দেশে গত কিছুদিনে মানুষের মধ্যে সর্দি-কাশি, জ্বরের মত উপসর্গ বৃদ্ধি পাওয়ার পাশাপাশি করোনাভাইরাসে সংক্রমণের হারও বেড়েছে। খুব বড় কোনো সমস্যা না হলে এসব রোগের চিকিৎসার জন্য সাধারণত চিকিৎসকের কাছে যাওয়ার প্রয়োজন হয় না। কিন্তু এবার দেখা যাচ্ছে নানা নিয়মকানুন মেনে বা ওষুধ খেয়েও মিলছে না শান্তি।
এ বছরের জানুয়ারি মাসের শেষ থেকেই হালকা মাত্রার ঠান্ডা–কাশি থেকে শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা নিয়েও রোগীরা আসছেন। জ্বরের মাত্রা বেশির ভাগ ক্ষেত্রে কম হলেও কারও কারও ক্ষেত্রে অনেক বেশি মাত্রার জ্বর পাওয়া যাচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে রোগীদের ভালো হতে বিশেষ করে কাশির উপশম হতে কয়েক সপ্তাহ থেকে মাসও লেগে যাচ্ছে।
বুকের এক্স-রে পরীক্ষায় কারও কারও ফুসফুসে নিউমোনিয়ার লক্ষণ পাওয়া যাচ্ছে। অনেকের নিউমোনিয়ার তীব্রতা বেশি বলে হাসপাতালেও ভর্তি হতে হচ্ছে।
অক্সিজেনের মাত্রাও কিছু রোগীর কম পাওয়া যাচ্ছে। অনেকটা করোনাভাইরাসের মতো লক্ষণ বলে অনেক রোগীর পিসিআর করতে দেওয়া হয়। কিন্তু আরটিপিসিআর পরীক্ষায় অল্প কিছু রোগীর পজিটিভ ফলাফল এলেও অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তা নেগেটিভ।
বেশির ভাগ রোগীর কফের কালচার পরীক্ষা করেও কোনো বিশেষ জীবাণু নির্ণয় করা যাচ্ছে না। তাই নির্দিষ্ট ও কার্যকর অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারও অনেক ক্ষেত্রে সম্ভব হচ্ছে না। ফলে কয়েক ধরনের অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করতে হচ্ছে। আবার কখনো কখনো রোগী ভালো না হলে অ্যান্টিভাইরাল বা স্টেরয়েড ব্যবহারের কথাও ভাবতে হচ্ছে।
করোনাভাইরাসের নতুন কোনো সেরোটাইপ বা অন্য কোনো রেসপিরেটরি ভাইরাসের মাধ্যমে এই সংক্রমণ হতে পারে। তবে সেটা নির্দিষ্ট করে বলার জন্য যথাযথ গবেষণা দরকার। এ ধরনের রোগীদের নমুনা নিয়ে বিভিন্ন ল্যাবরেটরি পরীক্ষা–নিরীক্ষার পরেই জানা যাবে এই হঠাৎ বেড়ে যাওয়া সংক্রমণের কারণ। পৃথিবীর জলবায়ু উত্তপ্ত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে নতুন অনেক ভাইরাসসহ অনেক জীবাণুর সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কাও বাড়ছে। তবে যেকোনো রোগের প্রাথমিক প্রাদুর্ভাব মোকাবিলা করতে প্রাথমিক স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার বিকল্প নেই।
এ সময় বিশেষ এই ধরনের ঠান্ডা–সর্দি–কাশি হলে কী করবেন—
১. বিশ্রাম নিন। প্রচুর তরল পান করুন। পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করুন।
২. ইমিউনিটি বা রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে ভিটামিন ‘সি’যুক্ত তাজা ফলমূল খান।
৩. গরম আদা চা, মসলাযুক্ত চা, গরম স্যুপ ইত্যাদি আরাম দেবে।
৪. ঝুকিঁপূর্ণ রোগী, যেমন অন্তঃসত্ত্বা নারী, ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগী, কিডনি রোগী, হৃদ্রোগী, স্টেরয়েড বা কেমোথেরাপি বা ইমিউনোথেরাপি গ্রহণকারী ব্যক্তি—তাঁরা জনবহুল এলাকা, ভিড় এড়িয়ে চলবেন। স্বাস্থ্যের প্রতি আলাদা যত্ন রাখবেন।
শেয়ার করুন