করে গেছেন।
জানা গেছে, চৌষট্টি মোহান্তের অন্যতম শ্রীল নারায়ল বাচস্পতির পুত্র শ্রীশ্রী ঠাকুর বৈষ্ণব রায় প্রায় ৫শত বছর পূর্বে গৌরভ‚মি শ্রীহট্টে আসিয়া বিশ্বনাথ উপজেলার দশঘর ইউনিয়নের বিষ্ণুপুর গ্রামে শ্রীপাট স্থাপন করে শ্রীভ‚মির তাপিত মানুষকে শ্রীচৈতন্যের নাম ও প্রেমের পথে সঞ্জীবিত করিয়া মাঘী পূর্ণিমা তিথিতে সিদ্ধ বকুলবৃক্ষে লীন হন।

মহোৎসবস্থল পরিদর্শন করেছেন সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও স্থানীয় সাবেক সংসদ সদস্য আলহাজ্ব শফিকুর রহমান চৌধুরী, সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আবুল হোসেন লালন, সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান বিজন কুমার দেব, বিশ্বনাথ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গাজী আতাউর রহমান, সিলেট সিটি কর্পোরেশনের ২নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর বিক্রম কর সম্রাট, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সিনিয়র সহ সভাপতি পীযুষ কান্তি দেব প্রমুখসহ বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার ব্যক্তিবর্গ।

শ্রীশ্রী ঠাকুর বৈষ্ণব রায় ধাম সংরক্ষণ কমিটির সহ সভাপতি মানিক লাল দে’র সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক শংকর দাস শংকু’র পরিচালনায় পরিদর্শন শেষে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও স্থানীয় সাবেক সংসদ সদস্য আলহাজ্ব শফিকুর রহমান চৌধুরী।
বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বিশ্বনাথ উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক মকদ্দছ আলী, কার্যনির্বাহী সদস্য জয়ন্ত আচার্য্য, মানিক মিয়া, দশঘর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি তজম্মুল আলী, সিলেট সিটি কর্পোরেশনের ২নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর বিক্রম কর সম্রাট, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সিনিয়র সহ সভাপতি পীযুষ কান্তি দেব, উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক জয়ন্ত কুমার দাশ।

উল্লেখ্য, শনিবার (৪ ফেব্রুয়ারী) সকাল ৯টায় শ্রীশ্রী কালাচাঁদের অর্চ্চনার মাধ্যমে মহোৎসব শুরু হয়ে সোমবার (৬ ফেব্রুয়ারী) সকাল ৮টায় শ্রীশ্রী নাম ও লীলা সংকীর্ত্তন সমর্পন (পুর্ণা)’র মাধ্যমে শেষ হবে। রোববার (৫ ফেব্রুয়ারী) ব্রাক্ষমুহুর্ত থেকে শ্রীশ্রী নাম ও লীলা সংকীর্ত্তন পরিবেশন এবং দুপুর ১টায় মহাপ্রসাদ বিতরণ করা হয়। শ্রীশ্রী নাম ও লীলা সংকীর্ত্তন পরিবেশন করেন দক্ষিণ সুনামগঞ্জের পাগলা শ্রী কৃষ্ণ চৈতন্য সংঘের নিরঞ্জন দাস, সিলেটের দাড়িয়াপাড়ার নিশিকান্ত তালুকদার, মৌলভীবাজারের কুলাউড়া ব্রজবালক সম্প্রদায়ের বিদ্যুৎ দাস, সুনামগঞ্জের শাল্লার বেদান্ত সম্প্রদায়ের সমর চন্দ্র দাশ।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *